তামিম-মোস্তাফিজের ‘ফেরার ম্যাচে’ সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ১২:৩১ এএম, ১৫ মে ২০২৩
তামিম-মোস্তাফিজের ‘ফেরার ম্যাচে’ সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ

ব্যাট হাতে অধিনায়ক তামিম ইকবালের হাফ-সেঞ্চুরি ও বল হাতে মোস্তাফিজের নিজেকে ফেরার ম্যাচে জয় পেল বাংলাদেশ। শেষ ওভারে হাসান মাহমুদের দুর্দান্ত বোলিং আয়ারল্যান্ডকে ৪ রানে হারিয়ে দিয়েছে টাইগাররা। এ জয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করলো বাংলাদেশ।

টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ৪৮.৫ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২৭৪ রানের সংগ্রহ করেছিল টাইগার শিবির। ব্যাট হাতে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৯ রান করেন সিরিজের গত দুই ম্যাচে বড় ইনিংস খেলতে না পানা তামিম।

২৭৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতেদ নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৭০ রান করে আয়ারল্যান্ড। জয় থেকে মাত্র ৫ রান দূরে থাকতে থামতে হয় স্বাগতিকদের। বাংলাদেশের পক্ষে বল হাতে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট শিকার করেন এ ম্যাচ দিয়ে সিরিজের ফেরা মোস্তাফিজ।

দ্বিতীয় ওয়ানডে থেকে একাদশে তিনটি পরিবর্তন এনে ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডের কাউন্টি গ্রাউন্ডে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমেছিল বাংলাদেশ। অধিনায়ক তামিমের সাথে ইনিংস শুরু করে প্রথম ১১ বলে রান নিতে পারেননি অভিষিক্ত রনি তালুকদার।

১২তম বলে বাউন্ডারি দিয়ে রানের খাতা খুলেছিলেন রনি। পরের ডেলিভারিতেই মার্ক অ্যাডায়ারের বলে আউট হন ৪ রান করা রনি। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে দ্রুত রান তুলেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত ও তামিম।

দলের রান হাফ-সেঞ্চুরি পার করলেও ১ রানের জন্য জুটিতে অর্ধশতক করতে পারেননি তামিম-শান্ত। ক্রেইগ ইয়ংয়ের বলে দ্বিতীয় স্লিপে অ্যান্ড্রু বলবির্নিকে ক্যাচ দেন ৭টি চারে ৩২ বলে ৩৫ রান করা শান্ত। জুটিতে ৪৪ বলে ৪৯ রান উঠে।

শান্তর বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন নিয়মিত ওপেনার লিটন। তামিমের সাথে বড় জুটি গড়ার চেষ্টায় সফল হন ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মত চার নম্বরে নামা লিটন। জমে উঠা জুটিতে আসে অর্ধশতকও। কিন্তু জুটিতে ৭০ রান আসার পর বিচ্ছিন্ন হন তামিম-লিটন। অ্যান্ডি ম্যাকব্রিনের বলে মিড অফের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে অ্যাডায়ারকে ক্যাচ দেন লিটন। ৩৯ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় য়ে ৩৫ রান করেন তিনি।

লিটনের বিদায়ের পর নয় ইনিংস পর ৬১ বলে ওয়ানডেতে ৫৬তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান তামিম। অধিনায়কের হাফ-সেঞ্চুরির পর দ্রুত বিদায় নেন আগের ম্যাচে ৬৮ রানের ইনিংস খেলা তৌহিদ হৃদয়। এবার ১৩ রান করেন তিনি।

বড় ইনিংসের আভাস দিয়ে ৬৯ রানে আউট হন তামিম। জর্জ ডকরেলে বলে উইকেট ছেড়ে ছক্কা মারতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যানে ইয়ংয়ের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ৬টি চারে ৮২ বলে ৬৯ রান করেন তামিম।

৩৪তম ওভারে দলীয় ১৮৬ রানে তামিমের আউটের পর ইনফর্ম মুশফিকুর রহিমের সাথে দারুন এক জুটি গড়েন মেহেদি হাসান মিরাজ। দু’জনের হাফ-সেঞ্চুরির জুটিতে বাংলাদেশের রান আড়াইশ পার হয়।

হাফ-সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে ৪৬তম ওভারে ম্যাকব্রিনের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফোর আউট হন মুশফিক। রিভিউ নিলেও, আম্পায়ার্স কলে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় বাংলাদেশের এই নির্ভরযোগ্য ব্যাটারকে। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৪ বলে ৪৫ রান করেন মুশফিক। ষষ্ঠ উইকেটে মিরাজের সাথে ৭২ বলে ৭৫ রানের জুটি গড়েন মুশফিক।

দলীয় ২৬১ রানে মুশফিকের বিদায়ে বাংলাদেশের ইনিংস ফিনিংশ করার দায়িত্ব পান মিরাজ। কিন্তু পরের ওভারে অ্যাডায়ারের বলে ফিরেন ৩টি চারে ৩৯ বলে ৩৭ রান করা মিরাজ।

৭ বলের ব্যবধানে মুশফিক-মিরাজ আউটের পর লোয়ার-অর্ডারে শেষ ৩ উইকেটে মাত্র ৯ রান আসে। ৭ বল বাকী থাকতে ২৭৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডের অ্যাডায়ার ৪০ রানে ৪টি, ম্যাকব্রিন-ডকরেল ২টি করে উইকেট নেন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৭ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙলেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে বাংলাদেশ শিবিরে ভয় ধরিয়ে দেয় আয়ারল্যান্ড। দলীয় ১২৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় তারা।

দলের তিন ব্যাটারের অর্ধশত রানের ইনিংসে ২৪২ রানে ৭ম উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ফলে শেষ তিন ওভারে জয়ের জন্য আয়ারল্যান্ডের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩২ রান।

ইনিংসের ৪৮তম ওভারে ৮ রান দিলে শেষ দুই ওভারে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৪ রান। ৪৯তম ওভারে ১৪ রান দেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। ফলে জয়ের জন্য শেষ ওভারে আইরিশদের সামনে প্রয়োজন হয় ১০ রানের। তবে হাসান মাহমুদ অধিনায়কের সে বিশ্বাস রাখতে পেরেছেন।

শেষ ওভারে হাসান মাহমুদ বল হাতে ৫ রান দিয়ে তুলে নেন দুটি উইকেট। ফলে ৪ রানের জয় পেয়ে যায় বাংলাদেশ। সিরিজ নিশ্চিতের এ ম্যাচে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান।



শেয়ার করুন :