রঙিন পোশাকে বিশেষ করে ওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশ যতোটাই উজ্জ্বল, সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ততটাই ম্লান। লাল বলের ক্রিকেটে অনেকবারই শুভ্রতা ছড়ানোর আভাস দিয়ে সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু বাস্তবে তা ধরা দিচ্ছে না। ব্যর্থতাই সবচেয়ে বড় সঙ্গী যেখানে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও বাংলাদেশ তলানীতে। এখানে থেকেই শেষ করার সম্ভাবনাই বেশি। টি ২০ বিশ্বকাপ থেকে ওয়ানডে সিরিজ জয়। এবার টেস্টেও নতুন কিছু করার সম্ভাবনায় ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
টি ২০ বিশ্বকাপে প্রত্যাশার চেয়েও ভালো খেলেছে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে এবার ওয়ানডে সিরিজে জয়ের সম্ভাবনা খুব কমই দেখছিল স্বাগতিকরা। বিশেষ করে নিয়মিত অধিনায়ক তামিম ইকবাল না থাকায় একটু বেশি চাপেই ছিল দল। সেখানেও টানা দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ ঘরে তুলেছে লিটন দাসরা। এবার টেস্টের চ্যালেঞ্জ নেওয়ার সুযোগ। যেভানে ধৈর্য, স্কিল-মানসিকতার প্রয়োগের খুব প্রয়োজন।
বিশেষ করে টেস্টে ভারত ও বাংলাদেশের পার্থক্য যোজন-যোজন। শক্তি ও সামর্থ্যে তাদের সঙ্গে তুলনাতেই চলে না। বাংলাদেশ যেখানে তলানীতে সেখানে ভারত এই সিরিজ দিয়েই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন দেখছে। সফরকারীরা দুই টেস্টেই জয়ের কোনো বিকল্প দেখছে না।
দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে ১১ টেস্টের নয়টিতেই জিতেছে ভারত। দুটি টেস্ট ড্র হয়েছে। সেই দুই টেস্টে ড্র’য়ে বড় ভুমিকা ছিল বৃষ্টির। জোর গলায় না বললেই প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো জানালেন, প্রতিটি সিরিজ জিততে চায় বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ‘টেস্টে প্রতিদ্বন্দ্বিতার দিক থেকে আমাদের অনেক উন্নতি হয়েছে। ভারতের ভালো একটি দলের সঙ্গে আমাদের ছেলে লড়বে। এই কন্ডিশন তাদেরও পরিচিত, তাদের কন্ডিশনই বলা যায়। তবে আমাদের চেষ্টা থাকে প্রতিটি সিরিজ জয়ের। এবারও তাই থাকবে। ঘরের মাটিতে সিরিজ তাই একটু বেশি প্রতিদ্ব›িদ্বতার প্রত্যাশা রয়েছে।’
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রচুর রান হবে এটাই যেন স্বাভাবিক। বরং উইকেট অন্যরকম হলেই আলোচনা শুরু হয়। এবারও বড় রানের আশা করছে দু’দল। এমন উইকেটে পেসারদের জন্য সব সময়ই চ্যালেঞ্জিং। স্বাগতিক দলের অন্যতম সেরা পেসার তাসকিন আহমেদকে নিয়ে ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না টিম ম্যানেজমেন্ট। তবুও তিন পেসার নিয়ে খেলবে টাইগাররা। ইবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদের সঙ্গে দেখা যেতে পারে শরিফুল ইসলামকে।
মঙ্গলবার অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিয়ে শংকা দেখা দিয়েছিল। তবে তিনি ফিট। নেতৃত্ব দেবেন দলকে। স্পিন আক্রমণে তার সঙ্গে রয়েছেন ওয়ানডে সিরিজ জয়ের নায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। নিয়মিত ওপেনার তামিম ইকবাল ইনজুরির কারণে দলে না থাকায় বিকল্প ওপেনার নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। এজন্য অভিষেক হয়ে যেতে পারে জাকির হাসানের। ওপেনে তিনি সঙ্গী হবেন মাহমুদুল হাসানের। উইকেটের পেছনে গøাভসহাতে থাকবেন নুরুল হাসান সোহান। তবে বাজে ফর্মে থাকা জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামের রাজা সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল হকের একাদশে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীন। বাকিরা মুশফিকুর রহিম, সাকিব ও লিটন দাস।
ভারত শিবিরেও চোটে থাবা। ইনজুরির কারনে নিয়মিত অধিনায়ক রোহিত শর্মা, সহ-অধিনায়ক জাসপ্রিত বুমরাহকে তারা সিরিজে পাচ্ছে না। এছাড়া রবীন্দ্র জাদেজা ও পেসার মোহাম্মদ শামিও ইনজুরির কারণে সিরিজে নেই।
বিরাট কোহলি টেস্টে সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেছেন ২০১৯ সালে এই বাংলাদেশের বিপক্ষেই। চট্টগ্রামে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে তিন অংকের দেখা পেয়েছেন বিরাট। এবার টেস্টেও ভারত তার কাছে বড় প্রত্যাশা করছে।
ভারতের বোলিং কোচ পরশ হাম্ব্রে বলেন, ‘আমরা অনেক দিন পর টেস্টে নামছি। মানসিকতা পাল্টাতে একটু সময় লাগে। এটা নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা চলছে। সুন্দরভাবে কথা হচ্ছে। দীর্ঘদিন পর খেললে অনেক দলের জন্যই এমনটা হয়েছে।’
শক্তিতে যতোই পিছিয়ে থাকুক বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম বলেই প্রতিদ্ব›িদ্বতার আশা নিয়েই নামছে বাংলাদেশ।
স্পোর্টসমেইল২৪/জেএম