বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দাপটের মধ্যে ওয়ানডে ক্রিকেট নিয়ে শঙ্কার বার্তা শোণালেন ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার মঈন আলি। তার মতে, আগামী দু’বছরের মধ্যে ওয়ানডে ক্রিকেট হারিয়ে। কারণ হিসেবে মঈন বলছেন, ওয়ানডে ক্রিকেটের প্রতি এখন অনেকেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।
গত মাসে আচমকাই ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক বেন স্টোকস। তার অবসরের পর থেকে ওয়ানডে ক্রিকেট নিয়ে সমালোচনা সর্বত্র। সেই সমালোচনায় এবার যোগ দিলেন মঈন। ওয়ানডে নিয়ে শঙ্কার কথা জানালেন তিনি।
কেপি স্ন্যাকস সামার ক্রিকেট রোডশোর একটি অনুষ্ঠানে মঈন বলেন, “এ মুহূর্তে ওয়ানডে ক্রিকেটর জনপ্রিয়তা কমে গেছে। এ ফরম্যাট নিয়ে কিছু একটা করতে হবে। আমার ভয় হচ্ছে, বছর দুয়েকের মধ্যে ওয়ানডে ক্রিকেট হারিয়ে যেতে পারে। সত্যি বলতে এটি এখন দীর্ঘ ও বিরক্তিকর এক সংস্করণ।”
তিনি বলেন, “টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এখন দারুণ ফরম্যাট। ওয়ানডে ক্রিকেট মাঝামাঝি অবস্থায় পড়ে গেছে। এ মুহূর্তে এটিকে কোন গুরুত্বই দেওয়া হচ্ছে না।”
বর্তমানে আন্তর্জাতিক সূচি ঠাসা, সেই সাথে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটও রয়েছে। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক সিরিজগুলোর উপর চাপ পড়ছে বলে মনে করেন মঈন। বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি এখন অনেক বেশি খেলা হচ্ছে। একদিক থেকে চিন্তা করলে এটি ভালো। কিন্তু এত বেশি খেলার কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পথে তা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।”
ঠাসা সূচির কারণেই অনেকেই ওয়ানডে ক্রিকেট ছাড়ছে, যা ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। মঈন বলেন, “আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন সংস্করণেই এত বেশি টুর্নামেন্ট হচ্ছে, যে কারণে ক্রিকেটাররা ঘনঘন অবসর নিচ্ছে। সামনে আরও অনেকই অবসর নিবে। কারণ, ঠাসা সূচিতে সবাই চাপে পড়েছে।”
ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টগুলোও ক্রিকেটকে অনেক বেশি ক্ষতি করছে বলেও মনে করেন মঈন। বলেন, “ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ আকর্ষণীয়। কিন্তু এসবের জন্য যদি টেস্ট ম্যাচ বা ওয়ানডে মিস করতে হয় তা দুঃখজনক। কারণ ইংল্যান্ডের হয়ে সবাই সব সময় খেলতে চায়। কেউই বাদ দিতে চায় না। আমার বয়স যখন কম ছিল আমি বিশ্রাম পছন্দ করতাম না।”
শুধুমাত্র ওয়ানডেই নয়, টেস্টের প্রতি তরুণদের অনাগ্রহও ফুঁটে উঠেছে বলে মনে করেন মঈন। বলেন, “আন্তর্জাতিক ক্রিকেট না খেলেই, একজন তরুণ খেলোয়াড় অনেক টাকা উপার্জন করতে পারে। মোটা অঙ্কের অর্থ পাওয়া যায় বলে এটা নিয়ে তাদের চিন্তা-উদ্বেগ নেই। কিন্তু এর ফলে আপনি টেস্ট ক্রিকেটের স্বাদ পাচ্ছেন না, যা কি-না সবার সেরা। অনেক ভালো খেলোয়াড়ই টেস্ট খেলতে পারছে না বলে হতাশ হচ্ছে না। কিন্তু ১০-১৫ বছর আগে টেস্ট ক্রিকেট খেলাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।”
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস