কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে দুই মৌসুম স্থগিত থাকার পর আবারও মাঠে গড়াচ্ছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল)। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এবারের লিগের নামকরণ করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ’। তবে স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের নামসহ টুর্নামেন্টের অফিশিয়াল নাম হলো- ‘বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ ২০২১-২২ স্পন্সর্ড বাই ওয়ালটন।’
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট দিয়ে শুরু হলেও করোনার কারণে গত বছর শেষ পর্যন্ত স্থগিত হয়ে যায় ডিপিএল। তার আগে সর্বশেষ ২০১৯-২০ লিগটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ওয়ানডে ফরম্যাটে। এবারও ৫০ ওভারের ফরম্যাটে খেলা হবে। লিগ লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা পাওয়ার পর থেকে এটি হবে সপ্তম ডিপিএল।
লিগের নিয়মিত দল প্রাইম দোলেশ্বর হঠাৎই সরে দাঁড়ানোর ফলে এবার লিগটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে ১১ দলে। মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) থেকে শুরু হওয়া এ ডিপিএলে ১১টি দল নিয়েই টুর্নামেন্ট আয়োজন করবে ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস (সিসিডিএম)। সোমবার (১৪ মার্চ) ট্রফি উন্মোচনে ১১ দলের অধিনায়কই উপস্থিত ছিলেন।
ট্রফি উন্মোচ শেষে সংবাদ মাধ্যমের কথা বলেন ১১ দলের অধিনায়ক সবাই। জানান নিজের দল গঠন ও প্রত্যাশা নিয়ে। তাদের সবার প্রত্যাশা ভালো কিছু করার, দলকে চ্যাম্পিয়নের কাতারে নিয়ে যাওয়ার।
নাঈম ইসলাম, অধিনায়ক- লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ
প্রিমিয়ার লিগের লিজেন্ডস অব রুপগঞ্জের টিম যথেষ্ট ভালো হয়েছে। অনেক ভারসাম্য একটা টিম। প্রতিটা দলেরই প্রত্যাশা থাকে শিরোপা জয়ে, আমাদেরও বিকল্প কিছু নেই। আমরাও শিরোপা জিততে চাই। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে শিরোপা। তবে আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ যেতে চাই। প্রতিটা ম্যাচ ভালোভাবে খেলে, প্রতিটা ম্যাচ জিতে এবং ভালো ক্রিকেট খেলে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।
অলক কাপালি, অধিনায়ক- প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব
আমাদের দলে ২৭ জন ক্রিকেটার আছে। টিম কম্বিনেশন বর্তমানে ভালো। কয়েক দিন অনুশীলন করছি, চেষ্টা করতেছি ঘাটতিগুলো কাটিয়ে ওঠার। আশা করি, আমাদের যে দল, যেভাবে আমরা অনুশীলন করেছি ভালো করবো, কোন সমস্যা নেই।
মোহাম্মদ আশরাফুল, অধিনায়ক- ব্রাদার্স ইউনিয়ন
টিমটা আমাদের ভালোই হয়েছে আশা করি। ব্রাদার্স ইউনিয়ন শেষ ১২-১৩ বছর সুপার লিগ খেলেনি। আমার ব্যক্তিগত লক্ষ্য, টিমের লক্ষ্য আমরা সুপার লিগ খেলতে চাই। সবাই চ্যাম্পিয়ন হতে চায়, আমাদের ফার্স্ট লক্ষ্য টপ সিক্সের একটা টিম হতে চাই। ওভারঅল বললে আমাদের একটা ভারসাম্যপূর্ণ টিম হয়েছে।
নাদিফ চৌধুরী, অধিনায়ক-খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি
আমাদের দলটি তরুণ এবং অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া। কিছু তরুণ ক্রিকেটার আছে যারা এবার জাতীয় লিগ ও বিসিএলে ভালো করেছে। আমার মনে হয়, দলটি সব দিক দিয়েই ভারসাম্যপূর্ণ।
আমাদের চায়নাম্যান আছে, লেগ স্পিনার আছে, তরুণ কিছু পেস বোলার আছে। হয়তো বড় কোনো নাম নেই, তবে আমরা কয়েকটা অনুশীলন ম্যাচ খেললাম, একসঙ্গে অনুশীলন করেছি, আমার কাছে ভারসাম্যপূর্ণ মনে হয়েছে। ক্রিকেট খেলা তো মাঠের পারফর্মের বিষয়। আশা করি আমাদের টিম ভালো করবে।
মোসাদ্দেক হোসেন, অধিনায়ক-আবাহনী লিমিটেড
