অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা উইকেটরক্ষক লরকান টাকারের সেঞ্চুরির পর হ্যারি টেক্টর ও অ্যান্ডি ম্যাকব্রিনের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে এগিয়ে গেল সফরকারী আয়ারল্যান্ড। তৃতীয় দিন শেষে ২ উইকেট হাতে নিয়ে ১৩১ রানে এগিয়ে আয়ারল্যান্ড।
প্রথম ইনিংসে আয়ারল্যান্ডের ২১৪ রানের জবাবে ৩৬৯ রান করেছিল বাংলাদেশ। ১৫৫ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে তৃতীয় দিন শেষে ৮ উইকেটে ২৮৬ রান করেছে আয়ারল্যান্ড।
পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় দিন শেষে ২৭ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে আয়ারল্যান্ড। এতে ইনিংস হারের সম্ভাবনা জাগে আইরিশদের। তবে তৃতীয় দিন টাকার-টেক্টর ও ম্যাকব্রিনের দৃঢ়তায় ইনিংস হার এড়িয়ে লিড নিয়েছে আইরিশরা।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিন শুরু থেকেই সাবধানে খেলতে শুরু করে আগের অপরাজিত আয়ারল্যান্ডের দুই ব্যাটার হ্যারি টেক্টর ও পিটার মুর।
দিনের প্রথম ১৫ ওভার বিপদ ছাড়াই কাটিয়ে দেন টেক্টর-মুর। পরের ওভারের প্রথম বলে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ১৬ রানে আউট হন মুর। আগের দিন ১৩ রানে চতুর্থ উইকেট পতনের পর ৩৮ রানের জুটিতে ১৫৪ বল খেলেছেন টেক্টর-মুর।
মুরের বিদায়ে উইকেটে সেট ব্যাটার টেক্টরের সঙ্গী হন লরকান টাকার। বাংলাদেশ বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন তারা। প্রথম ইনিংসের মতো এবারও হাফ-সেঞ্চুরি তুলেন নেন অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা টেক্টর। অভিষেক টেস্টের দুই ইনিংসেই অর্ধশতক করা প্রথম আইরিশ ব্যাটার টেক্টর।
হাফ-সেঞ্চুরির পর খুব বেশি এগোতে পারেননি টেক্টর। স্পিনার তাইজুলের বলে লেগ বিফোর আউট হন তিনি। রিভিউ নিয়েও নিজের উইকেট বাঁচাতে পারেননি টেক্টর। ১৫৯ বলে ৫৬ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন তিনি। ৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা টেক্টরের ইনিংসে ৭টি চার ও ১টি ছক্কা ছিলো। ষষ্ঠ উইকেটে টেক্টর-টাকার ১৪৫ বলে ৭২ রানের জুটি গড়েন।
টেক্টর ফেরার পর অ্যান্ডি ম্যাকব্রিনকে নিয়ে লড়াই শুরু করেন টাকার। নিজের অভিষেক টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৯২ বল খেলে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি করেন টাকার। হাফ-সেঞ্চুরি পরই ৬৭তম ওভারে বাউন্ডারির সহায়তায় আয়ারল্যান্ডকে লিড এনে দেন টাকার।
৭৮তম ওভারে মিরাজের বলে লেগ বিফোর আউটের বিপরীতে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান ৩৪ রানে থামা ম্যাকব্রিন। ৮১তম ওভারে অভিষেক টেস্টেই সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন টাকার। আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে অভিষেকে সেঞ্চুরির নজির গড়লেন টাকার। ২০১৮ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে আয়ারল্যান্ডের অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন কেভিন ও’ব্রায়েন।
সেঞ্চুরির পর টাকারকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক-থ্রু এনে দেন ইবাদত। কভারে শরিফুলের দুর্দান্ত ক্যাচে বিদায় নেন টাকার। ১৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৬২ বলে ১০৮ রান করেন তিনি। ম্যাকব্রিনের সাথে সপ্তম উইকেটে ১৭১ বলে ১১১ রান তুলেন টাকার।
টাকার যখন ফিরেন তখন দলীয় রান ২৩৪, লিড ৭৯। এ অবস্থায় মার্ক অ্যাডায়ারকে নিয়ে আয়াারল্যান্ডের লিড ১শ পার করেন ম্যাকব্রিন। অ্যাডায়ারকে ১৩ রানে থামিয়ে জুটি ভাঙ্গেন তাইজুল। ৮৪ বলে ৩১ রান যোগ করেন তারা।
এরপর দশম ব্যাটার গ্রাহাম হুমকে নিয়ে ৫১ বলে অবিচ্ছিন্ন ২১ রান তুলে দিনের খেলার ইতি টানেন ম্যাকব্রিন। ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৪৪ বলে ৭১ রানে অপরাজিত আছেন ম্যাকব্রিন। ২৩ বলে ৯ রানে অপরাজিত হুম। বাংলাদেশের তাইজুল ৮৬ রানে ৪টি, অধিনায়ক সাকিব ২টি, শরিফুল-ইবাদত ১টি করে উইকেট নেন।