ইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বি; তিন ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে মোট রান সংখ্যা ছিল এক। তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাল্টে দিয়েছেন হিসেব-নিকেস। ব্যাট হাতে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশত। সাকিব আল হাসানের সাথে গড়েছেন ১১৫ রানের জুটি। নিজের এমন ব্যাটিং নিয়ে রাব্বির মন্তব্য, ‘দেশের হয়ে খেলা এবং পারফর্ম করা সত্যিই দুর্দান্ত বিষয়।’
চট্টগ্রামে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল টাইগার ব্যাটার ইয়াসির আলি চৌধরী রাব্বির। আগেই টেস্ট অভিষেক হওয়া রাব্বি রাঙাতে পারেননি ওয়ানডে অভিষেক। অভিষেক ম্যাচে সাজঘরে ফিরেছিলেন খালি হাতে।
দ্বিতীয় ম্যাচে একাদশে থাকলেও ব্যাট করার সুযোগ আসেনি রাব্বির। তার আগেই লিটন দাসের সেঞ্চুরি এবং মুশফিকুর রহিমের ৮৬ রানের ইনিংসে ৩০৬ রানের সংগ্রহ গড়েছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে ৮৮ রানের জয় তুলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ।
সিরিজ জয় নিশ্চিত করার পর তৃতীয় ম্যাচেও রাব্বির উপর আস্থা রেখেছিলেন অধিনায়ক এবং টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে আবারও হতাশ করেছিলেন রাব্বি। দলীয় ১৯২ রানে গুটিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের ওই ম্যাচে ৭ বল খেলে করেছিলেন ১ রান। অভিষেক সিরিজে রাব্বি ওটাই ছিল একমাত্র সংগ্রহ।
তিন ম্যাচ সিরিজে দুইবার ব্যাট করে মাত্র ১ রান করলেও অধিনায়ক ও টিম ম্যানেজমেন্ট তার উপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে রাখা হয়েছে তাকে। অভিষেক সিরিজে হতাশ করার রাব্বি এবার ঠিক প্রতিদান দিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের প্রথম ম্যাচেই তুলে নিয়েছে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশত রানের ইনিংস।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে রাব্বি যখন ব্যাট হাতে মাঠে নামেন তখন বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ১২৪ রান। ২৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মুশফিক সাজঘরে ফিরলে সাকিব আল হাসানের সাথে জুটি গড়েন রাব্বি। সাকিব-রাব্বি সমান তালে দক্ষিণ আফ্রিকা বোলারদের শাসন করে গেছেন। ফলে তাদের দু'জনের জুটি গিয়ে থামে ১১৫ রানে।
নিজের ব্যাটিং নিয়ে রাব্বি বলেছেন, “দেশের হয়ে খেলা এবং পারফর্ম করা সত্যিই দুর্দান্ত বিষয়। তামিম ভাই এবং লিটন কঠিন অংশ খেলে দিয়েছিলেন। বলের উজ্জ্বলতা চলে গিয়েছিল এবং উইকেটও ভালো লাগছিল।”
ইনিংসের ৪২তম ওভারের পঞ্চম বলে ব্যক্তিগত ৭৭ রানে সাকিব আউট হলে রাব্বির সাথে ১১৫ রানের জুটি ভাঙে। সাকিব চলে যাওয়ার আগের বলেই ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি স্পর্শ করেন রাব্বি। তবে এর আর এগুতে পারেননি তিনি। রাবাদার করা ৪৩তম ওভারের প্রথম বলেই সাজঘরে ফিরেন তিনি।
দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের সাথে ব্যাটিং করার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে রাব্বি বলেন, “সাকিব ভাই যেভাবে ব্যাটিং করেছেন, তা সত্যিই আমার জন্য সহজ করে দিয়েছিলেন।”
নিজের ব্যাটিয়ে রাব্বি আরও বলেন, “এটা স্মরণীয় ইনিংস। ভাষা হারিয়ে ফেলার অনুভূতি। আমি অবশ্য আবেগী নই। আমার মতে, ফিফটি করেছি, ঠিক আছে, এই তো।”
ম্যাচ শেষে অধিনায়ক তামিম ইকবালও রাব্বির ব্যাটিংয়ের প্রশংসা করেছেন। বলেন, “এটা আমাদের জন্য অনেক বড় জয়। যেভাবে দল খেলেছে তার জন্য আমি গর্বিত। ইয়াসিরের ইনিংস ছিল খুবই স্পেশাল। এর সঙ্গে ছোট ছোট কিছু ব্যাপারও ছিল। জয়ে সব কিছুরই ভূমিকা ছিল।”
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস