এশিয়া কাপের সুপার ফোরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতকে ৬ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। এ জয়ে টুর্নামেন্টের ফাইনালের পথে এক পা দিয়ে রাখলো লঙ্কানরা। অন্যদিকে, ফাইনাল ওঠার সুযোগ এক রকম শেষ হয়ে গেছে ভারতের।
সুপার ফোরের টানা দুই ম্যাচ থেকে পুরো ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে এখন শ্রীলঙ্কা। সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৪ উইকেটে হারিয়েছিল লঙ্কানরা।
অন্যদিকে, সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে হারের পর এবার শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে ফাইনাল ওঠার সুযোগ এক রকম শেষ হয়ে গেল ভারতের। এখন অনেক ‘যদি-কিন্তুর’ উপর নির্ভর করছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের ফাইনাল খেলা।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় শ্রীলঙ্কা। ব্যাট হাতে নেমে তিন ওভারের মধ্যে ডাবল ধাক্কা খায় ভারত। দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার লোকশ রাহুল ৬ ও তৃতীয় ওভারে বিরাট কোহলি শুন্য হাতে প্যাভিলিয়নে ফিরেন। রাহুলকে লেগ বিফোর ফাঁদে ফেলেন স্পিনার মহেশ থিকশানা ও কোহলিকে বোল্ড করেন দিলশান মধুশাঙ্কা।
১৩ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারালেও ভড়কে যাননি আরেক ওপেনার অধিনায়ক রোহিত শর্মা। শ্রীলঙ্কার বোলারদের পাল্টা আক্রমণ করেন রোহিত। তার মারমুখী মেজাজে পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেটে ৪৪ রান পায় ভারত। রোহিতকে সঙ্গ দিয়েছেন চার নম্বরে নামা সূর্যকুমার যাদব।
যাদবকে সাথে নিয়ে মারমুখী মেজাজ অব্যাহত রেখে ৩২ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৩২তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রোহিত। এতে টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সর্বোচ্চ হাফ-সেঞ্চুরিতে কোহলিকে স্পর্শ করেন তিনি। কোহলিরও ৩২টি অর্ধশতক রয়েছে।
১৩তম ওভারে ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৪১ বলে ৭২ রান রোহিতকে থামান চামিকা করুনারত্নে। তৃতীয় উইকেটে সূর্যর সাথে ৫৮ বলে ৯৭ রান যোগ করেন রোহিত। দলীয় ১১০ রানে রোহিতের আউটের পর শ্রীলঙ্কার বোলারদের উপর খুব বেশি চড়াও হতে পারেনি ভারতের পরের দিকের ব্যাটাররা।
শেষ ৪৬ বলে ৬০ রান পায় ভারত। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৭৩ রানের সংগ্রহ পায় টিম ইন্ডিয়া। সূর্য ২৯ বলে ৩৪, হার্ডিক পান্ডিয়া-ঋসভ পান্থ ১৩ বল করে খেলে ১৭ রান করে করেন। শেষ দিকে রবীচন্দ্রন অশ্বিন ৭ বলে অপরাজিত ১৫ রান তুলেন। শ্রীলঙ্কার মুধশাঙ্কা ২৪ রানে ৩ উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১৭৪ রানের জবাবে উড়ন্ত সূচনা করে শ্রীলঙ্কা। পাওয়ার-প্লেতে ৫৭ রান তুলেন লঙ্কার দুই ওপেনার কুশল মেন্ডিস ও পাথুম নিশাঙ্কা। ১০ম ওভারে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরি করেন নিশাঙ্কা। এ জন্য ৩৩ বল খেলেন তিনি।
১১ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার রান ছিল বিনা উইকেটে ৯৭। ১২তম ওভারে ভারতকে ডাবল ব্রেক-থ্রু এনে দেন স্পিনার যুজবেন্দ্রা চাহাল। প্রথম বলে নিশাঙ্কাকে ৫২ রানে ও চতুর্থ বলে চারিথা আসালঙ্কাকে শুন্য হাতে বিদায় দেন চাহাল। ৩৭ বল খেলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন নিশাঙ্কা।
৯৭ রানে ২ উইকেট তুলে নিয়ে শ্রীলঙ্কাকে চেপে ধরে ভারত। সেই চাপ আরও বাড়ান চাহাল ও অশ্বিন। দলীয় ১১০ রানে কুশলকে শিকার করেন চাহাল। আর দানুস্কা গুনাথিলাকাকে ১ রানে ফেরান অশ্বিন। ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৭ বলে ৫৭ রান করেন কুশল।
কুশল ও গুনাথিলাকা ফেরার সময় জিততে ৩৫ বলে ৬৪ রান দরকার ছিল শ্রীলঙ্কার। এরপর ২৩ বলে ৪৩ রানের জুটি গড়ে জয়ের সমীকরণ শেষ ২ ওভারে ২১ রানে নামিয়ে আনেন ভানুকা রাজাপাকসে ও অধিনায়ক দাসুন শানাকা। ভুবেনশ্বরের করা ১৯তম ওভার থেকে ১৪ রান তুলে নেয় লঙ্কানরা। এতে শেষ ওভারে জিততে ৭ রান দরকার পড়ে শ্রীলঙ্কার।
আর্শদীপ সিংয়ের করা শেষ ওভারের প্রথম চার বলে এক করে চার নেন শানাকা ও রাজাপাকসে। আর পঞ্চম বলে বাই থেকে ২ রান নিয়ে ম্যাচ জয়ের আনন্দে ভাসে শ্রীলঙ্কা।
শানাকা ১৮ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় অপরাজিত ৩৩ রান করেন। আর ২টি ছক্কায় ১৭ বলে অপরাজিত ২৫ রান করেন রাজাপাকসে। ভারতের চাহাল ৩৪ রানে ৩ উইকেট নেন।