ভারতীয় ব্যাটার বিরাট কোহলি ও সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির সম্পর্কের রসায়ন কে না জানে! ধোনির প্রতি কোহলির যে পরিমাণ শ্রদ্ধা, সম্মান আর কোহলির প্রতি ধোনির যে আস্থা সেটা অবিশ্বাস্য। নিজের খারাপ সময়েও এই একজনকেই পাশে পেয়েছিলেন বলে জানান কোহলি।
বেশ লম্বা সময় পরে অবশেষে রানে ফিরেছেন কোহলি। প্রথমে সেঞ্চুরি খরা এবং পরে সেটা পরিণত হয় রান খরায়। এ সময়ে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে বিভিন্ন সমালোচনা হজম করতে হয়েছে কোহলিকে।
এমনকি অনেকে তো দল থেকেই বাদ দিতে বলেছিলেন। শুধু অভিজ্ঞতার দোহাই দিয়ে এরকম একজন অফফর্মে থাকা ব্যাটারকে দলে রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কপিল দেবের মতো ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররা।
দীর্ঘ রান খরায় থাকা কোহলি মানসিক অবসাদেও পড়ে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে টি-টোয়েন্টি থেকে অধিনায়কত্ব ছাড়লেন। এরপর ওয়ানডে থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো, যেটা নিয়ে আজও ভারতীয় ক্রিকেটে বিতর্ক বিদ্যমান। পরে টেস্ট অধিনায়কত্বও ছেড়ে দিলেন।
পাকিস্তানের বিপক্ষে হারা ম্যাচে কোহলির রেকর্ড
গতরাতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারত হারলেও কোহলি ৪৪ বলে ৫৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন। একই ম্যাচে রোহিতকে ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ফিফটির মালিকও হয়েছেন।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে নিজের খারাপ সময়ের স্মৃতিচারণ করেছেন। জানিয়েছেন, একমাত্র ধোনিই ছিলেন তার পাশে। এমনকি টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর কেউ তাকে ম্যাসেজ করেনি, কিন্তু শুধুমাত্র ধোনি করেছিল।
কোহলি বলেন, “একটা জিনিস আমি আপনাদের বলতে পারি, যখন আমি টেস্ট অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেই আমি যাদের সঙ্গে খেলেছি আগে শুধুমাত্র ধোনি আমাকে ম্যাসেজ পাঠিয়েছিল।”
কোহলির বাজে ফর্মটাই গত দেড়/দুই বছর যেন ক্রিকেট টকশো গুলোর মূল আলোচনার বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। সেখানে অনেকেই নানা সময়ে কোহলিকে বিভিন্ন পরামর্শও দিয়েছেন। কিন্তু কোহলির আক্ষেপ তাদের কাছে নম্বর থাকা স্বত্তেও কেউ তাকে ফোন দেয়নি।
“প্রচুর লোক আমাকে টিভিতে বসে পরামর্শ দিয়েছে, কিন্তু সেখান থেকে যাদের কাছে আমার নম্বর রয়েছে তাদের কেউই আমাকে ফোন দেয়নি” যোগ করেন কোহলি।
শুধু তাই নয় বিশ্বের সামনে পরামর্শ দেওয়ার কোনো মূল্য নেই বলে মনে হয় কোহলির। যদি সত্যিই কেউ চায় তার পরামর্শে কোহলি উন্নতি করুক তাহলে সরাসরি কথা বলার আহ্বান জানান তিনি।
কোহলি বলেন,”আপনি যদি পুরো বিশ্বের সামনে আমাকে পরামর্শ দেন সেটার কোনো মূল্য নেই আমার কাছে। যদি এটা আমার উন্নতির জন্য হয়, যদি আপনি চান আমি ভালো করি তাহলে আমার সাথে সরাসরি কথা বলেন।”
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলার পর লম্বা বিশ্রামে ছিলেন কোহলি। এই সময়ে একবারও ব্যাট ধরেননি। তবে এই বিরতিটা তার খুব দরকার ছিল বলে মনে করেন তিনি।
“আমি কখনো ভাবিনি এক মাস ব্যাট না ধরে থাকতে হবে আমাকে। কিন্তু পরিস্থিতিটাই এমন ছিল যে আমাকে বিরতি নিতে হতো। যতটা না শারীরিক তার চেয়ে বেশি মানসিকভাবে প্রয়োজন ছিল। এরপরই আপনি বুঝতে পারবেন আবার কেন ব্যাট ধরলেন এবং খেলা শুরু করলেন” যোগ করেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭০ সেঞ্চুরির মালিক।
স্পোর্টসমেইল২৪/এসকেডি