চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা করছে বাংলাদেশ ক্রিটেক বোর্ড (বিসিবি)। ১৫ সদস্যের ঘোষিত দলে জায়গা পাননি এশিয়া কাপের আগে এ ফরম্যাটে নেতৃত্ব হারানোর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিশ্বকাপ দলে তাকে না রাখার ব্যাখ্যা হিসেবে নির্বাচকরা বলছেন, সামনের যে পরিকল্পনা নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট এগিয়ে চলছে সেখানে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নেই।
জিম্বাবুয়ে সফরের আগে নেতৃত্ব থেকে সরাসরি সরিয়ে না দিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে পুরো সিরিজ থেকে বিশ্রাম দেওয়া হয়। যদি সিরিজের শেষ ম্যাচে তাকে খেলানো হয়। এরপর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সাকিব আল হাসানের কাঁধে নেতৃত্ব তুলে দেয় বিসিবি।
অধিনায়কত্ব হারালেও টি-টোয়েন্টি খেলা চালিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে সম্প্রতি শেষ হওয়া এশিয়া কাপে দলের বাজে পারফরম্যান্সে সিরিয়দের খেলা নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠে। বোর্ড কর্মকর্তা থেকে শুরু করে খোদ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও বলেন, যারা পারফর্ম করবে তারাই দলে থাকবে। সাকিবের ওই বক্তব্যের পর দেশে ফিরে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম।
মুশফিকের অবসরের পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণার দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছিল ততই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে আলোচনা বাড়ছিল। সর্বশেষ বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) জানিয়ে দেওয়া হলো অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে দলে রাখেনি বোর্ড। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু এবং নির্বাচক প্যানেলের আরেক সদস্য হাবিবুল বাশার সুমন বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করেন।
বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে না নেওয়ার বিষয়ে প্রধান নির্বাচক নান্নু বলেন, “মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের প্রতি আমাদের পূর্ণ সম্মান রয়েছে। সে অনেক ভালো ভালো ম্যাচ জিতিয়েছে। আমাদের নতুন টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট এসেছেন। তিনি একটা পরিকল্পনা দিয়েছেন। আগামী এক বছরের জন্য যে পরিকল্পনাটা নিয়ে আমরা আগাচ্ছি, একটা আলাদা ডিরেকশনে।”
তিনি আরও বলেন, “টিম ম্যানেজম্যান্টের সবার সম্মতিক্রমে রিয়াদকে (মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ) বাদ দেওয়া হয়েছে।”
বিশ্বকাপের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১১টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১৬.৫৪ গড় এবং ১০২.৮২ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সর্বশেষ এশিয়া কাপের দুই ম্যাচের মধ্যে একটি ৯২.৫৯ এবং অন্যটিতে ১২২.৭২ স্ট্রাইক রেট ছিল তার। মূলত রান তোলার ক্ষেত্রে এমন স্লো হওয়ার কারণেই বিশ্বকাপে তাকে দলে রাখা হয়।
২০০৭ সাল থেকে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এখন পর্যন্ত ১২১টি ম্যাচ খেলেছেন। বাংলাদেশের হয়ে যা কোনো ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ টি-টোয়েন্টি খেলার রেকর্ড।
এদিকে, বিশ্বকাপ দলে না থাকায় এ সংস্করণে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিতই হয়ে পড়লো। তবে সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে অধিনায়ক থাকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জন্য কিছুটা আশার কথা বলেন নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন। বলেন, “অবসর না নেওয়া পর্যন্ত যেকোনো খেলোয়াড়ের জাতীয় দলের খেলার সুযোগ তাকে।”
হাবিবুল বাশার সুমনের কথায় আশা থাকলেও বাস্তবতা কঠিন। সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে এখনো বিদায় না বললেও দল নির্বাচনে তিনি আরও বিবেচনায় থাকেন না। তাকে বাদ দেওয়ার সময়ও একই ধরনের কথা শুনিয়েছিলেন নির্বাচকরা।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস