বড়দিনে বড় স্বপ্ন নিয়ে দিন শুরু করেছিল বাংলাদেশ। জয়ের স্বপ্নের সঙ্গে বাস্তবতা মেলানোর জন্য যে শুরুটার দরকার ছিল সেটাও করেছিল স্বাগতিকরা। সাকিব আল হাসানের পর মেহেদী হাসান মিরাজের ঘুর্নিতে ৭৪ রানে সাত উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। তবে সব আশায় পানি ঢেলে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও শ্রেয়াস আইয়ারের ব্যাটে অনায়াসে জয় পেয়েছে ভারত।
টাইগারদের বিরাট এক স্বপ্নের অপমৃত্যুও হল। অষ্টম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৭১ রানের জুটি গড়ে জয়ের বন্দরে পৌছে যায় তারা। শেষ রোমাঞ্চে পানি ঢেলে দিয়ে তিন উইকেটের জয় পেয়ে ২-০তে টেস্ট সিরিজ জিতে নিয়েছে লোকেশ রাহুলের দল।
বাংলাদেশ সফরে তারা ওয়ানডে সিরিজে হেরেছিল ২-১ এ। কিন্তু টেস্ট সিরিজে ২-০তে জিতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলার আশা টিকিয়ে রাখলো।
বাংলাদেশের দেওয়া ১৪৫ রানের লক্ষ্যে ছুঁতে ভারতের লাগে ৪৭ ওভার।অশ্বিন ৪২* এবং শ্রেয়াস ২৯* রান নিয়ে ম্যাচ শেষ করেন। ক্যারিয়ারে নবমবারের মতো পাঁচ উইকেট তুলে নেন মিরাজ।
অথচ আগেরদিন দারুন বোলিংয়ের পর ম্যাচটি বাাংদেশের পক্ষেই চলে আসে। ৪৫ রানে চার উইকেট হারিয়ে চতুর্থদিন শুরু করে ভারত। নাইটওয়াচম্যান জয়দেব উদকাটকে তুলে নিয়ে পথ দেখিয়েছিলেন অধিনায়ক সাকিবই। এরপরই আবার ভেল্কি দেখান মিরাজ।
আগেরদিন থেকে ভোগানো অক্ষর প্যাটেলকে আউট করার আগে ফিরিয়ে দেন ভয়ংকর রিশভ পান্তকেও।
ধারণা করা হচ্ছিল পান্তই ম্যাচের ব্যবধান গড়ে দিতে পারেন। অথচ আক্রমণাত্বক খেলা পান্তকে এলবিডাব্লুর ফাঁদে ফেলে উল্লাসে মাতে বাাংলাদেশ। মিরাজের আরেকটি ভেতরে ঢোকা বলে প্যাডে লাগলেই জোরালো আবেদন করেন এই ডানহাতি অফ-স্পিনার। আম্পায়ার সঙ্গে সঙ্গে আঙ্গুল তুলে ফেলেন। ১৩ বলে পান্ত করেন ৯ রান।
ভেতরে ঢোকা একটি ডেলিভারিতে পেছনে খেলতে গিয়ে প্যাটেলের প্যাডে লেগে বল স্ট্যাম্পে আঘাত হানে। বাংলাদেশকে যে সবচেয়ে বেশি ভূগিয়েছেন এই প্যাটেল। শেষ পর্যন্ত ৬৮ বলে ৩৪ রান করেন প্যাটেল। প্যাটেলকে আউট করের ক্যারিয়ারে নবমবারের মতো ইনিংসে পাঁচ উইকেটের স্বাদ পান মিরাজ।
৭৪ রানে সফরকারীদের সাত উইকেট তুলে নিয়ে জয়ের হাতছানি দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেখানে শ্রেয়াসের সঙ্গে আত্ম্রবিশ্বাসী শুরু হয় অশ্বিনের। এরই মধ্যে অশ্বিন একটি ভুল করে ফেলেন। কিন্তু সেই ভুলের সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ।
মিরাজের বলে শর্টে ক্যাচ ওঠে। কিন্তু বুকের মধ্যে জড়িয়ে গেলেও সেই ক্যাচ রাখতে পারেননি মুমিনুল। বড় এই সুযোগ হাতছাড়া করে ম্যাচও ছেড়ে দিয়েছি বাংলাদেশ। এরপর যে আর কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি স্বাগতিকরা।
প্রথমে মন্থর, এরপ আক্রমণাত্বক হয়ে ওঠেন তারা। মিরাজকে পরপর দুই চার মেরে মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই জয় তুলে নেয় সফরকারীরা।
চারটি চার ও একটি ছক্কায় ৬২ বলে ৪২* রান করেন অশ্বিন। ৪৬ বলে ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন শ্রেয়াস। মিরাজের পাঁচ উইকেটের সঙ্গে সাকিব পার দুটি।
বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ড সফরে দারুন এক জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। বছরের শেষটাও আরও ভালো হতে পারতো। তারপরও ভারতের মতো দলের বিপক্ষে এভাবে লড়াই করতে পেরেও খুশি সাকিবরা।
স্পোর্টসমেইল২৪/জেএম