২০১৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশ ডোমিনিকান রিপাবলিকে আঘাত হেনেছিল ক্যাটাগরি ফাইভের হ্যারিকেন মারিয়া। এই হ্যারিকেনের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়েছিল পুরো দেশটাই। বাদ যায়নি দেশটির জাতীয় স্টেডিয়াম উইন্ডসর পার্কও। এক মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পুননির্মিত এই স্টেডিয়ামে ১৮৭৫ দিন পর আবারও মাঠে ফিরেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। এই মাঠের অভিষেক দিনের মতো প্রত্যাবর্তনেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ।
২০১৭ সালে ১০-১৪ মার্চ পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওই ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ক্যারিবিয়ানদের হারের পর উইন্ডসর পার্কে আর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ গড়ায়নি। কোনো অন্তকোন্দল নয়, হ্যারিকেন মারিয়ার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় আন্তর্জাতিক ম্যাচ থেকে বঞ্চিত ছিল স্টেডিয়ামটি।
পর্যটন সমৃদ্ধ ডোমিনিকায় ক্রিকেটে ফেরাতে আগ্রহী ছিল দেশটির সরকার। এই উদ্দেশেই এক মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে নতুন করে গড়ে তোলা হয় স্টেডিয়ামটিকে। এরপরেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দেখতে অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে দ্বীপ দেশটির ক্রিকেট সমর্থকদের। তার কারণ অবশ্য কোভিড সমস্যা আর ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের ম্যাচ আয়োজনের স্লট পাওয়ার অপেক্ষা। বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি দিয়ে ঘুচলো উইন্ডসর পার্কের দীর্ঘদিনের অপেক্ষা।
২০০৭ সালে নির্মিত উইন্ডসর পার্কে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় ২০০৯ সালের ২৬ জুলাই। উইন্ডসর পার্কে অনুষ্ঠিত ওই ওয়ানডে ম্যাচে ক্যারিবিয়ানদের প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত এই মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে মোট চার ওয়ানডে। যার একটিতেও জিততে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
চার ওয়ানডে আয়োজন করা উইন্ডসর পার্কে হয়েছে পাঁচটি টেস্ট ম্যাচ। ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ভারত ম্যাচ দিয়ে টেস্ট আয়োজনের স্বীকৃতি পাওয়া উইন্ডসরে সর্বশেষ আয়োজিত খেলাটিও হয়েছিল সাদা পোশাকে। ২০১৭ সালে ওই ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। হ্যারিকেন মারিয়ার আগে এটাই ছিল উইন্ডসরে আয়োজিত শেষ ম্যাচ।
টেস্ট আয়োজনের স্বীকৃতি পাওয়ার তিন বছর পর ২০১৪ সালে প্রথম টি-টোয়েন্টি আয়োজন করে উইন্ডসর। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ২০১৪ সালেই উইন্ডসরে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্ট ম্যাচ খেলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
হ্যারিকেন মারিয়ার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া উইন্ডসরে দীর্ঘ ৫ বছর ১ মাস ১৮ দিন তথা ১৮৭৫ পর ক্রিকেট ফেরায় বেশ উচ্ছ্বসিত দেশটির জনগণও। এমনকি এই ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক মহলে নিজেদের পর্যটন খাতকে আবারও চাঙা করার স্বপ্ন দেখছে দেশটির পর্যটন কর্তৃপক্ষ ডিসকভার ডোমিনিকান অথরিটি (ডিডিএ)।
ডিডিএ মুখপাত্র কিম্বারলি কিং বলেন, “ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে যৌথভাবে ব্রডকাস্টারদের মাধ্যমে আমাদের দেশের সংস্কৃতি ও সুন্দর পর্যটনকে তুলে ধরা হবে। আশা করি, কোভিড মহামারির এই ক্রান্তিকাল পার করে অনেকেই আমাদের এখানে ঘুরতে আসবেন।”
ডোমিনিকার এই মাঠে শুধু ক্রিকেট নয় আয়োজন করে নানা ধরনের কনসার্ট কিংবা অন্যান্য অনুষ্ঠানও। ডোমিনিকার বড় অনেক অনুষ্ঠানের সাক্ষী হয়ে আছে এই স্টেডিয়াম।
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর