স্মিথদের বল টেম্পারিংয়ে ঘটনায় পুরো ক্রিকেট বিশ্ব উত্তাল। লজ্জায় মাথা নুয়ে পড়ছে পুরো অস্ট্রেলিয়ার। তবে এতোকিছুর মাঝেও ব্যাতিক্রম অস্ট্রেলিয়ারই সাবেক ক্রিকেটার। তিনি বাংলাদেশেরও সাবেক কোচ। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে ৩৭ বছর আগে ‘কলঙ্ক’ জন্ম দেয়ায় তার বিয়ে ভেঙে গিয়েছিল। পরে আর বিয়ে করেননি। তিনি হলেন ট্রেভর চ্যাপেল।
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এ ক্রিকেটার বলছেন, ‘এই ঘটনায় (স্মিথদের বল টেম্পারিং) তিনি খুশি হয়েছেন। এত দিন অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে কলঙ্কিত ক্রিকেটার হিসেবে তার নাম আসত! এখন থেকে মানুষ মনে রাখবে স্মিথদের।’
সিডনির ডেইলি টেলিগ্রাফকে ট্রেভরের দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, ‘এত দিন আমিই ছিলাম অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটের সবচেয়ে কলঙ্কিত ঘটনার নায়ক, গুগলে সবার আগে আমার নামই আসত। ভেবে স্বস্তি হচ্ছে, সবচেয়ে কলঙ্কিত নায়কের এ মনিহার এখন আর আমার নামে থাকবে না।’
১৯৮১ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের শেষ বলটি কর নিজের নামের পাশে এ ‘কুখ্যাত’ শব্দটি যোগ করেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের জন্য শেষ বলে প্রয়োজন পড়ে ৭ রান। ৬ রান করলে টাই। সেই ম্যাচে অধিনায়ক গ্রেগ চ্যাপেলের পরামর্শে ট্রেভর শেষ বলটি গড়িয়ে গড়িয়ে করেন! যেন ব্যাটসম্যান আর যা-ই হোক ছক্কা হাঁকাতে না পারেন।
তবে তখন পর্যন্ত ওবাবে বল করা অবৈধ না হওয়ায় বেঁচে যায় অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচেও জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু তীব্র বিতর্কের জন্ম দেয়। ক্রিকেটীয় চেতনা নিয়ে উঠে প্রশ্নও। পরে আইসিসিও নিয়ম পাল্টাতে বাধ্য হয়। যা ছিল অস্ট্রেলিয়ার ক্রিবেট ইতিহাসে এক কলঙ্কজন অধ্যায়। এখন স্মিথের নেতৃত্বে আবারও নতুন কলঙ্কের জন্য দিলো অস্ট্রেলিয়া।
ট্রেভর ওই বিষয়ে আরও বলেন, ‘সেদিন (১৯৮১ সালে) আমি যা করেছিলাম, তা আজীবন আমাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। স্মিথ আর ব্যানক্রফটের বেলায়ও তাই হবে। বাকিটা জীবন এ নিয়ে তাদের ধুঁকতে হবে। সব সময়ই তাদের স্মরণ করা হবে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটকে তারা বিতর্কিত করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই ঘটনায় মানসিকভাবে আমি অনেকটা ভেঙে পড়েছিলাম। আমাকে বছরের পর বছর এ নিয়ে অপবাদ দেয়া হয়েছে। এ ঘটনা বারবার জানতে চাওয়া হয়েছে। আমার বিয়ে ভেঙে গিয়েছিল, এরপর আর বিয়ে করিনি। আমার কোনো সন্তানও নেই। এ জীবনটা এখন আমি শিশুদের কোচিং করিয়ে আর গলফ খেলে কাটিয়ে দিচ্ছি।’