ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সলের (আইসিসি) ২০২২ সালের বর্ষসেরা ওয়ানডে একাদশে জায়গা পেয়েছেন বাংলাদেশের স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ। আইসিসি বর্ষসেরা ওয়ানডে দলের অধিনায়ক করা হয়েছে পাকিস্তানের বাবর আজমকে।
দলে ভারত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ দু’জন করে এবং বাংলাদেশ-পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়ের একজন করে ক্রিকেটার জায়গা পেয়েছেন।
বাবর আজম (পাকিস্তান)
বাবরের সাথে ওপেনিংয়ে আছেন অস্ট্রেলিয়ার হেড। গেল বছর ব্যাট হাতে ৯ ইনিংসে ৩টি সেঞ্চুরি ও ৫টি হাফ-সেঞ্চুরিতে প্রায় ৮৫ ব্যাটিং গড়ে ৬৭৯ রান করেন বাবর। অধিনায়ক হিসেবে দারুণ নেতৃত্ব দিয়েছেন বাবর। তার অধীনে তিন সিরিজের তিনটিতেই জিতে পাকিস্তান।
ট্রাভিস হেড (অস্ট্রেলিয়া)
ওয়ানডে ক্রিকেটে ২০২২সালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ রান করেন ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারের। ১৩ ম্যাচে ৫৫২ রান করেছিলেন তিনি। তবে ওয়ার্নারকে টপকে বর্ষসেরা দলে সুযোগ হয়েছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ট্রাভিস হেডের। ৯ ইনিংসে ২টি সেঞ্চুরি ও ৩টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ৫৫০ রান করন হেড।
শাই হোপ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
২০২২ সালে ওয়ানডেতে দারুণ ছন্দে ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের শাই হোপ। দলের সেরা এ পারফরমার ৩টি সেঞ্চুরি ও ২টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ২১ ইনিংসে ৭০৯ রান নিয়ে বছর শেষ করেছিলেন। বর্ষসেরা দলে তিন নম্বরে সুযোগ হয়েছে তার।
শ্রেয়াস আইয়ার (ভারত)
২০২২ সালে ওয়ানডে ক্রিকেটে ভারতীয় দলের হয়ে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করাদের একজন ছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। জাতীয় দলের হয়ে বেশিরভাগ ম্যাচ চার নম্বরে খেলে ১৭ ম্যাচে মোট ৭২৪ রান করেন আইয়ার। যার মধ্যে ছিল একটি সেঞ্চুরি ও ছয়টি হাফ সেঞ্চুরি।
টম লাথাম (নিউজিল্যান্ড)
গত বছর নিউজিল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে পাঁচ নম্বরে নেমে ফিনিশিংয়ের কাজটা দারুণভাবে করেছেন লাথাম। আইসিসির বর্ষসেরা দলে উইকেটরক্ষক হিসেবে জায়গা পাওয়া লাথাম ২০২২ সালে ১৫ ম্যাচে ৫৫৮ রান করেছেন তিনি। উইকেটের পেছনে ১৬টি ডিসমিসাল ছিল তার।
সিকান্দার রাজা (জিম্বাবুয়ে)
ওয়ানডে ক্রিকেটে ব্যাট-বল হাতে গেল বছরটা দারুণ কেটেছে রাজার। আফ্রিকার দলটিতে অন্যতম ভরসার প্রতীক ছিলেন ১৫ ম্যাচে ৩ সেঞ্চুরি ও ২ হাফ-সেঞ্চুরিতে ৬৪৫ রান করা এ অলরাউন্ডার। বল হাতে নিয়েছেন ৮ উইকেট। আইসিসির টি-টোয়েন্টি বর্ষসেরা দলেও আছেন রাজা।
মেহেদী হাসান মিরাজ (বাংলাদেশ)
ওয়ানডেতে গত বছর স্বপ্নের মতো কাটিয়েছেন মিরাজ। ১৫ ম্যাচে ব্যাট হাতে ৩৩০ রান ও বল হাতে ২৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। সেরা বোলিং ফিগার ২৯ রানে ৪ উইকেট। ব্যাট হাতে দলের কঠিন সময়ে লোয়ার-অর্ডারে দারুন কিছু ইনিংস খেলেছেন মিরাজ। এরমধ্যে বছরের শেষদিকে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আট নম্বরে নেমে ১০০ রানের অসাধারন ইনিংস খেলেন মিরাজ। তার ঐ অনবদ্য ইনিংসে ৫ রানে ম্যাচ জিতে সিরিজ জয়ের স্বাদ নেয় বাংলাদেশ।
আলজারি জোসেফ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
বর্ষসেরা দলে পেস আক্রমনে আছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের আলজারি জোসেফ। বৈচিত্র্যময় বোলিংয়ে নজর কাড়েন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ছিলেন তিনি। ১৭ ম্যাচে ২৭ উইকেট নিয়েছেন তিনি। সেরা বোলিং ৩৬ রানে ৩ উইকট।
মোহাম্মদ সিরাজ (ভারত)
সাদা বল ফরম্যাটে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন পেসার সিরাজ। জসপ্রিত বুমরাহর অনুপস্থিতিতে ওয়ানডে দলে ভারতের পেস অ্যাটাকের ভরসা বনে যান তিনি। নতুন ও পুরনো বলে দারুণ দক্ষ সিরাজ গত বছর ১৫ ম্যাচে ২৪ উইকেট শিকার করেছেন। ইকোনমি ছিলো ৪ দশমিক ৬২। সেরা ফিগার ২৯ রানে ৩ উইকেট।
ট্রেট বোল্ট (নিউজিল্যান্ড)
দীর্ঘদিন ধরেই ধারাবাহিক পারফরমেন্স করে আসছেন নিউজিল্যান্ডের পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। গেল বছরও ব্যতিক্রম হয়নি। মাত্র ৬ ম্যাচ খেলে ১৮ উইকেট নিয়েছেন তিনি। সেরা ফিগার ৩৮ রানে ৪ উইকেট। ইকোনমি ৩ দশমিক ৯৮।
অ্যাডাম জাম্পা (অস্ট্রেলিয়া)
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে গেল বছর ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ছিলেন স্পিনার এডাম জাম্পা। ১২ ম্যাচে ৩০ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ২০১৬ সালে অভিষেক বছরেও ওয়ানডেতে ৩০ উইকেট নিয়েছিলেন জাম্পা। ঘরের মাঠে পেস বান্ধব উইকেটে ৯ ম্যাচে ১২ উইকেট শিকার করেন তিনি।
আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে দল
বাবর আজম (অধিনায়ক), ট্রাভিস হেড, শাই হোপ, শ্রেয়াস আইয়ার, টম লাথাম (উইকেটরক্ষক), সিকান্দার রাজা, মেহেদি হাসান মিরাজ, আলজারি জোসেফ, মোহাম্মদ সিরাজ, ট্রেন্ট বোল্ট ও এডাম জাম্পা।