আন্তর্জাতিক কিংবা ঘরোয়া ক্রিকেট, যেই খেলা হোক না কেন, সব সময়ই বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রাধান্য মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম। প্রতিটি সিরিজেই অন্তত পক্ষে একটি ম্যাচের ভেন্যু হিসেবে ব্যবহৃত হয় মিরপুরের হোম অব ক্রিকেট। শুধু কি ম্যাচ? ক্রিকেটারদের অনুশীলনের কেন্দ্রবিন্দুও এই মিরপুর। খেলা আর অনুশীলনের চাপে পর্যুদস্ত মিরপুরের উইকেট নিয়ে অভিযোগের কোনো শেষ নেই। এবার বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটির প্রধান জানালেন, ‘স্বয়ং বিধাতাও’ মিরপুরের উইকেট ঠিক করতে পারবেন না!
প্রতিটি আন্তর্জাতিক সিরিজ কিংবা বড় কোনো টুর্নামেন্টের শুরুতেই মিরপুরের উইকেট কেমন হবে তা নিয়ে ওঠে প্রশ্ন। এমনকি টুর্নামেন্ট শেষ হলে উইকেট নিয়ে থাকে হাজারো অভিযোগ। শুধু সমর্থক কিংবা সংবাদমাধ্যম নয়, উইকেট নিয়ে ক্রিকেটারদেরও থাকে হাজারো অভিযোগ। আর প্রতিটি অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন মিরপুরের কিউরেটর গামিনি ডি সিলভা।
নতুন আরও একটি সিরিজ শুরুর আগে সোমবার (৯ মে) হঠাৎই মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আসেন বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুব আনাম। মাঠ পরিদর্শন শেষে কথা বলেন সংবাদমাধ্যমের সাথে। ভালো উইকেট তৈরি করতে না পারার দায়ভার নিজেদের কাঁধে নিয়ে কিউরেটর গামিনি ডি সিলভাকে দায়মুক্তি দিলেন মাহাবুব আনাম।
সেখানেই তিনি জানান, ‘স্বয়ং বিধাতাও’ মিরপুরের উইকেট ঠিক করতে পারবেন না। বলেন, “এখানে স্বয়ং বিধাতা এসেও আমার মনে হয় না কোনোভাবে (উইকেট ভালো) করা সম্ভব। দায়টা আমি নেব, বোর্ড হিসেবে আমাদের (দায়ভার) নেওয়া উচিত।”
তিনি বলেন, “আপনারা যদি কাউকে (গামিনী) ব্যক্তিগত আক্রোশ করেন আমার মনে হয় এটা খুব অন্যায় হবে। কারণ এই মাঠে যে জয়গুলো আছে তার মালাটাতো অন্য কাউকে পরাতে পারি। কিন্তু মালাটাতো আমরা বোর্ডই নিই।”
মিরপুরে অতিরিক্ত খেলার চাপকে দায়ী করে মাহবুব আনামের ভাষ্য, “আমি কাউকে নিয়ে আলাদাভাবে মন্তব্য করবো না। আপনারা (সাংবাদিক) খালি মেপে দেখবেন, মিরপুরের মতো স্টেডিয়ামে ৬০ দিনের বেশি খেলা উচিত নয়, সেখানে জানুয়ারি থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ১২০ দিন খেলেছি আমরা।”
মিরপুরের উইকেট তৈরির ব্যর্থতা নিজেদের কাঁধে নেওয়ার পাশাপাশি সুখবরও দিয়েছেন মাহাবুব আনাম। জানিয়েছেন, মিরপুরে বাড়ানো হবে উইকেট সংখ্যা। এছাড়াও সেন্টার উইকেটের উপর চাপ কমাতে অনুশীলনে মাঠে ব্যবহার করা হবে ফ্লাডলাইট।
এই বিষয়ে মাহাবুব আনাম বলেন, “আগেই বলেছিলাম এই মৌসুমের পরে বিভিন্ন মাঠের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে হাত দেবো। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা মিরপুরে অনুশীলনের জন্য সেন্টারে চারটা বাড়তি উইকেট তৈরি করতে যাচ্ছি। এই সিরিজটা শেষ হওয়ার পরপরই কাজে হাত দেবো।”
কতটি অতিরিক্ত উইকেট বানানো হবে, সেই তথ্যও জানিয়ে দিয়েছেন বিসিবির এই পরিচালক। বলেন, “এখানে বিভিন্ন সময় জাতীয় দল ও অন্যান্য দল অনুশীলন করে থাকে। তাতে আমাদের সেন্টারে যে ৮টি উইকেট আছে সেগুলোর ওপর অনেক চাপ পড়ে। তাই ঘরোয়া ক্রিকেটে আমরা ভালো উইকেট দিতে পারি না। তাই দুই দিকে ১৬ ফিট করে আরও ৪টা উইকেট আমরা করবো। যেটা অনুশীলনের জন্য ব্যবহৃত হবে।”
এছাড়াও ঢাকা এবং চট্টগ্রামে রাতে অনুশীলনের জন্য উইকেটগুলোকে ফ্লাডলাইটের আলোর নিচে আনা হবে বলেও জানিয়েছেন মাহাবুব আনাম। এতে করে সেন্টার উইকেটে চাপ কমবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বলেন, “রাতের আলোয় অনুশীলনের জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রামের আউটডোর অনুশীলন উইকেট আছে সেগুলো আমরা লাইটের নিচে আনতে যাচ্ছি। তাতে করে ভবিষ্যতে আর আলোর নিচে অনুশীলন করতে সেন্টার উইকেট দরকার হবে না।”
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর