দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান দীর্ঘদিন ধরেই টেস্ট সিরিজে অনিয়মিত। দেশের বাইরে টেস্ট সিরিজ আসলেই নানা কারণে ছুটি নিয়ে থাকেন তিনি। সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকায় আসন্ন সিরিজ থেকে ছুটি নিয়েছেন। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ২০২২ সালের কেন্দ্রীয় চুক্তি সাকিবকে তিন ফরম্যাটেই রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করায় অনেকটা মেজাজ হারিয়েই উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দেন নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) ২০২২ সালের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে তিন ফরম্যাটে মোট ২১ জনের তালিকা প্রকাশ করে বিসিবি। মোট ২১ জনের মধ্যে পাঁচজন রয়েছেন যারা তিন ফরম্যাটেই চুক্তিবদ্ধ। পাঁচজনের মধ্যে একজন হলেন সাকিব আল হাসান।
২০২১ সাল থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট দল মোট ৯টি টেস্ট ম্যাচে খেলেছে। যেখানে সাকিব খেলেছেন মাত্র ৩টি টেস্ট। বাকি ৬টি টেস্টে ছিলেন না দেশসেরা এ অলরাউন্ডার। সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ওয়ানডের পর দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে তাকে রাখা হলেও শারীরিক ও মানসিক সমস্যার কথা বলে পুরো সফর থেকেই ছুটি নিয়েছেন তিনি।
টেস্ট সিরিজে সাকিব আল হাসানের এমন অনিয়মিত খেলার বিষয়টি নিয়ে বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনসহ বোর্ড সংশ্লিষ্ট অনেকেই নাখোশ। বিসিবি সভাপতি নানা সময় বলে আসছেন, ‘যারা যে ফরম্যাটে খেলবে না তাকে সেই ফরম্যাটের চুক্তিতে রাখা হবে না। আর চুক্তিতে থাকলে অবশ্যই তাকে খেলতে হবে।’
তবে সর্বশেষ ২০২২ সালের চুক্তিতে টেস্ট সিরিজে অনিয়মিত থাকার পরও সাকিব আল হাসানকে রাখার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্রধান নির্বাচকের পাশে থাকা নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক হঠাৎই উল্টো প্রশ্ন করে বসেন।
চুক্তির বিষয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘সারা পৃথিবীতে দেখা যায় সাধারণত যারা নিয়মিত খেলে তাদরকেই কেন্দ্রীয় চুক্তিতে রাখা হয়। তবে সাকিব গত কয়েক বছর ধরেই অনিয়মিত, তাকে এভাবে রাখার ফলে যারা নিয়মিত খেলে তাদেরকে নিরুৎসাহিত করা হয় কি-না?
প্রধান নির্বাচক উত্তর দেওয়ার আগেই রাজ্জাক বলেন, “আপনি (সাংবাদিক) যদি নির্বাচক হতেন তাহলে কী করতেন? সাকিবকে কি বাদ দিয়ে দিতেন?”
পরে অবশ্য প্রধান নির্বাচক বলেন, “তিন ফরম্যাটেই ২০২২ সালে প্রচুর খেলা আছে। সেই হিসেবে আমাদের অনেকগুলো খেলোয়াড় লাগবে এবং সেরা খেলোয়াড়কে (সাকিব) আমরা সবসময় তিন ফরম্যাটেই চাই। ওই চিন্তা করেই কিন্তু... এছাড়া ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বোর্ড যেহেতু ওকে (সাকিব) রেস্ট দিয়েছে। এরপর আবার ও ফিরে আসবে। আশা করি ও তিন ফরম্যাটেই খেলবে।”
বিষয়টি তখনই শেষ হয়ে গেলে কোন কথা ছিল না। সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রশ্ন করা সাংবাদিককে ডেকে নিয়ে কথা বলেন নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক। সে সময় তিনি আবারও জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনি হলে (নির্বাচক) কি করতেন? এবং সাংবাদিকের উত্তর শুনে রাজ্জাক বলেন, ‘সাহসী উত্তর দিয়েছেন, আপনার অনেক সাহস।’
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে সাকিবের সাথে কথা হয়েছে কি-না বা সাকিব টেস্ট খেলা চালিয়ে যেতে পারবে কি-না জানতে চাইলে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “এখনো সাকিবের সাথে আমাদের কথা হয়নি। যেহেতু হয়নি ফট করে একটা কথা বলে দিলে দেওয়া ঠিক না। কথা হলে অবশ্যই আপনারা জানতে পারবেন।”
তবে দল দেওয়ার পর সাকিবের খেলতে না চাওয়াটা খারাপ লাগে বলে জানান প্রধান নির্বাচক। নান্নু বলেন, “অবশ্যই (খারাপ লাগে)। কারণ, একটা প্ল্যান করে দল দেওয়া হয়। তখন খেলতে না চাওয়াটা একটা ব্যাকফায়ার হয়। কেউ খেলতে না চাইলে তো জোর করে খেলানো যাবে না। না থাকলে বাদ দিয়েই সেরাটা নিতে হবে।”
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস