বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব’১৯ দলের নতুন হেড কোচ হয়ে বাংলাদেশে এসেছেন অস্ট্রেলিয়ান কোচ স্টুয়ার্ট ল। এদেশের সঙ্গে ল’র কোচিংয়ের সম্পর্ক অবশ্য নতুন নয়। বেশ কয়েক দফায় জাতীয় দল ও বয়সভিত্তিক দলে কোচিং করিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটে।
নতুন করে আবার অনুর্ধ্ব’১৯ দলের দায়িত্ব নিয়ে আজই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলনে আসেন তিনি। সাথে আসেন গেম ডেভেলপমেন্টের ব্যাটিং পরামর্শক ওয়াসিম জাফর। ভারতের এই সাবেক ব্যাটারও এবার দ্বিতীয় দফায় কাজ করবেন বাংলাদেশ ক্রিকেটে।
ফিটনেস ক্যাম্প দিয়ে নতুন কোচিং প্যানেলের অধীনে ৪০ জনকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে অনুর্ধ্ব’১৯ দল। এরপর ২৩ জুলাই থেকে তিন সপ্তাহের স্কিলক্যাম্প ও প্রস্ততি ম্যাচ থেকেই পাকিস্তান অনুর্ধ্ব’১৯ দলের বিপক্ষে পাঁচটি একদিনের ও একটি চার দিনের ম্যাচের জন্য দল ঘোষণা করবে বিসিবি।
বাংলাদেশে ফিরতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন ল। মূলত ক্রিকেটের তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ পেয়েই না করেননি বলে জানান এই অস্ট্রেলিয়ান কোচ।
বাংলাদেশ ‘এ’ দলে সৌম্য-সাব্বির, নেই মুমিনুল
বলেন, "আবার ফিরে এসে ভালো লাগছে। আজ এখানে এসে কিছু পরিচিত, বন্ধুত্বপূর্ণ মুখ দেখতে পেলাম। অনেক ভালো স্মৃতি আছে এখানে। আমি অনেক প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেছি বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায়। সত্যি কথা বলতে, আন্তর্জাতিক দলের প্রধান কোচ হিসেবে খুব বেশি কোচিংয়ের সুযোগ থাকে না। কিন্তু, এই দায়িত্ব আমাকে উঠতি ক্রিকেটার নিয়ে কাজ করার সুযোগ এনে দেবে, যেখানে আমি পার্থক্য এনে দিতে পারব।”
ল কাজ করবেন বাংলাদেশ সদ্য কৈশোর পেড়োনো যুব ক্রিকেটারদের নিয়ে। তাই তাদের শুধু ক্রিকেটীয় সামর্থ নয়, মানুষের মতো মানুষ হিসেবেও গড়ে তুলতে চান তিনি।
“শুধু একজন ক্রিকেটীয় সামর্থ্যে নয়, তরুণ ব্যক্তিত্ব গড়ার ক্ষেত্রেও সাহায্য করতে পারব। তাই সুযোগটা যখন এল, আমার জন্য “হ্যাঁ” বলা খুব সহজ ছিল” যোগ করেন ল।
২০২০ সালে গেম ডেভেলপমেন্টের ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন ভারতের সাবেক ব্যাটার ওয়াসিম জাফর। দ্বিতীয় দফায় একই পদে দায়িত্ব পালনে ল’র সঙ্গে তিনিও এসেছিলেন মিরপুর শেরে-ই-বংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের প্রেস কনফারেন্সে। ল এবং কোচিং প্যানেলের বাকিদের সঙ্গে নিয়ে যুব ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য প্রস্তত করার আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
জাফর বলেন, “আপনি যখন অনেক দিন ধরে ক্রিকেট খেলেন, তখন অনেক কিছুই পরিষ্কারভাবে দেখতে পারেন এবং এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারেন। তবে এখানে এটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এই অনূর্ধ্ব-১৯ ছেলেদের প্রথমে তৈরি করা এবং পরের ধাপের জন্যও প্রস্তুত করা—এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। আশা করি আমরা দুজন এবং অন্য স্টাফরা মিলে তাদের ভালো ক্রিকেটার, ভালো মানুষ হিসেবে সামনে এগিয়ে নিতে পারব।"
দলে সোহানের জায়গা ‘প্রায় পাকা’
এর আগে ২০১৬ সালে প্রথম দফায় বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হেড কোচ হিসেবে কাজ করেছিলেন ল। সেই দল থেকে এখন জাতীয় দলে নিয়মিত খেলছেন তখনকার অনুর্ধ্ব’১৯ দলের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ, নাজমুল হোসাইন শান্ত ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন।
যুব ক্রিকেটে শুধু ক্রিকেটার হিসেবে নয় মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আদর্শ জায়গা বলে মনে করেন ল। তার কণ্ঠে মিরাজ, শান্তদের নিয়ে গর্বও প্রকাশ পেল।
ল বলেন,, "আমি ২০১৬ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সঙ্গে কাজ করেছি। যেখানে মিরাজ, শান্তরা ছিল। এখন ওদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে দেখে আমার খুব ভালো লাগছে। এটা যে শুধুই তরুণ ক্রিকেটার তৈরির জায়গা, তা কিন্তু না। আমি জানি যে এটা ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম, এটাই হওয়া উচিত মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু এটা মানুষ গড়ে তোলারও জায়গা।
মিরাজ-শান্তদের দেখে এখন খুব খুশি হন এই অস্ট্রেলিয়ান কোচ। তারা প্রত্যেকে নিজেদের পরিবার নিয়েও গর্বিত বলে মত তার।
আরও বলেন, “আমি মিরাজ-শান্তদের যখন দেখি, ওদের চেহারায় বিশাল হাসি দেখতে পারি। ওরা খুব গর্বিত নিজেদের পরিবার নিয়ে। ওরা এখন বিবাহিত। ওরা খুদে ক্রিকেটার থেকে শুরু করে এখন বড় হচ্ছে। ক্রিকেটে তো অবদান রাখছেই, ক্রিকেটের বাইরেও অনেক কিছু করেছে। এটাই আমি চাই।"
স্পোর্টসমেইল২৪/এসকেডি