ক্রিকেট মাঠে ক্রিকেটাররা লড়াই করেন ব্যাট-বল নিয়ে। ব্যাট-বলের এই লড়াইয়ের পাশাপাশি প্রতিপক্ষের সাথে মানসিক লড়াইও করতে হয় ক্রিকেটারদের। আর এই কারণে দরকার মানসিকভাবে ফিট থাকা। দেশে শীর্ষ কিছু ক্রিকেটারদের মানসিকভাবে সুস্থ রাখার কাজটিই করে যাচ্ছেন মাইন্ড ট্রেনার সাবিত রায়হান। মাঠে নিজেদেরকে ফিরে পেতে তার শরণাপন্ন হচ্ছে দেশের শীর্ষ ক্রিকেটাররা।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পেস বোলিং আক্রমণের অন্যতম ভরসা তাসকিন আহমেদ। চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে রান ফোয়ারা তৈরি করে আলোচনায় আছেন ব্যাটার এনামুল হক বিজয়। দুইজনই নিজেদেরকে মানসিক ভাবে প্রস্তুত করেছেন এই সাবিত রায়হানের কল্যাণেই। শুধু কি তাসকিন-বিজয়, তার শরণাপন্ন হয়েছেন নুরুল হাসান সোহান, সাব্বির রহমান এবং সৌম্য সরকারের মতো ক্রিকেটাররাও।
এক সময় পারফর্ম করতে না পারায় জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। এরপরেই নিজের অনুশীলনে আমূল পরিবর্তন আনেন এই পেসার। মাঠ এবং মাঠের বাইরেও নিজেকে প্রস্তুত করার চেষ্টা চালান। আর এই পরিশ্রমের ফলাফলও পেয়েছেন তিনি। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন দেশ সেরা পেসার হিসেবে।
মাইন্ড ট্রেনার সাবিত রায়হানের কাছে গিয়ে নিজেকে পূর্ণাঙ্গভাবে গড়ে তুলতে পেরেছেন সেটা স্বীকার করেছেন তিনি। বলেন, “সাবিত (রায়হান) ভাইয়ের সাথে আমার যোগাযোগ অনেক দিনের । উনি আমার ব্যাপারগুলো ভালো বোঝেন। আমারও মনে হয় যে উনার সাথে বসলে, কথা বললে হালকা লাগে আমার।”
সাবিত রায়হানের মতে ক্রিকেটারদের পারফর্মেন্সের সাথে মানসিকতার সমন্বয় ঘটাতেই তিনি কাজ করেছেন। তিনি বলেন, “একদিন একজন পেশাদার মানুষ সফল হবেন, আরেকদিন গড়পড়তা হবে। এটা দিয়ে আমার কাজের পুরোপুরি মূল্যায়নটা হবে না। এটা শুধু খেলার মাঠে প্রভাব ফেলে তা নয়, এটা একটা মানুষকে ভাবতে সহায়তা করে। অনেক সময়ই দেখা যায় আমরা স্থির থাকতে পারি না কোনও একটা বিষয়ে চিন্তা করতে গিয়ে।”
তাসকিন-বিজয়ের পাশাপাশি সাবিত রায়হানের কাছে মাইন্ড ট্রেনিং করেছেন সাব্বির রহমান, নুরুল হাসান সোহান এবং সৌম্য সরকার। মাইন্ড ট্রেনিংয়ের পর সাব্বির জানান তিনি ফোকাসটা রাখতে পারছেন।
পেসার তাসকিন আহমেদও মনে করেন মাইন্ড ট্রেনিং নিজের লক্ষ্য রাখতে সাহায্য করছেন। তিনি বলেন, “বোলিং, ব্যাটিং বা ফিল্ডিংটা সবাই কম বেশি পারেন। কিন্তু আমার চেষ্টা ছিল নিজের লক্ষ্যটা ঠিক রাখা। তবে অনেক সময় মন স্থির রাখা কঠিন হয়ে যায়।”
ক্রিকেটকে খেলাকে বলা হয় ‘মেন্টাল গেম’। ব্যাট-বলের লড়াইয়ের সাথে সাথে প্রতিপক্ষের সাথে মানসিকভাবেও লড়তে হয়। এই সময় ক্রিকেটারদের মানসিকভাবে স্থির থাকা কঠিন হয়ে যায় বলে মনে করেন ক্রিকেট গুরু নাজমুল আবেদীন ফাহিম।
তিনি বলেন, “খেলার সময় লক্ষ্য ঠিক রাখাটা কঠিন হয়ে যায়। ব্যাটারদের পুরো মনোযোগ বলের ওপর দেয়া দরকার হলেও মিডিয়া, ক্রাউড, খারাপ সময়, ঠিক আগের বলে ব্যর্থ হওয়া, সামগ্রিকভাবে ব্যর্থ হলে কী হবে - এসব ইস্যুও মনে ঘুরতে থাকে।”
এই সময়ে মাইন্ড ট্রেনিং ক্রিকেটারদের সাহায্য করতে পারে বলেও মনে করেন তিনি। বলেন, “একটা জিনিস পরিষ্কার, ক্রিকেটাররা চাইছে ভালো পারফর্ম করতে আর তা করতে তারা সহায়তাও নিচ্ছে। এটা ভালো ব্যাপার।”
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর