সীমিত ওভারের ক্রিকেটে মানানসই নন লিটন দাস! সমালোচকদের এই কথা যেন প্রমাণই করে ফেলেছিলেন লিটন। কিন্তু লিটন সেই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে মাঠে আবারও নিজের সামর্থ্যের দেখিয়েছেন। প্রমাণ করেছেন, নিজের দিনে তিনি একাই একশ! শুধু তাই নয়, নিয়মিতই ভালো খেলতে পারেন এটাও প্রমাণ করেছেন লিটন।
সর্বশেষ ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ব্যর্থতার দায়ে সীমিত ওভারের ফরম্যাট থেকে বাদ পড়েছিলেন লিটন। ক্রিকেটের বুনিয়াদি ফরম্যাট টেস্টে বরাবরই সফল। হাজারো ক্রিকেট সমর্থকের চাওয়া ছিলেন বুনিয়াদি ফরম্যাটের সেই ছন্দ যেন সীমিত ওভারের ম্যাচেও নিয়ে আসেন। সমর্থকদের সেই চাওয়া পূরণ করেছেন লিটন। ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টিতেও দেখিয়েছেন নিজের ব্যাটিং জাদু।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর সীমিত ওভারের ক্রিকেট থেকে বাদ পড়লেও পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে জানান দিয়েছিলেন হারিয়ে যাননি। পাকিস্তানের বিপক্ষের সেই ধারাবাহিকতা ছিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ৮ম আসরেও। এই ছন্দই তাকে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ফিরিয়েছে।
সীমিত ওভারের ফিরে অবশ্য শুরুর দিনেই সেই হতাশাতেই আটকে ছিলেন। চট্টগ্রামে আফগানদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ফিরেছিলেন ১ রান করেই। দ্বিতীয় ম্যাচেই বদলে গেল চিত্র! দ্বিতীয় ওয়ানডেতে পুরো আলো নিজের দিকে টেনে নিয়েছিলেন লিটন।
দ্বিতীয় ম্যাচে করেছিলেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নিজের পঞ্চম শতক। এ ম্যাচের পর লিটন নিজেকে বদলে ফেলার গল্পটা জানিয়েছিলেন।
বলেছিলেন, ‘নিজের উইকেটে মূল্য বুঝতে পেরেছি।’ এই কথাই প্রমাণ করে দেয়, নিজেকে বুঝতে পেরেছেন। আর এতেই হাতে ধরা দিচ্ছে সাফল্য।
তৃতীয় ম্যাচেও হতে পারতেন নায়ক। তবে সে ম্যাচে আলো নিজের দিকে কেড়েছিলেন আফগান ব্যাটার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। তার ব্যাটে ভর করে ম্যাচ জিতে নিয়েছিল রশিদ-নবীরা। অবশ্য এর আগে তার ব্যাটে ভর করেই ঘুরেছিলো বাংলাদেশের রানের চাকা। ওইদিন নিজের পঞ্চাশতম ওয়ানডেতে পেতে পারতেন সেঞ্চুরি। তবে ৮৬ রানে মোহাম্মদ নবীর ফাঁদে না পড়লে হয়তো বাংলাদেশের নায়ক হতেন তিনিই।
ওয়ানডের সাফল্যের পর টি-টোয়েন্টিতে কেমন করবেন লিটন? সেই প্রশ্নই ঘুরছিল সবার মনে। সবার সেই সংশয় কাটিয়ে দিয়েছেন লিটন। বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) আফগানদের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে নেমেই সফরকারী বোলারদের উপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন। এদিন তার সামনে সুযোগ ছিল টি-টোয়েন্টিতে নিজের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। সেটা পারেননি , কিন্তু ঠিকই তুলে নিয়েছিলেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের পঞ্চম অর্ধশতক। থেমেছেন ৬০ রানে।
লিটনের এই ইনিংসে ছিল চারটি বাউন্ডারি আর দুইটি ওভার বাউন্ডারি। আর ৬০ রানের ইনিংস খেলতে খেলেছিলেন ৪৪ বল। আর স্ট্রাইক রেট ছিলো ঠিক টি-টোয়েন্টি স্বরুপ- ১৩৬ দশমিক ৩৬! এটাই প্রমাণ করে নিজেকে বদলে ফেলেই সফল লিটন।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে লিটন মোহতে আবদ্ধ হয়ে পড়েছিল মিরপুরের গ্যালারি! পরবর্তীতে লিটনের মোহতেই যে বাংলাদেশ আবদ্ধ হবে তা কিন্তু আগেই বলেছিলেন লিটনের সাবেক জাতীয় দল গুরু স্টিভ রোডস! নিশ্চয়, রত্ন চিনতে ভুল করেননি রোডস। নিজেকে প্রমাণ করে যাচ্ছেন, প্রতিদিনই নিজেকে নতুন করে চেনাবেন লিটন! এটাই তো হাজারো ক্রিকেট সমর্থকের আশা।
স্পোর্টসমেইল২৪/পিআর
[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্টল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]