লিটল মাস্টার কিংবা মাস্টার ব্লাস্টার। ক্রিকেট ছাড়া ভারতী এই কিংবদন্তির জীবন কল্পনাই করা যায় না। বিশ্বে একমাত্র ব্যাটসম্যান যিনি সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি করেছেন। ক্রিকেট ইতিহাসে কোথায় নেই তার নাম? সেটাই যেন বিস্ময়। আধুনিক যুগের ক্রিকেটের রোল মডেল সেই কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারের আজ (২৪ এপ্রিল) ৪৯তম জন্মদিন।
১৯৮৯ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিষেক টেস্টে মাঠে নামার সময় ১৬ বছর বয়সী শচীন টেন্ডুলকারের পক্ষে কোনোভাবেই ভাবা সম্ভব ছিল না যে, একদিন তিনি ভারতে ‘ক্রিকেট ঈশ্বর’ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠবেন। কোনোভাবেই এমন স্বপ্ন দেখা সম্ভব ছিল না। বরং আজ তিনি সব থেকে বেশি আন্তর্জাতিক রান ও সেঞ্চুরির মালিক।
কেরিয়ারের প্রথম টেস্ট ইনিংসে ১৫ রান করে আউট হয়েছিলেন। অভিষেক ম্যাচের পারফর্ম্যান্সের নিরিখে শচীনের তখন এটাই মনে হয়েছিল, এটাই বুঝি দেশের হয়ে কেরিয়ারের প্রথম ম্যাচ এবং শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। তবে ছবিটা বদলে যেতে সময় লাগেনি। আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতেই আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি মাস্টার ব্লাস্টারকে।
অভিষেক টেস্ট ইনিংসে ব্যর্থ হওয়ার পর শচীনের আত্মবিশ্বাস ফেরানোর পিছনে কৃতিত্ব রয়েছে ভারতের বর্তমান প্রধান কোচ রবি শাস্ত্রীর। শচীন নিজেই সেটা জানিয়েছেন।
একদা সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক নাসের হুসেনের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে শচীন জানান, কেরিয়ারের প্রথম টেস্ট ইনিংসে আউট হয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরার পর রবি শাস্ত্রী মূল্যবান কিছু পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই পরামর্শ কাজে লাগিয়েই পরের টেস্টে দাপুটে ব্যাটিং করতে সক্ষম হই।
শচীন বলেন, ‘স্বীকার করতে লজ্জা নেই যে, কোনো কূল-কিনারা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। যেভাবে কেরিয়ারের প্রথম টেস্ট খেলেছিলাম, যেন একটা স্কুল ম্যাচ। ওয়াসিম আর ওয়াকার এতো জোরে বল করছিল, গতিতেই পরাস্ত হচ্ছিলাম বার বার। যত রকম বিষাক্ত ডেলিভারি হয়, সব প্রয়োগ করেছে ওরা। আগে কখনও এমন বোলিংয়ের মুখে পড়িনি। যখন ১৫ রানে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরি, মনে হচ্ছিল বুঝি এটাই আমার কেরিয়ারের প্রথম ও শেষ টেস্ট হতে চলেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কার্যত কাঁদতে কাঁদতে সাজঘরে ফিরেই বাথরুমে চলে যাই। আমার মনের অবস্থা বুঝতে পারে সতীর্থরা। পরে রবি শাস্ত্রী আমার কাছে এগিয়ে আসে। বলে, তুমি নেহাৎ স্কুল ম্যাচের মতো খেলছিলে। তুমি সেরা বোলারদের বিরুদ্ধে খেলছো। ওদের ক্ষমতা ও দক্ষতাকে সম্মান জানাতে হবে। আমি তখন বলি, ওদের গতিতে পরাস্ত হচ্ছিলাম। শাস্ত্রী বলে, এটা হয়। ক্রিজে গিয়ে সময় কাটাও। আধা ঘণ্টা থাকলে গতির সঙ্গে সড়গড় হয়ে যাবে।’
শাস্ত্রী পরামর্শে বদলে গিয়েছিলেন শচীন। তিনি বলেন, ‘পরে ফয়জলাবাদ টেস্টে যখন ব্যাট করতে নামি, তখন রবি শাস্ত্রীর কথাগুলো মাথায় ছিল। ঠিক করেছিলাম, স্কোর বোর্ডের দিকে তাকাবই না। শুধু ঘড়ির দিতে তাকাবো। সত্যি সত্যিই আধা ঘণ্টা ক্রিজে থাকার পর সব কিছু অনেক স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল। সেই ম্যাচে ৫৯ রান করি। তারপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।’
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস
[sportsmail24.com এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার ভিডিও-ছবি এবং সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ব্রাউজ করুন যেকোন ঠিকানায়। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ইনস্ট্রল করে নিতে আমাদের অ্যাপস ]