শেষ তিন বছর আমরা চ্যাম্পিয়ন; অবশ্যই এ বছরও আমরা এভাবেই চিন্তা করছি। চ্যাম্পিয়নশিপের দিকে আমরা এগোবো। প্রস্তুতি বা আলোচনা যা দলের মধ্যে হয়েছে, এখন পর্যন্ত পজিটিভ, ওখানেই আছি আমরা। এখন পর্যন্ত আমরা এভাবেই এগোচ্ছি।
আকবর আলী, অধিনায়ক-গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স
আমাদের প্রথম লক্ষ্য প্রত্যেকটা ম্যাচ ধরে ধরে এগোনো। লম্বা একটা টুর্নামেন্ট চেষ্টা করবো... এখন যেহেতু প্রথম দুই রাউন্ডের ফিক্সার পেয়েছি, তো প্রথম ম্যাচের দিকেই নজর রাখছি। আমরা এত বেশি প্রত্যাশা রাখছি না। যেটা বললাম, আমাদের প্রথম লক্ষ্য থাকবে যেন ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে পারি এবং সুপার লিগটা খেলতে পারি।
শুভাগত হোম, অধিনায়ক- মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব
অবশ্যই শক্তিশালী দল আমাদের। যারা আছে তারা অনেকদিন ধরে খেলছে এবং অভিজ্ঞ। অবশ্যই আমরা চেষ্টা করবো ভালো শুরু করে টুর্নামেন্টের ‘টাইটেলটা ধরে’ রাখার। প্রিমিয়ার লিগে চাপ থাকবেই, যেহেতু সাপোর্টাররা আছে। চেষ্টা করবো সাপোর্টারদের আশাটা পূর্ণ করতে বা শিরোপা জিততে।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা মিস করবো যারা জাতীয় দলে আছেন। হয়তো শেষের দিকে তাদেরকে আমরা পাবো। তবে এখন যারা আছে, ভারসাম্যপূর্ণ একটা দল। শুরু থেকে চেষ্টা থাকবে ভালো কিছু করার এবং ওরা (জাতীয় দলের খেলোয়াড়) আসলে যেন আরও বেটার কিছু হয়।
মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, অধিনায়ক- শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব
দল হিসেবে আমরা খুবই আত্মবিশ্বাসী। আমদের সবাই তরুণ। আমরা খুবই আশাবাদী যে, দল হিসেবে ভালো কিছু করবো টুর্নামেন্টে। এখন যদি এটা (সুপার লিগ) চিন্তা না করে ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলি ওটা আরও ভালো হবে।
সৈকত আলি, শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব
আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো হয়েছে। দলে তরুণ খেলোয়াড় আছে, অভিজ্ঞ ক্রিকেটারও আছে। দলে তরুণ ও অভিজ্ঞ মিলিয়ে ভালো কম্বিনেশন আছে। লক্ষ্য অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হওয়া। প্রতিটি খেলোয়াড় ওভাবেই মানসিকভাবে তৈরি হচ্ছে। এখন মাঠে যারা ভালো খেলবে তারাই জিতবে। তবে আমাদের লক্ষ্য হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হওয়াকেই রাখছি।
জাওয়াদ মোহাম্মদ, সিটি ক্লাব
দীর্ঘ ১৩ বছর পর প্রিমিয়ার লিগে আবারও আসছে সিটি ক্লাব। দলটা মূলত তারুণ্য নির্ভর। অপরিচিত ক্রিকেটারই বেশি, পরিচিত মুখ কম। প্রথম বিভাগ ও প্রিমিয়ার লিগের তরুণ কিছু ক্রিকেটার নিয়েই দলটা গঠন করা হয়েছে। আমরা আশাবাদী, ভালো কিছু করবো।
প্রত্যেক খেলোয়াড়েরই ইচ্ছে থাকে বড় খেলোয়াড়দের সাথে খেলার এবং তাদের কাছ থেকে কিছু শেখার, অভিজ্ঞতা নেওয়ার। আমাদের দলের যতগুলো খেলোয়াড় আছি, সবার এটাই বেশি এক্সাইটমেন্ট যে, আমরা বড় খেলোয়ায়ড়দের সাথে খেলবো। তাদের কাছ থেকে কিছু শিখবো। আমরাও চাইবো আমাদের সেরা খেলাটা মাঠে দেখানোর।
মার্শাল আইয়ুব, অধিনায়ক- রূপগঞ্জ টাইগার্স
আমাদের দলে ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফর্মাররা আছে। যাদের অভিজ্ঞতা অনেক। তাদের নিয়ে আমার প্রত্যাশা, আমরা চ্যাম্পিয়ন হবো। আমরা সুপার লিগের লক্ষ্যে খেলা শুরু করবো, এরপর চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য।
আমাদের দলে মূল শক্তি ব্যাটিং। স্পিনে এনামুল আছে। এছাড়া নাসুম যোগ দিলে পরিপূর্ণ হবে। পেস বিভাগও আমাদের ভালো। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের কম্বিনেশনটা খুব ভালো। এখন মাঠে ভালো খেলতে পারলে হলো।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস