চতুর্থ টেস্টের শেষ দিন। ১০ উইকেট হাতে রেখে ইংল্যান্ডকে করতে হবে ৩৫৮। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় খুব কঠিন লক্ষ্য। একদিকে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের দুর্দান্ত ফর্ম, অন্যদিকে ইংলিশ ব্যাটারদের রানখরা। এমন অবস্থায় হারিকেন দিয়ে খুঁজেও ইংলিশদের পক্ষে বাজি ধরার মতো লোক পাওয়ার কথা না।
ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা। তার চেয়েও অনিশ্চিত এক রোমাঞ্চের মঞ্চ অ্যাশেজ। যেখানে এক শিশি পোঁড়া ছাঁইয়ের জন্য গল্পের উপসংহার হওয়ার আগ অব্দি শেষ লাইনের শেষ শব্দটাও পড়তে হয়। লড়ে যেতে হয় শেষ অবধি। যেটা আরেকবার দেখা গেলো সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। দেখালো ইংল্যান্ড।
পঞ্চম দিনের শুরুতেই সাবলীল ব্যাটিংয়ে ভালো কিছু ইঙ্গিত দিলেন ইংলিশ ওপেনার জ্যাক ক্রুলি। খেলছিলেন মাঝ ব্যাটে। তবে অন্যপ্রান্তে থাকা হাসিব হামিদ রিদমটা ঠিক ধরে রাখতে পারলেন না। আগের দিনের সাথে আর মাত্র ১ রানই যোগ করতে পেরেছিলেন। ৯ রান করে বিদায় নেন স্কট বোলান্ডের বলে।
ক্রিজে এসে বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না ডেভিড মালানও। নাথান লায়নের ঘূর্ণি জাদুতে মোহবিষ্ট হয়ে বোল্ড আউটের ফাঁদে পড়েন ৪ রানে। তখন মনে হচ্ছিলো এই বুঝি আরেকবার পরাজয়ের সাগরে নিমজ্জিত হতে যাচ্ছে ইংলিশরা। তবে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন অধিনায়ক জো রুট এবং অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। দু’জন মিলে ৬০ রানের জুটি গড়ে সামাল দেন প্রাথমিক ধাক্কাটা। ইংলিশদের লক্ষ্য তখন পরাজয় ঠেকানো।
১৯ রান করে জো রুট বিদায় নিলেও থেকে যান স্টোকস। জনি বেয়ারস্টোর সাথে ৩৭ রানের আরেকটা ছোট জুটি গড়ে দলের ভীতটা আরেকটু শক্ত করেন এই অলরাউন্ডার। এর মধ্যেই এবারের আসরের প্রথম ফিফটি করে ফেলেন স্টোকস। লায়নের বলে স্মিথের হাতে ধরা পড়ে বিদায়ের আগে করে যান ৬০ রান।
স্টোকসের বিদায়ে হাল ধরেন জনি বেয়ারস্টো। ৪১ রান করে বেয়ারস্টো যখন বিদায় নেন। শেষ বিকালের সুর্যটা হেলে পড়েছে টলমলে তাসমানের বুকে। দোলাচলকে সঙ্গী করে শেষ বিকেলটা কাটিয়ে দিলেন জ্যাক লিচ। ২৬ রানে লিচ যখন আউট হলেন, তখনও ইংলিশদের জিততে রান দরকার শতাধিকের উপর। আর অজিদের কেবল ১টি উইকেট। অথচ দিনের আলো প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। আর মাত্র ১২ বল!
এই ১২টি বল করার সময় ইংলিশদের শেষ দুই ব্যাটার অ্যান্ডারসন-ব্রডকে ঘিরে মৌমাছির মতো ওঁত পেতে থেকেছে অজিরা। কিন্তু বাঁচার লড়াইয়ে নামা সৈনিক কেন সুযোগ দিবে? তাও একদম তীরে এসে। স্মিথের করা শেষ বলটা অ্যান্ডারসন ডিফেন্স করতেই রোমাঞ্চের আনন্দে ভরে গেলো বিখ্যাত সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড। তিন ম্যাচ শেষে এসে নিজের মহত্ব্য দেখালো অ্যাশেজ। ঐ যে পোঁড়া ছাইয়ের জন্য মরণপণ লড়াই! তাতে হার জিত হলো না কিংবা দখলদারিত্ব। নিহিত রইলো কেবল সাদা পোশাকের ঐতিহ্য।
স্পোর্টসমেইল২৪/এএইচবি
[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্টল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]