ইংল্যান্ডকে ওয়ানডে বিশ্বকাপ শিরোপা জেতানো অধিনায়ক ইয়ান মরগান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন। তার বিদায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)।
দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাট হাতে রান পাচ্ছিলেন না মরগান। এর পাশাপাশি চোটও তার নিয়মিত সঙ্গী হয়েছিল। এই দুই মিলিয়ে চরম দুঃসময় পার করা মরগান এবার সরাসরি ক্রিকেটকেই বিদায় জানিয়ে দিলেন।
মঙ্গলবার (২৮ জুন) ইসিবির এক বিবৃতিতে নিজের বিদায়ের কথা জানিয়ে দেন মরগান। সেখানে তিনি জানান, মূলত খারাপ সময় ও চোটের কথা বিবেচনাতে নিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন তিনি।
সোমবার (২৭ জুন) হঠাৎই গুঞ্জন উঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন ইয়ান মরগান। ধারণা করা হচ্ছিল হয়তো সপ্তাহের শেষদিকে নিজের বিদায় বার্তা দিবেন তিনি। তবে গুঞ্জন উঠার একদিন পরেই নিজের বিদায়ী বার্তাটা দিয়েছেন মরগান।
বিদায়ের সময়ে ইংল্যান্ডের হয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সংস্করণে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড ও সবচেয়ে বেশি রানের মাইলফলক নিজের করে নিয়েছেন তিনি। এছাড়াও অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে ইংল্যান্ডকে নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ডও তার দখলে।
২০১৫ সালে ইংল্যান্ডের ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ পান মরগান। পরের বিশ্বকাপেও অবশ্য নিজের ঝলক দেখিয়ে ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডকে প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপার স্বাদ পাইয়ে দেন তিনি। এই সময়ে ইংল্যান্ডকে ১২৬ ওয়ানডে ও ৭২ টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন মরগান।
নিজের বিদায়ী বার্তায় মরগান বলেন, “অনেক চিন্তা-ভাবনার পর আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চোট ও ফর্মহীনতায় থাকা আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইংল্যান্ডকে প্রতিনিধিত্ব করবো না।”
২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখা মরগ্যান তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন আয়ারল্যান্ডের হয়ে। এর চার বছর পর ২০১০ সালে দল পরিবর্তন করে ইংলিশদের ডেরায় নাম লেখান তিনি। দুই দলের হয়ে ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করা একমাত্র ক্রিকেটারও ইয়ান মরগান।
বিদায় বেলায় পরিবার, সতীর্থ ও কোচদেরকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন মরগান। তিনি বলেন, “আয়ারল্যান্ডের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শুরু থেকে ইংল্যান্ডের হয়ে বিশ্বকাপ জয় পর্যন্ত যারা আমাকে সমর্থন দিয়েছে সবাইকে ধন্যবাদ। আমার বাবা-মা, পরিবার ও স্ত্রীকে ধন্যবাদ। তারা আমাকে দারুণ সমর্থন জুগিয়েছেন। এছাড়াও আমার সাথে খেলা সতীর্থ ও কোচদেরকেও ধন্যবাদ। তাদের সমর্থন ছাড়া আমার এগিয়ে যাওয়াটা কঠিন ছিল।”
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের হয়ে ২৪৮ ওয়ানডে খেলেছিলেন মরগ্যান। এই সময়ে তার ব্যাট থেকে এসেছিল ৩৯.০৯ গড়ে ৭৭০১ রান। ব্যাট হাতে করেছিলেন ৪৭ হাফ সেঞ্চুরি ও ১৪ সেঞ্চুরি।
টি-টোয়েন্টিতেও তার ক্যারিয়ার ছিল উজ্জ্বল। ১১৫ ম্যাচে ১৩৬.৬৭ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ২৪৫৮ রান। সাদা পোশাকে ১২ ম্যাচ মরগান ৩০.৪৩ গড়ে করেছিলেন ৭৭০ রান।
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর