বাংলাদেশ দলের অন্যতম প্রধান বোলার মোস্তাফিজুর রহমান। অথচ মাঝেমধ্যেই বল হাতে খরুচে ওভার করেন তিনি। বল হাতে ধারাবাহিক না হওয়াতে ওভারপ্রতি ইকোনমি বেড়ে যায় প্রায়ই। ইকোনমি বাড়ার জন্য বিদেশের উইকেটকে দায়ী করছেন বাংলাদেশের এই বাঁহাতি পেসার।
ক্যারিয়ারের শুরুর মোস্তাফিজ আর এখনকার মোস্তাফিজের মধ্যে অনেক পার্থক্য। যেভাবে স্বপ্নের মতো ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন সেখান থেকে অনেকটাই দূরে সয়ে গিয়েছেন কাটার মাস্টার খ্যাতি পাওয়া ফিজ।
বাংলাদেশের মধ্যে টি-টোয়েন্টি খেলার সিভি তৈরি করলে সাকিবের পর মোস্তাফিজেরটাই ভারি হবে সবচেয়ে বেশি। প্রতি আসরেই ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) খেলেন, খেলেছেন পাকিস্তান সুপার লিগেও (পিএসএল)।
এসব লিগ খেলার অভিজ্ঞতা যে একেবারেই কাজে লাগছে না সেটা নয়। এর আগে পাকিস্তান, আফিগানিস্তান সিরিজে বল হাতে দারুন কৃপণতা দেখিয়েছেন তিনি। যেটার সুবিধা অন্য বোলাররাও পেয়েছেন।
ক্যারিবীয় সফর শেষে জিম্বাবুয়ে যাবে বাংলাদেশ দল
তবে বল হাতে মোটেও ধারাবাহিক নন তিনি। এক সিরিজে বল হাতে কৃপণতা দেখাতে পারলেও দেখা যাচ্ছে পরের সিরিজেই খরুচে ওভার করছেন। যে কারণে মোস্তাফিজের বোলিংয়ে ইকোনমি রেট মাঝেমধ্যে কমছেই না।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও চার ওভারে ৩৭ রান দিয়েছেন তিনি। ফিজের ওভারপ্রতি রান এসেছে ৯ এর বেশি!
সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশ দল এখন গায়ানাতে। সেখানেই টিম হোটেলে সংবাদকর্মীদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। তাকে ইকোনমি রেট নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিদেশের উইকেটকে কারণ হিসেবে নিয়ে আসেন তিনি।
বলেন, "এশিয়ার উইকেট একরকম। এশিয়ার বাইরে উইকেট আরেকরকম। এশিয়ার বাইরে ট্রু বা ভালো উইকেট থাকে। এশিয়ার মধ্যে দেখবেন অন্য দলের ১৫০ করতেও কষ্ট হয়। আর এশিয়ার বাইরে দেখবেন ২০০ রানও নিরাপদ না। এ কারণে আপনার ইকোনমি বাড়তে পারে। আমার যেটা মনে হয়।"
টি-টোয়েন্টির দুই হাজারি ক্লাবে দ্বিতীয় বাংলাদেশি সাকিব
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাত বছর পার করে ফেলেছেন ফিজ। তার সমসাময়িক অনেক বোলারই এখন বিশ্বের সেরা বোলার হওয়ার দৌড়ে লড়াই করছেন। অথচ মোস্তাফিজ সেখানে তাদের চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছেন। কেনো তাদের সঙ্গে সমানে লড়াই করতে পারছেন না এমন প্রশ্নের উত্তরে এখনো শেখার কথা বলেন ফিজ।
বলেন, "আমার মনে হয় অপারেশনের পর (২০১৬ সালের আগস্টে) আমার এক-দেড় বছর ভালো পারফরম্যান্স ছিল না। শেখার তো শেষ নেই। উন্নতি প্রতিদিন করা যায়। চেষ্টা করছি আরও উন্নতি করার জন্য। বিশ্বের আরও ভালো ভালো বোলারদের মতো কীভাবে হওয়া যায় তা চেষ্টা করছি। স্কিল, ফিটনেস বা আর যা আছে কোচের পরামর্শ নিয়ে তা শিখছি।”
কিছুদিন আগেই টাইগারদের বোলিং কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পেস বোলার এলন ডোনাল্ড। তার সঙ্গে এখনো খুব বেশি কাজ করার সুযোগ না পেলেও পরিকল্পনা ভালো লেগেছে ফিজের।
“সাদা বলে আমি মাত্র দুটি সেশন করেছি (ডোনাল্ডের সঙ্গে), বিশেষ করে টি–টোয়েন্টি নিয়ে। আর ওয়ানডের জন্য কাজ করেছি দক্ষিণ আফ্রিকায়। খুব বেশি দিন এখনো ওনাকে পাইনি। তবে কোচের পরিকল্পনাগুলো খুব ভালো লাগছে” যোগ করেন মোস্তাফিজুর রহমান।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে ৬৫ ম্যাচে ৮৭ উইকেট মোস্তাফিজের। এছাড়া ওয়ানডেতে ৭৪ ম্যাচে ফিজের ১৩১ উইকেট। সাদা পোশাকে অনেকদিন ধরেই নিয়মিত নন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চলমান সফরেই এই ফরম্যাটে ফিরেছেন তিনি। টেস্টে ১৫ ম্যাচে ৩১ উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান।
টেস্ট ক্রিকেটকে 'নতুন জীবন' দিতে চায় ইংল্যান্ড
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজে এখন পর্যন্ত ১-০ ব্যবধানে হেরে গেছে। বৃহস্পতিবার ( ৭ জুলাই) সিরিজ বাঁচাতে জিততেই হবে টাইগারদের। আর সেক্ষেত্রে মোস্তাফিজের বল হাতে জ্বলে ওঠা খুবই প্রয়োজন।
স্পোর্টসমেইল২৪/এসকেডি