টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষে ব্যাপকভাবে রদবদল হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটে। বিশ্বকাপ শেষে দলের কোচের পদ ছেড়েছেন রবি শাস্ত্রী। টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব ছেড়েছেন বিরাট কোহলি। শুধু তাই নয়, টি-টোয়েন্টির পর ওয়ানডে নেতৃত্বও হারিয়েছেন কোহলির। দুই ফরম্যাটেই নেতৃত্ব পেয়েছেন রোহিত শর্মা। আর কোচ হয়েছেন রাহুল দ্রাবিড়।
বিশ্বকাপ শেষে ভারতীয় ক্রিকেটের এ পালা-বদল নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সদ্য সাবেক কোচ রবি শাস্ত্রী। এছাড়া ভারতীয় বোর্ডে অনেকেই রয়েছেন, যারা ২০১৭ সালেও চাননি রবি শাস্ত্রী কোহলিদের কোচ হোক। ফলে আগেরবার তাকে সরিয়ে দেওয়ার পদ্ধতি নিয়েও খুশি ছিলেন না শাস্ত্রী।
২০১৬ সালে ভারতীয় দলের প্রধান কোচ হওয়ার দৌঁড়ে সবার আগে ছিলেন শাস্ত্রী। তার আগে শাস্ত্রী ভারতীয় দলের ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছেন। তবে সৌরভ গাঙ্গুলী-শচিন টেন্ডুলকার এবং ভিভিএস লক্ষ্মনকে নিয়ে গঠিত ক্রিকেট উপদেষ্টা কমিটি কোচের দায়িত্ব দেয় অনিল কুম্বলেকে।
বিসিসিআইর বিপক্ষে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে শাস্ত্রী বলেছেন, ‘আমাকে বলা হয়েছিল কোচ হতে হলে ধারাভাষ্যের কাজ ছেড়ে দিতে। পরে আমি ছেড়েও দিয়েছিলাম। এরপর ভারতীয় দলের সাথে যুক্তও হয়েছিলাম। কিন্তু কোনও কিছু না জানিয়ে হঠাৎ করেই আমাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমাকে কেউই কিছু বলেনি।’
তিনি বলেন, ‘তখন খুব খারাপ লেগেছিল। আমাকে যদি পছন্দ না’ই হয়, তা বলতে পারতো। পরে আবার ধারাভাষ্যের কাজ শুরু করেছিলাম। ৯ মাস পরে যখন ফিরে এলাম আমাকে বলা হয়, দলের ভিতর ঝামেলা রয়েছে। শুনে অবাক হয়েছিলাম। আমি দল ছেড়ে যাওয়ার সময় কোন সমস্যা ছিল না। মাত্র ৯ মাসে সব বদলে গেল। আরও অবাক হয়েছিলাম এই ভেবে, ৯ মাস আগে যাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তাকেই আবার দায়িত্ব দেওয়া হলো।’
২০১৯ সালের বিশ্বকাপের দল গঠন নিয়েও ক্ষোভ ঝেড়েছেন শাস্ত্রী। জানান, ২০১৯ বিশ্বকাপের দল গঠনে তার কোন মতামত নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে তৎকালীন প্রধান নির্বাচক সি এস কে প্রসাদের দিকে আঙুল তুলেন শাস্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘২০১৯ বিশ্বকাপের দল নির্বাচনে আমার কোন মতামতই নেওয়া হয়নি। বিশ্বকাপের জন্য দলে তিন উইকেটরক্ষক থাকা আমি মেনে নিতেই পারিনি। আমি রাইডু বা আইয়ারকে দলে চেয়েছিলাম। ধোনি-পান্থ ও কার্তিক একসাথে তিন উইকেটরক্ষককে দলে নেওয়ার কী যুক্তি থাকতে পারে? আমি এখনও বুঝতে পারছি না।’
এমনকি বোলিং কোচ-সহকারী কোচ হিসেবেও শাস্ত্রী যাদের চেয়েছিলেন, সেদিকে কোন আগ্রহই ছিল না বিসিসিআই’র। শাস্ত্রী বলেন, ‘আমি ভরত অরুনকে বোলিং কোচ হিসেবে চেয়েছিলাম। অনেকেই ঝামেলা করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে ভারতের পেস অ্যাটাককে বিশ্ব মঞ্চে, অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছেন অরুন।’
শাস্ত্রী বলেন, ‘আমি সবার দিকে আঙুল তুলছি না, নির্দিষ্ট কয়েকজনের কথা বলছি। যারা আমাকে ভারতের কোচ হিসেবে চায়নি। যারা নিজেদের মত করে দল চালাতে চেয়েছিল।’
ক্রিকেটে তিন ফরম্যাটে সাফল্য থাকলেও আইসিসির কোন ইভেন্টে সাফল্য পাননি শাস্ত্রী-কোহলি জুটি। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে হার, ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল থেকে বিদায়, ২০২১ সালে প্রথম বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিফের ফাইনালে হার, সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কাছে পরাজিত ভারতীয় ক্রিকেটে কালো অধ্যায়ই হয়ে থাকবে শাস্ত্রী-কোহলি জুটি।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস
[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্টল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]