নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কানপুর টেস্টে ব্যথা নিয়েই ৬১ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছিলেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার ঋদ্ধিমান সাহা। দারুণ এই ইনিংসের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন দ্য বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি। শ্রীলঙ্কা সিরিজে দল থেকে বাদ পড়ে সেই সৌরভের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন ঋদ্ধিমান।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ এক ইনিংস খেলার পর সবসময়ই ঋদ্ধিমান সাহার পাশে থাকার কথা জানিয়েছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি। পরের সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকায় একাদশে সুযোগ না পাওয়া ঋদ্ধিমানকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পরামর্শ দেন কোচ রাহুল দ্রাবিড়। আর শ্রীলঙ্কা সিরিজের দলে তো জায়গাই পেলেন না তিনি। মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে যাওয়ায় বেশ বিস্মিত ঋদ্ধিমান। প্রকাশ করেছেন হতাশা।
চলতি বছরের মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের দলে জায়গা পাননি ঋদ্ধিমান সাহা। তার বদলি হিসেবে স্কোয়াডে জায়গা করে নিয়েছেন তরুণ দুই উইকেটরক্ষক ঋষভ পান্থ এবং শ্রীকর ভরত।
সর্বশেষ দুই টেস্টে ভালো করলেও কেন ঋদ্ধিমানকে দলে নেওয়া হয়নি সে বিষয়টি খোলাসা করেননি বিসিসিআইয়ের প্রধান নির্বাচক চেতন শর্মা। তবে জানিয়েছেন, বিষয়টি আগে থেকেই জানানো হয়েছিল।
এ বিষয়ে চেতন শর্মা বলেন, ‘ তাকে কেন বাদ দেওয়া হয়েছে সেটা বলা যাবে না। এটা নির্বাচকদের ব্যাপার। তবে তাকে আগে থেকেই জানানো হয়েছিল।’
বয়স ৩৭ হলেও এখনও দারুণ ছন্দে ছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা। তবুও তাকে বাদ দিয়ে তরুণ ক্রিকেটারদের সুযোগ করে দিতে নির্বাচকরা মরিয়া ছিলেন বলে জানান চেতন শর্মা।
বলেন, ‘বয়ুসের ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। তবে একটা সময় নির্বাচকরা এটা নিয়ে ভাবতে থাকে। বিশেষ করে যখন তরুণরা আশে পাশে থাকে।’
দলে নেওয়া হবে না বিষয়টি আগে থেকেই জানতেন ঋদ্ধিমান। এ কথা স্বীকার করেছেন তিনি। তবে বাদ পড়ার বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
বাদ পড়ার পর ঋদ্ধিমান বলেন, ‘ হ্যাঁ, টিম ম্যানেজমেন্ট বলেছিল আমাকে বিবেচনায় নেওয়া হবে না। এতো দিন তা বলতে পারেনি কারণ দলের সাথে ছিলাম। এমনকি কোচ দ্রাবিড়ও আমাকে অবসর নিতে বলেছিল।’
আগে থেকে জানলেও নিজের মধ্যে একটি আক্ষেপ পুষে রেখেছেন ঋদ্ধিমান সাহা। জানান, কানপুর টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো করার পর বিসিসিআই সভাপতি তাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। আশ্বাস দিয়েছিলেন জাতীয় দলে থাকবেন তিনি। তবুও কেন এত দ্রুত নিজের পরিস্থিতি বদলে গেলো তা বুঝতে পারছেন না এই বাঙ্গালি উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
তিনি বলেন, ‘গত নভেম্বরে যখন নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে কানপুরে ব্যথানাশক ট্যাবলেট খেয়ে ৬১ রানের ইনিংস খেললাম, তখন দাদি (সৌরভ গাঙ্গুলি) আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে অভিনন্দন জানিয়েছিল। এটাও বলেছিলেন যে, তিনি যতদিন বোর্ডের ক্ষমতায় আছেন, আমার কোনো সমস্যা হবে না। বোর্ড প্রধানের কাছ থেকে এমন কথা শুনে আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু বুঝতে পারছি না, সবকিছু এত দ্রুত কীভাবে বদলে গেল।’
আক্ষেপ পুষে রাখলেও জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার জন্য সৌরভকে দায়ী করতে পিছপা হননি ঋদ্ধিমান। তার মতে ওই মেসেজের মাধ্যমেই ঋদ্ধিমানকে দল থেকে বের করে দিয়েছেন সৌরভ।
তিনি বলেন, ‘অবশ্যই দাদির ব্যাপারটা বেশি আঘাত দিয়েছে। কারণ দাদি নিজে থেকেই ম্যাসেজ পাঠিয়েছিল। কিন্তু এরপর এমন ব্যবহার পেলাম। আজীবন কেউ খেলবে না। কিন্তু কাউকে বিদায় জানানোর একটা পদ্ধতি তো আছে। আমি এতটাও খারাপ পারফরম্যান্স করিনি যে আমাকে একেবারে তাড়িয়ে দেবে!’
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর
[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্টল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]