২০০৯ সালে সফরকারী শ্রীলঙ্কা দলের বাসে সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানের মাটিতে বন্ধ হয়ে যায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইভেন্ট। দীর্ঘদিন নিরপেক্ষ ভেন্যু ভাড়া নিয়ে স্বাগতিক হিসেবে সিরিজ খেলেছে তারা। এরপর নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট ফিরিয়ে সফল হওয়ায় দেশটিতে ধীরে ধীরে সফর শুরু করেছে ক্রিকেটীয় দেশ। তারই ধারাবাহিকতায় ছিল নিউজিল্যান্ডের সফর। তবে সিরিজ খেলার বিপরীতে পাকিস্তান ক্রিকেটকে মূলক ‘খুন’ করলো নিউজিল্যান্ড।
আরব আমিরাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে ও পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলার কথা ছিল নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের। এর আগে স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষ পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে গেছে নিউজিল্যান্ড।
পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা ছিল নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের। তবে সেটি আর হলো না। নিরাপত্তার অজুহাতে সিরিজের প্রথম ওয়ানেড মাঠে গড়ানোর কিছুক্ষণ আগে পুরো সিরিজ বাতি করা হয়। একই সঙ্গে দ্রুত পাকিস্তান ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দল।
ম্যাচ শুরুর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে নিউজিল্যান্ডের নেওয়া এমন সিদ্ধান্ত মানতেই পারছেন না পিসিবির নতুন প্রধান রমিজ রাজা। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের এমন সিদ্ধান্তে হাতাশার পাশাপাশি প্রয়োজনে আইসিসির কাছে যেতে রাজি তিনি। পিসিবের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটা ছিল পাকিস্তান ক্রিকেট দলের প্রথম কোন সিরিজ।
টুইট বার্তা পিসিবি সভাপতি রমিজ রাজা বলেন, ‘খুবই বাজে একটা দিন ছিল। সমর্থক ও ক্রিকেটারদের জন্য ব্যথিত আমি। নিরাপত্তার হুমকির ব্যাপারে একতরফা দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সফর থেকে চলে যাওয়া খুবই হতাশাজনক। বিশেষ করে যখন সেটার কারণ খোলাসা হয় না! নিউজিল্যান্ড কোন পৃথিবীতে বাস করে? আমরা আইসিসির কাছে অভিযোগ করবো এবং নিউজিল্যান্ড সেখানেই শুনতে পাবে।’
নিউজিল্যান্ডের এমন সিদ্ধান্তের তাৎক্ষণিক দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছেন পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তবে কোন লাভ হয়নি। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলকে রাষ্ট্রপতি নিরাপত্তা দিলেও তারা এ সিরিজ খেলতে রাজি হয়নি।
নিউজিল্যান্ডের এমন সিদ্ধান্তকে পাকিস্তানের ক্রিকেটকে ‘খুন’ করার সাথে তুলনা করেছেন দেশটির সাবেক পেসার শোয়েব আখতার। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান ক্রিকেটকে হত্যা করেছে নিউজিল্যান্ড।’
নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড ‘নিরাপত্তা বা হুমকির’ কথা বললেও বিস্তারিত জানায়নি। সে কারণে মূলত পাকিস্তানও বুঝতে পারছে না যে আসলে কী ঘটেছিল। তবে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেদ দলকে নিরাপত্তা দেওয়ায় দেশের প্রতিরক্ষা বিভাগ নিয়ে গর্বিত মোহাম্মদ হাফিজ।
তিনি বলেছেন, ‘পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ও সশস্ত্র বাহিনী প্রত্যেক পাকিস্তানির কাছে গর্বের। নিউজিল্যান্ডের এমন একতরফা সিদ্ধান্ত কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। পাকিস্তান নিরাপদ ও গর্বিত দেশ।’
সিরিজ বাতিল করার দুই আগেও পাকিস্তানের নিরাপত্তা নিয়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছিল সফররত নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দল। তবে মাঠের খেলা শুরু হওয়া মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে নিরাপত্তা অজুহাত দেখিয়ে সিরিজ বাতিল করা সত্যিই পাকিস্তান ক্রিকেটকে ‘খুন’ করার সমতুল্য। কারণ, নিউজিল্যান্ড সিরিজের পরপরই দেশটিতে সফর করার কথা রয়েছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের।
নিউজিল্যান্ডের এমন সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যে ইংল্যান্ড সফর নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড জানিয়ে দিয়েছে পাকিস্তানে তাদের সফর নিয়ে নতুন করে ভাববে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস
[sportsmail24.com এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার ভিডিও-ছবি এবং সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ব্রাউজ করুন যেকোন ঠিকানায়। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ইনস্ট্রল করে নিতে আমাদের অ্যাপস ]