ব্যাট হাতে রান নেই অনেক দিন হলো। ফিটনেস নিয়েও খুব একটা স্বস্তিতে নেই ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগান। টানা দুই বছর দুইটি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে মরগ্যানের অধিনায়কত্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। মরগান নিজেও নিশ্চিত নন আদৌ তিনি ২০২৩ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে নেত্বতৃ দিবেন কিনা!
ক্রিকেটের জন্মদাতা বলা হয় ইংলিশদের, অথচ তারাই কিনা বিশ্বকাপ জিততে পারে না। ইয়ন মরগানের অধিনায়কত্বেই আজন্মের এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছে ইংল্যান্ড। ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতেছে ইংলিশরা।
তবে অতীতের সুখস্মৃতি নিয়ে বসে থাকলে তো আর চলবে না। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও সাজাতে হবে। ২০১৯ বিশ্বকাপের পরই ইংলিশ মিডিয়ায় আলোচনা হয়েছিল ভারতে অনুষ্ঠিত ২০২৩ বিশ্বকাপে মরগানই অধিনায়ক থাকবেন কিনা! তখন অবশ্য সে আলোচনা বেশি দূর গড়ায়নি।
তবে চার বছর যে অনেকটা সময় এটা বুঝিয়ে দিলেন স্বয়ং মরগান। করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে বাকি সব কিছুর মতো ক্রিকেটের সূচিও পালটে গেছে। টানা তিন বছর তিনটা বিশ্বকাপ আয়োজন করতে বাধ্য হয়েছে আইসিসি।
টানা দুই টেস্টে সর্বোচ্চ ডাকের রেকর্ড গড়লো বাংলাদেশ
২০২১ সালে আরব আমিরাতে হয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়া আবারও বসবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, এর পর ২০২৩ সালে ভারতে হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ।
ক্রিকেটে এত ব্যস্ত সূচীতে প্রায়ই সব ক্রিকেটারই ফিটনেসের সমস্যায় পড়েন। কেউ কেউ বিশ্রাম নিয়ে খেলেন, তবে অধিনায়কদের তো বিশ্রাম নেওয়ার খুব একটা সুযোগ হয় না। ইংলিশ অধিনায়ক মরগানের এতেই হয়েছে জ্বালা!
এমনিতেই ব্যাট হাতে যথেষ্ট বাজে সময় কাটাচ্ছেন। তার উপর যোগ হয়েছে ইনজুরি ও ফিটনেস সমস্যা। অথচ ইংল্যান্ডের সামনে ঠাসা সূচি। টানা দুই বছর দুইটা বিশ্বকাপ।
দুই বিশ্বকাপেই কি ইংল্যান্ডকে নেত্বতৃ দিতে পারবেন মরগান! ইংলিশ অধিনায়ক অবশ্য নিজেও নিশ্চিত নন। তিনি বরং আগে অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মনোযোগ দিতে চান।
মরগান বলেন, “এটা (২০২৩ বিশ্বকাপ) অনেক দূরের ব্যাপার। আমাকে প্রথমে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যেতে হবে। এরপর দলে আমার অবদান, ফিটনেসের অবস্থা দেখবো (২০২৩ বিশ্বকাপে অধিনায়কত্ব করবো কিনা)।”
ইংল্যান্ডের জার্সিতে শেষ দশ টি-টোয়েন্টিতে মরগানের কোনো অর্ধশতক নেই, সর্বোচ্চ ৪০। ১০ ম্যাচ মিলে রান করেছেন মাত্র ১৩৫! অফ ফর্মের সাথে যোগ হয়েছে ইনজুরি ও ফিটনেস।
চলতি বছরের জানুয়ারিয়েতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ইনজুরিতে পড়েন মরগান। তারপর থেকেই মাঠে বাইরে তিনি। এসব বিবেচনায় গ্রীষ্মকালীন সূচিতে বেছে বেছে ম্যাচ খেলার কথা জানিয়েছেন মরগান। তবে সবকিছু ঠিক থাকলে শুক্রবার (১৭ মে) নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে মাঠে ফিরবেন তিনি
বলেন, “আমাদের কিছু ম্যাচ টানা (পরপর দুইদিন) খেলতে হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজে আমি এভাবে খেলেই ইনজুরিতে পড়েছিলাম। শনিবার ও রোববার খেলার পর মঙ্গলবার ইনজুরি আক্রান্ত হই। এটাই হচ্ছে টানা খেলার ফল। তাই, আসন্ন গ্রীষ্মে আমি হয়তো ইংল্যান্ডের হয়ে সব ম্যাচ খেলবো না।“
২০১৪ সালে ইংলিশদের অধিনায়ক হন ইয়ন মরগান। তার অধিনায়কত্বে দারুণ সাফল্য পেয়েছে ইংলিশরা। ওয়ানডেতে ১২৪ ম্যাচে ইংল্যান্ডকে নেত্বতৃ দিয়েছেন মরগান, জয় ৭৪ ম্যাচে, হার ৪০ ম্যাচে। অধিনায়ক হিসেবে ইংলিশদের জার্সিতে মরগানের জয়ের হার ৬৪ শতাংশ। তার ঝুলিতে রয়েছে মহামূল্যান বিশ্বকাপ শিরোপা।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মরগানের অধীনে ৭২ ম্যাচে মাঠে নেমেছে ইংল্যান্ড। এ সময়ে ৪২ জয়ের বিপরীতে হার মাত্র ২৭টি ম্যাচে। টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে মরগানের জয়ের হার ৬০ শতাংশ।
স্পোর্টসমেইল২৪/এসকেডি