বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে দুর্দান্ত ও প্রাণবন্ত একটি ম্যাচ দেখলো ক্রিকেট ভক্তরা। প্রথমে ব্যাট করে অধিনায়ক শান্তর সেঞ্চুরিতে ২২০ রানের সর্বোচ্চ ইনিংস গড়েছিল রাজশাহী। জবাবে ব্যাট করতে নেমে পারভেজ হোসেন ইমনের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ২২১ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে বরিশাল।
মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে নাজমুল হোসেনের সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ২২০ রানের ইনিংস গড়ে মিনিস্টার গ্রেুপ রাজশাহী। জবাবে ব্যাট করতে নেমে পারভেজ হোসেন ইমনের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ১১ বল বাকি থাকতেই ২২১ রান করে জয় তুলে নিয়েছে ফরচুন বরিশাল।
বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে যেখানে রান খরার কথা উঠেছে, সেখানে রানের জোয়ার বয়ে দিল পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা দুই দল। ম্যাচটিতে দুই দলের মোট রান সংখ্যা ৪২১, রাজশাহীর ২২০ এবং বরিশালে ২২১। এছাড়া বরিশালের ইনিংসে আরও ১১টি বল বাকি ছিল।
বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে তো বটেই, দেশের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এটি সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে ঢাকা প্লাটুনের ২০৫ রান তাড়া করে জয় পেয়েছিল খুলনা টাইগার্স। যা দেশে রান তাড়ার সবশেষ রেকর্ড ছিল। তবে আশ্চার্যের বিষয় হলো ওই ম্যাচে খুলনাও ১১ বল বাকি রেখে ৮ উইকেটে জয় পেয়েছিল।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন রাজশাহীর ওপেনার আনিসুল ইসলাম ইমন। সেঞ্চুরি করা দলীয় অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত তখনও শুধু দর্শখ। কারণ, ষষ্ঠ ওভারে ইমনের রান যখন ২০ বলে ৪৫, শান্তর তখন ১২ বলে ৭।এরপর এক ওভারে দুই বলে ছক্কা-চার হাঁকিয়ে শুরু করেন শান্ত।
১২.২ ওভারে ইমন-শান্তর উদ্বোধনী জুটি থেকে রাজশাহীর রান আসে ১৩১। যা টুর্নামেন্টের যেকোন উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রান।৩৯ বলে ৬৯ রান করে সুমন খানের বলে সাজঘরে ফিরেন ইমন। তবে শান্তকে থামানো যাচ্ছিল না। ৩২ বলে স্পর্শ করেন পঞ্চাশ, আর তিন অংকে পা রাখেন ৫২ বলে। শেষ পর্যন্ত ইনিংসের শেষ ওভারে ৪ চার ও ১১ ছক্কায় ১০৯ রান করে আউট হন তিনি।
শান্ত-ইমনের ঝড়ের পর রাজশাহীর আর কেউ রান করতে পারেননি। তিনে নেমে দুই ছক্কায় রনি তালুকদারের ১৮ রান করা ছাড়া আর কেউ দাঁড়াতে পারেননি। বরং শেষ ওভারে বল করতে এসে হ্যাটট্রিকসহ ৪ উইকেট তুলে নেন কামরুল। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে ২২গ রান করে রাজশাহী।
টুর্নামেন্টের পয়েন্ট টেবিলের একেবারে তলানিতে থাকা বরিশালের জন্য এ রান তাড়া হরে জয় পাওয়া ছিল অসম্ভব বিষয়। দিনটি যে তাদের ছিল তা প্রমান করে দিয়েছেন তরুণ ক্রিকেটার পারভেজ হোসেন ইমন।
৩৭ বলে ৫৩ রান করে রান আউটে কাটা পড়ে তামিম সাজঘরে ফিরেন। তবে অধিনায়ককে হারানোর পরও পারভেজের দাপুটে ব্যাটিং চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত আফিফ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি।
৪২ বলে ৯ চার ও ৭ ছক্কায় অপরাজিত ১০০ রান করেন ইমন। দলের জয়ে এমন অবদান রাখায় ম্যাচ সেরা পুরস্কারও তার হাতে উঠেছে।
এছাড়া এ জয়ে টুর্নামেন্টে টিকে রইলো বরিশাল। তবে এখনো পয়েন্ট তালিকায় সবার নীচে রয়েছে তারা। ৬ ম্যাচে ২ জয় তাদের পয়েন্ট ৪। অন্যদিকে ৭ ম্যাচে ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে এগিয়ে থেকে চার নম্বরে রয়েছে রাজশাহী।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী : ২০ ওভারে ২২০/৭ (শান্ত ১০৯, ইমন ৬৯, রনি ১৮; তাসকিন ৪-০-৪৯-০, মিরাজ ৩-০-৩৫-০, সুমন ৪-০-৪৩-২, কামরুল ৪-০-৪৯-৪)
ফরচুন বরিশাল : ১৮.১ ওভারে ২২১/২ (সাইফ ২৭, তামিম ৫৮, পারভেজ ১০০*, আফিফ ২৬*; সাইফ উদ্দিন ৪-০-৪০-১,ইবাদত ৩-০-৩৯-০, মুকিদুল ২-০-২৬-০)।
ফল : ফরচুন বরিশাল ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা : পারভেজ হোসেন ইমন (ফরচুর বরিশাল)।
[sportsmail24.com এর ওয়েবসাইট এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও ব্রাউজ করে পড়তে পারবেন। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস থেকেও খেলাধুলার সকল নিউজ পড়তে পারবেন। ইনস্ট্রল করুন স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস]