বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের জয়রথ অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর বিপক্ষে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে টানা চতুর্থ জয় তুলে নিয়েছে মোহাম্মদ মিঠুনের নেতৃত্বাধীয় চট্টগ্রাম। এ জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ স্থান আরও পোক্ত করলো তারা।
বুধবার (২ ডিসেম্বর) টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রানের বিশাল স্কোর গড়ে চট্টগ্রাম। জবাবে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৫ রান সংগ্রহ করে রাজশাহী। মাত্র ১ রানের জন্য হেরে যায় রাজশাহী। এ হারে চার ম্যাচে ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে তারা।
উদ্বোধনী জুটিতে সৌম্য সরকারকে নিয়ে ৬২ রানের জুটি গড়েন চট্টগ্রামের লিটন। ৪৪ বলের মধ্যে ২৫ বলে ৩৪ রান করেন লিটন। ৪টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন সৌম্য। সৌম্যর বিদায়ের পর চট্টগ্রামের দুই ব্যাটসম্যান অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন ১১ ও শামসুর রহমান ১ রান করে থামেন।
৯৬ রানে তৃতীয় উইকেট পতনের পর দলকে বড় সংগ্রহের পথে নিয়ে যান লিটন ও মোসাদ্দেক হোসেন। লিটন রানের চাকা সচল রাখলেও মারমুখী মেজাজে ছিলেন মোসাদ্দেক। ২৮ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ৪২ রান করেন মোসাদ্দেক। শিকার হন মুকিদুল ইসলাম অঙ্কনের।
পুরো ইনিংস ব্যাট করে আসরে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি করা লিটন ৯টি চার ও ১টি ছক্কা হাঁকান। ইনিংসের শেষ বলেও উইকেট শিকার করে রাজশাহীর সেরা বোলার মুকিদুল। চট্টগ্রামের সৈকতসহ ৪ ওভারে ৩০ রানে ৪ ব্যাটসম্যান শিকার মুকিদুলের। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে চট্টগ্রামের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১৭৬ রান।
জয়ের জন্য ১৭৭ রানের বিশাল লক্ষ্যে জবাবটাও দারুণ ছিল রাজশাহীর। দুই ওপেনার আনিসুল ইসলাম ইমন ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ৩৪ বলে ৫৬ রানের সূচনা এনে দেন। দ্রুত রান তুলতে থাকা শান্ত উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন। মোস্তাফিজুর রহমানের শিকার হওয়ার আগে ১৪ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ২৫ রান করেন শান্ত।
এরপর মোহাম্মদ আশরাফুলকে নিয়ে দলকে জয়ের পথে টিকিয়ে রেখেছিলেন আনিসুল। আসরের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরিও তুলে নেন তিনি। তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন আশরাফুল। তবে ১২ ওভারে দলের স্কোর ১০০তে পা দিতেই থামতে হয় অ্যাশকে। স্পিনার মোসাদ্দেকের শিকার হন আশরাফুল। ১৯ বলে ১টি চারে ২০ রান করেন আশরাফুল। এ জুটিতে আসে ৪৪ রান।
আশরাফুলের বিদায়ের পর আউট হন উইকেটে সেট ব্যাটসম্যান আনিসুল। চট্টগ্রামের মিডিয়াম পেসার জিয়াউর রহমানের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৪৪ বলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৮ রান করেন আনিসুল। আনিসুল আউটের সময় জয়ের জন্য ৪০ বলে ৭২ রানের প্রয়োজন ছিল রাজশাহীর। উইকেট ছিল ৭টি। প্রয়োজনীয় রান রেট বেড়ে যাওয়ায় আক্রমণাত্মক খেরতে শুরু করেন হার্ড-হিটার মেহেদী হাসান।
১৫তম ওভারের প্রথম দু’বলে দু’টি চার ও ১টি ছক্কায় রানের গতি বাড়ান মেহেদী। তবে ১৭তম ওভারের শেষ বলে স্কুপ শট খেলতে গিয়ে শরিফুলের বলে লেগ বিফোর হন মেহেদী। ১৭ বলে ২৫ রান করেন তিনি। আর ১৮তম ওভারের প্রথম বলেই বিদায় হয় ফজলে মাহমুদের। শরিফুলকে ছক্কা মারা ফজলে ৯ বলে ১১ রান করেন। তাকে শিকারের খাতায় তুলেন মোস্তাফিজ।
পরপর দু’বলে মেহেদী-ফজলের আউটে ম্যাচ নিয়ে চিন্তায় পড়ে যায় রাজশাহী। শেষ ২ ওভারে ২৭ রানের সমীকরণ দাঁড়ায় তাদের। জিয়াউরের করা ১৯তম ওভারে ১টি করে চার-ছক্কা মারার পরই আউট হন ফরহাদ রেজা। তবে আশা-ভরসা ছিলেন নুরুল হাসান সোহান। শেষ ওভারে ১৪ রানের প্রয়োজন মেটানোর লক্ষ্য পড়ে রাজশাহীর।
তবে শেষ ওভারের প্রথম বলেই মোস্তাফিজের তৃতীয় শিকার হন সোহান। আর সেখান থেকেই জয় দেখতে শুরু করেছিল চট্টগ্রাম। কারণ, শেষ ৩ বলে ১৪ রান প্রয়োজন ছিল রাজশাহীর।
ওভারের চতুর্থ বলে চার ও পঞ্চম বলে ছক্কা মেরে ম্যাচ জমিয়ে তুলেন রনি তালুকদার। তাতে শেষ বলে জয়ের জন্য চার রানের প্রয়োজন হয়। তবে অভিজ্ঞ ফিজের করা শেষ বল থেকে ২ রান নিতে পারেন রনি। তাতে ১ রানে ম্যাচ জিতে নেয় চট্টগ্রাম। ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৫ রান করে রাজশাহী।
এ জয়ে চার ম্যাচে চার জয়ে শীর্ষে থাকা চট্টগ্রামের পয়েন্ট দাঁড়ালো ৮। চার ম্যাচে দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় রয়েছে রাজশাহী। সমান সংখ্যাক ম্যাচ খেলে সমান জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় স্থানে খুলনা। এছাড়া চার ম্যাচে একটি করে জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে বরিশাল ও ঢাকা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম : ১৭৬/৫, ২০ ওভার (লিটন ৭৮*, মোসাদ্দেক ৪২, মুকিদুল ৩/৩০)
মিনিস্টার রাজশাহী : ১৭৫/৭, ২০ ওভার (ইমন ৫৮, শান্ত ২৫, মোস্তাফিজ ৩/৩৭)।
ফল : গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ১ রানে জয়ী
ম্যাচ সেরা : লিটন দাস (গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম)।
[sportsmail24.com এর ওয়েবসাইট এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও ব্রাউজ করে পড়তে পারবেন। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস থেকেও খেলাধুলার সকল নিউজ পড়তে পারবেন। ইনস্ট্রল করুন স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস ]