আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গত বছর নিজের প্রত্যাশানুযায়ী পারফরমেন্স করতে না পারায় ক্রিকেট ছাড়ার চিন্তা করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বাঁ-হাতি পেসার মিচেল স্টার্ক। অথচ সেই স্টার্কই ২০২১ সালের পারফরমেন্সে অস্ট্রেলিয়ার বর্ষসেরা ক্রিকেটার হয়েছেন। শুরুর দিকে নিজের মন মতো পারফরমেন্স করতে পারেননি স্টার্ক। পরে কঠোর পরিশ্রমে স্বরূপে রুপে ফিরেছেন তিনি।
সতীর্থ মিচেল মার্শকে এক ভোটে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার অ্যালান বোর্ডার পদক জিতেছেন স্টার্ক। ৫ টেস্টে ১৭ উইকেট, ৩ ওয়ানডেতে ১১ উইকেট ও টি-টোয়েন্টিতে ১৩ ম্যাচে ১৩ উইকেট শিকার করেন স্টার্ক। যার স্বীকৃতি হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার বর্ষসেরা পুরুষ ক্রিকেটার হয়েছেন স্টার্ক।
পুরস্কার জিতে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) ওয়েবসাইটে স্টার্ক বলেছেন, ‘গত বছরটা আমার কাছে খুবই খারাপ গিয়েছিল। মাঠ এবং মাঠের বাইরেও। যে রকম খেলতে চাইছিলাম, সে রকম পারছিলাম না। একটা সময় তো ক্রিকেট না খেলার কথাও ভাবছিলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে ওই সময়ে যারা সমর্থন যুগিয়েছেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে অ্যালিসার প্রতি আমি অনেক কৃতজ্ঞ। সে আমাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। আমি তাকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোটো করতে চাই না।’
বিশ্বকাপের মতো মঞ্চেও স্টার্কের বিধ্বংসী রূপ দেখা যায়নি। ৭ ম্যাচে ৯ উইকেট নেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালে ৪ ওভারে ৬০ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন স্টার্ক। এমন পারফরমেন্সে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন স্টার্ক। বিশেষ করে দেশটির কিংবদন্তি স্পিনার শেন ওয়ার্নের সমালোচনা ছিল একটু বেশি।
অ্যাশেজে ছন্দ ফিরে পান স্টার্ক। অ্যাশেজে দূরন্ত প্রত্যাবর্তন করে পাঁচ টেস্টে ১৯টি উইকেট নেন তিনি। বোলিং গড় ছিল ২৫ দশমিক ৩৭।
ওয়ার্নকে উদ্দেশে স্টার্ক বলেন, ‘আমার মনে হয় আছে- ওয়ার্ন বলেছিল, এটা কী বল হচ্ছে? লেগস্টাম্পে ফুলটস! আমি কি নিয়ে ওয়ার্নের সাথে কথা বলবো? আমার কোনও আগ্রহ নেই। ওয়ার্ন নিজের মত জানাতেই পারেন। কিন্তু আমি যেভাবে ক্রিকেটটা খেলি, সে ভাবেই খেলে যাব। আমি আমার পরিবারকে পাশে পাচ্ছি। আর দারুণ সব সতীর্থের সাথেও আমি ক্রিকেটটা খেলার সুযোগ পাচ্ছি। তাই নিজের অবস্থান নিয়ে আমি খুশি।’
অস্ট্রেলিয়ার পঞ্চম পেসার হিসেবে অ্যালান বোর্ডার পদক জিতলেন স্টার্ক। এর আগে গ্লেন ম্যাকগ্রা, ব্রেট লি, মিচেল জনসন এবং প্যাট কামিন্স এ পদক জিতেছিলেন। গত বছরের ২৬ জানুয়ারি থেকে এ বছরের ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ের পারফরমেন্সকে বিবেচনা করা হয়েছে। ক্রিকেটার, আম্পায়ার ও সংবাদকর্মীদের ভোটে নির্ধারিত হয় বিজয়ী।
পুরুষদের ক্রিকেটে স্টার্ক ১০৭ ভোট পেয়ে বর্ষসেরা হন। মার্শের ভোট ১০৬টি। তবে টি-টোয়েন্টি বর্ষসেরা হয়েছেন মার্শ। তার ভোট ৫৩টি। দ্বিতীয় হওয়া জশ হ্যাজেলউডের ভোট ২৯টি। নারীদের ক্রিকেটে বর্ষসেরা হয়ে ‘বেলিন্ডা ক্লার্ক মেডেল’ জিতেছেন অ্যাশলি গার্ডনার। প্রথম আদিবাসী ক্রিকেটার হিসেবে সেরা হলেন ২৪ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার। গার্ডনার পেয়েছেন ৫৪ ভোট। ৪৭ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় বেথ মুনি।
১৫ ভোট পেয়ে বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটারও হয়েছেন স্টার্ক। স্টার্কের জীবনসঙ্গী অ্যালিসা নারীদের বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার হন। পুরুষদের বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটার ট্রাভিস হেড। সর্বশেষ অ্যাশেজের সেরা খেলোয়াড় হেড পান ১২ ভোট। আর বোল্যান্ড ১০ ভোট।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস
[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্টল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]