বিশ্বকাপে হতাশাকে পাশে রেখে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। প্রথম দুই ম্যাচ হেরে সিরিজ আগেই খোয়ানো বাংলাদেশ তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে রোমাঞ্চকর মুহূর্তের সৃষ্টি করবে সেটা হয়তো ঘুনাক্ষরেও কেউ টের পায়নি। তবে পুরো ম্যাচজুড়ে কোনো রোমাঞ্চকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হলেও শেষ ওভারে তৈরি হয়েছিল দারুণ রোমাঞ্চ। শেষ ওভারে মিরপুরে উপস্থিত দর্শকরা ভেবেছিলেন হয়তো ম্যাচটা বাংলাদেশের পকেটেই ঢুকবে। শেষ বলে ব্যাটার মোহাম্মদ নওয়াজের রহস্যজনক সরে যাওয়া এবং ডেড বল নাটকের পর জিতেছে পাকিস্তান। তবে নওয়াজের ওই ধরনের আচরণের পর তৈরি হয়েছিল সমালোচনা।
১৯তম ওভারের মধ্যে সব নিয়মিত বোলারের ওভার শেষ করেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাই তো শেষ ওভারের কোনো পার্ট-টাইম বোলার ছাড়া কোনো উপায় ছিল না অধিনায়কের সামনে। শেষ ওভারে তাই দায়িত্বটা নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছিলেন অধিনায়ক।
দায়িত্বটা বেশ ভালোভাবেই সামলেছেন সে কথা চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়া যায়। শেষ ওভারের প্রথম পাঁচ বলে তিন উইকেট এবং ছয় রান দিয়ে শেষ বলে পাকিস্তানের জয়ের জন্য দরকার ছিল মাত্র ২ রান।
সেখানেই শুরু নতুন নাটকের। শেষ বল করতে আসেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আম্পায়ারের সমান্তরালে থেকে বলটা ছুড়েছিলেন অধিনায়ক। বল স্ট্যাম্পে গিয়ে আঘাতও করেছিল। আনন্দে ভেসে উঠেছেন মিরপুরের সমর্থকরা। এমনকি বুনো উল্লাসটাও শুরু করতে গিয়েছিলেন উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান।
তবে তখনই আম্পায়ার ডেড বল ডেকেছেন। কেন আম্পায়ার ডেড বল ডাকলেন? বল ছোড়ার পর পিচে পড়ে বলটি স্ট্যাম্পের দিকে যাচ্ছিলো, ঠিক সে সময় অপ্রস্তুত বলে জানান ব্যাটার মোহাম্মদ নওয়াজ। নওয়াজের কথা মতো আম্পায়ার ডেড বল ডাকেন।
এরপর থেকেই প্রশ্ন উঠে বাংলাদেশ কি ম্যাচ শেষ হওয়ার আবেদন করতে পারতো না? উত্তর হলো না, কারণ মাহমুদউল্লাহ বল ছাড়ার পর নওয়াজ বল খেলতে চেষ্টা করতেন তাহলে সেটাকে বৈধ বল হিসেবে গণ্য করা যায়। তবে নওয়াজ যেহেতু বল খেলার কোনো ধরনের চেষ্টা করেননি এবং বল পিচ হওয়ার সাথে সাথে জানিয়েছেন প্রস্তুত নয় তাই এটা ডেড বল হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
ক্রিকেট আইনের ২০.৪.২.৫ নম্বর ধারায় বলা আছে, ‘যদি বল করার সময় ব্যাটসম্যান প্রস্তুত না থাকেন এবং বল করার পর সেটা খেলার চেষ্টা না করেন, তাহলে সে বল “ডেড বল” হিসেবে গণ্য করা হবে। আম্পায়ার যদি বিশ্বাস করেন, ওভাবে সরে যাওয়ার পেছনে যথেষ্ট যুক্তি আছে, তাহলে সে বলকে ওভারের অংশ হিসেবে ধরা হবে না।’
তবে নওয়াজ বলটি নিজের স্কোরিং জোনে পাননি বলেই যে ছেড়ে দিয়েছেন তা বলার অবকাশ রাখে না। দলকে জেতানোর জন্যই বল না খেলে নিজেকে অপ্রস্তুত বলে দাবি করেছেন। ক্রিকেট আইনের সুবিধা নিয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে দলকে জিতিয়েছেন, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো জায়গা রাখেননি মোহাম্মদ নওয়াজ।
স্পোর্টসমেইল২৪/পিপিআর
[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্ট্রল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]