সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিতে ঢাকা ত্যাগ করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ক্রিকেটের এ ফরম্যাটের বিশ্বকাপে গত ছয় আসরে খুব একটা ভালো না করতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে এবারের টুর্নামেন্টে ‘ডার্ক হর্স’ হতে পারেন টাইগাররা।
বিশ্বকাপরে আগে সম্প্রতি ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয় সত্ত্বেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, দু’টি সিরিজেই উইকেট ধীর গতির হওয়ায় ম্যাচগুলো ছিল লো-স্কোরিং। ব্যাটাররা বড় ইনিংসই খেলতে পারেননি। তবে সর্বশেষ দুই সিরিজে প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ থাকছে টাইগারদের।
১৭ অক্টোবর থেকে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে বাংলাদেশ দল। দলের সেরা ওপেনার তামিম ইকবালকে ছাড়াই আসরে খেলতে হবে টাইগারদের। প্রথম পর্ব পেড়িয়ে সুপার ১২তে যাওয়ার জন্য ভালো অবস্থায় আছে টাইগাররা এবং বিশ্বকাপে ‘ডার্ক হর্স’ হতে পারে বাংলাদেশ।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ কেন ‘ডার্ক হর্স’ হতে পারে?
সাম্প্রতিক ফর্ম যোগাতে পারে আত্মবিশ্বাস
দিন শেষে যেকোন ফরম্যাটে এবং যেকোন কন্ডিশনে জয়, বিশেষভাবে আইসিসির মতো বড় টুর্নামেন্টে দলের মনোবল-সাহস বাড়াতে সহায়তা করে। যেকোন পরিস্থিতিতে জয়ের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। সম্প্রতি বাংলাদেশের সাফল্যকে ২০০৭ দলের সাথে তুলনা করেছেন সাকিব। যদিও ২০০৭ সালের টুর্নামেন্টের আগে তাদের জয়গুলো কেনিয়া, জিম্বাবুয়ে ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে এসেছিল।
সেই সব জয় আত্মবিশ্বাস যুগিয়েছিল বাংলাদেশকে। জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপে ইতিহাস লিখেছিল টাইগাররা। ত্রিনিদাদে ভারতকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ এবং বিশ্বাস না করার কোন কারণ নেই, কেননা দলে বেশ কয়েকজন প্রতিভাবান তরুণ খেলোয়াড় রয়েছে।
বোলিং অলরাউন্ডার দলে ভারাসাম্য সৃষ্টি করেছে
বাংলাদেশের একটি ভালো বোলিং অ্যাটাক রয়েছে। এর মধ্যে শক্তিশালী স্পিন অ্যাটাক, যারা ইনিংসে মাঝের ওভারগুলোতে ম্যাচে প্রভাব ফেলতে পারে। গত বছর এ ফরম্যাটে দুই স্পিনার সাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান মিরাজ ১৪টি করে উইকেট নিয়েছেন এবং কমপক্ষে ১শ রানও করেছেন।
একই সময়ে এ ফরম্যাটে দক্ষিণ আফ্রিকার জিওর্জি লিন্ডে বেশি উইকেট নিয়েছেন এবং অন্তত ১শ রান করেছেন। এছাড়া গত বছর সেই রেকর্ড ভেঙেছেন নাসুম আহমেদ। ১৪ ম্যাচে ১৮ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ওভার প্রতি ৬ দশমিক ২২ রান দিয়েছেন দিয়েছেন।
ফর্মে ফিরেছেন মোস্তাফিজ
ইনজুরি সমস্যার কাটিয়ে নিজের সেরা রুপে ফিরেছেন বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ফিজ। গত বছরের শুরু থেকে ১৩ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। ওভার প্রতি ৭ দশমিক ৫২ রান দিয়েছেন তিনি। গড় ১৩র নিচে ছিল।
অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ৯ ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। সংযুক্ত আরব আমিরাতের উইকেট থেকে আরও বেশি উপকৃত হবেন মোস্তাফিজ। কারণ, বিশ্বকাপের আগে আইপিএল খেলে উইকেটে এখন বেশ অভ্যস্ত ফিজ। বল হাতে দারুণ সাফল্যও পাচ্ছেন তিনি।
সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এমন একজন অধিনায়ক, যিনি চাপের মধ্যে নিজেকে মেলে ধরতে ভয় পান না। তরুণদের ভালো খেলতে এবং শিখতেও সুযোগ দেন। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে খারাপ শুরুর পরও দলকে রক্ষা করেছেন তিনি। দুই সিরিজে একমাত্র হাফ-সেঞ্চুরিয়ান ছিলেন তিনি। একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ১শ ম্যাচ খেলেছেন রিয়াদ। টপ-অর্ডার ব্যর্থ হলেও প্রায়ই দলের ইনিংসকে ভালো অবস্থায় নিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অধিনায়কত্ব খেলোয়াড়দের মুগ্ধ করেছে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে নাসুম দু’টি শর্ট বল করেছিলেন, তখনই নাসুমের কাছে সাকিবকে যেতে এবং ফুল লেন্থে বল করতে বলেছিল। যাই হোক, অধিনায়ক হস্তক্ষেপ করেন এবং বোলারদের সাথে কথা বলতে সাকিবকে বলেন। ওই ম্যাচে ১৯ রানে ৪ উইকেট নেওয়ার পর নাসুম বলেন, ‘মাহমুদউল্লাহ ভাই, সাকিব ভাইকে বলেছিলেন, আমার মতো বোলিং করতে।’
এছাড়া সিরিজে সময়োপযোগী বোলিং পরিবর্তনের মাধ্যমে কোচের প্রশংসাও কুড়িয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তার অধীনে খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, দেখার মতো একটি দল হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ হয়েছে। সবকিছু মিলেয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রতিপক্ষ দলের জন্য যে বাংলাদেশ দল আতঙ্ক সৃষ্টি করবে তা আর বলা অপেক্ষা রাখে না।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস
[sportsmail24.com এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার ভিডিও-ছবি এবং সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ব্রাউজ করুন যেকোন ঠিকানায়। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ইনস্ট্রল করে নিতে আমাদের অ্যাপস ]