টেস্ট খেলতে পারদর্শী-সামর্থ্য আছে এমন খেলোয়াড়দের তৈরিতে মনোযোগী হচ্ছেন বাংলাদেশ হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) ইউনিটের প্রধান কোচ টবি র্যাডফোর্ড। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সফরে টেস্ট ম্যাচে বাংলাদেশকে ধুকতে দেখে টাইগারদের টেস্ট ক্রিকেটের ওপর জোর দিয়েছিলেন তিনি।
ওই দুই ক্যারিবীয় পেসার শ্যানন গাব্রিয়েল ও কেমার রোচ যখন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বেকাদায় ফেলেছিলেন তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সহকারী কোচ ছিলেন র্যাডফোর্ড। এবার বাংলাদেশ থেকে তেমনি টেস্ট খেলতে পারদর্শী খেলোয়াড় তৈরি করতে চান তিনি।
সাংবাদিকদের সাথে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে র্যাডফোর্ড বলেন, ‘দু’বছর আগে আমরা যখন বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলি তখন আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সাথে ছিলাম। তিন দিনেই টেস্টটি শেষ হয়। গাব্রিয়েলের পেস এবং অন্যান্য ফাস্ট বোলাররা বাংলাদেশকে বিধ্বস্ত করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘তবে সাদা-বলের ফরম্যাট দু’টিতে আমরা অন্য এক বাংলাদেশ দলকে দেখতে পেলাম। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে জিতেছে তারা। আমি বোর্ডকে বলেছি, আমি এমন একটি খেলোয়াড় তৈরি করতে চাই, যাতে টেস্ট ক্রিকেটে সত্যিই পারদর্শী হতে পারে। তারা প্রযুক্তিগতভাবে শক্ত হতে পারে, ঘণ্টায় ৯০ মাইল গতিতে বোলিং করতে এবং পাঁচ ঘণ্টা ব্যাট করতে পারে। দীর্ঘক্ষণ বোলিং করতে পারে। এ ১৪-১৫ দিনের ক্যাম্পের পুরোটাই লাল-বলের ক্রিকেট। আমাদের কাছে বোলিং মেশিনগুলি চালু আছে, ছোট এবং সুইং হচ্ছে। কৌশল পরীক্ষা করার জন্য এটিতে কাজ করা দরকার।’
র্যাডফোর্ডকে ইতোমধ্যে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, খেলোয়াড়রা লাল-বলের ক্রিকেট বেশি খেলেন না। তবে তার মতে, টেস্ট ক্রিকেটে খেলতে হলে প্রযুক্তির সাথে মানিয়ে নিয়ে বেশি বড় সংস্করণে খেলতে হবে।
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় কোচদের মতে, তরুণ খেলোয়াড়রা লাল-বলের ক্রিকেট খুব বেশি খেলেন না। তাদের মানসিকতা সব সময় থাকে স্কোর করা। সমস্যাটি হলো, যখন তিনটি স্লিপ এবং একটি গালি থাকে এবং তারা পেছনের দিকে খেলতে যায় এবং ছেড়ে দিতে চায়। কিন্তু আপনি বলের সামনে থাকতে চান না।’
বিরাট কোহলি, স্টিভেন স্মিথ, কেন উইলিয়ামসন এবং অন্যান্যদের উদাহরণ টেনে র্যাডফোর্ড জানান, মূলত টেস্ট ক্রিকেটের একজন ভালো খেলোয়াড় হওয়ার কারণেই তারা সকল ফরম্যাটে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন। তিনি মূলত তরুণ খেলোয়াড়দের বুঝাতে চেয়েছেন, সব ফরম্যাটে সেরা খেলোয়াড় হতে চাইলে তাদের ভালো টেস্ট খেলোয়াড় হওয়া দরকার।
র্যাডফোর্ড বলেন, ‘আমার কাছে এ পুরো সময়টাই হলো, তাদের কৌশল-তাদের পরীক্ষা করা। যাতে টেস্ট দলের জন্য খেলোয়াড় তৈরি করতে পারি। আমি বিশ্বাস সকল খেলোয়াড়দের কাছে একটি উপস্থাপনা করতে পারবো। বিশ্ব সেরা ক্রিকেটার উইলিয়ামসন, কোহলি, স্টোকস এবং স্মিথরা সব ফরম্যাটে ভালো। তারা সকলেই ভালো টেস্ট খেলোয়াড়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এগুলোর একটি ভালো কৌশল রয়েছে এবং একবার আপনি ধরতে পারলে, আপনি মজার টি-টোয়েন্টিতে উন্নতি করতে পারবেন। আমি প্রথমে একটি ভালো ও কঠিন কৌশল নিয়ে তাদের সাথে কাজ করেছি। তাদের সাহসী হতে হবে। এগিয়ে যেতে হবে। টেস্ট ক্রিকেটে আপনি যা চান, তার মধ্যে এটিই একটি পরীক্ষা।’
র্যাডফোর্ড বলেন, ‘এ মুহূর্তে এটিতেই ফোকাস করতে হবে। টি-টোয়েন্টি ও ৫০ ওভার পরে আসবে। আমি প্রথমে উচ্চস্তরের খেলোয়াদের দেখতে চাই। চলুন আমরা, আমি দেখতে চাই বাংলাদেশ সত্যিই টেস্টে প্রতিযোগিতামূলক হবে, তবে শুধুমাত্র বাংলাদেশে নয়। অস্ট্রেলিয়ায় মিচেল স্টার্ককে খেলতে পারার একমাত্র উপায় হলো আপনি যদি বোলিং মেশিনটি চালু করেন এবং মানুষ সত্যিই এটির সাথে অভ্যস্ত এবং লড়াই করার কৌশলগুলো নিতে পারবে। এটিই আমার পুরোপুরি দর্শন।’
তরুণদের সাথে কাজ করতে আগ্রহী র্যাডফোর্ড। যদি ভালো টেস্ট খেলোয়াড় তৈরি করা যায়, তবে সে সফল হবেন বলে মনে করেন। তিনি বলেন, ‘আমি এটিকে চাপ হিসেবে দেখছি না। আমি দেখছি তরুণদের সাথে কাজ করার ভালো সুযোগ। তাদের যেকোন সাফল্য খুবই চমৎকার। কিন্তু সেটি চলে গেছে। তারা কোথায় ছিল, এখন কোথায় আছে। অনূর্ধ্ব-১৯ দল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এসব ছেলেরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলতে চায়। আমি যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজে ছিলাম, তখন নির্বাচকদের খুঁজে পেতাম না। খেলোয়াড়রা কীভাবে অনুশীলন করছে এবং কিভাবে উন্নতি হচ্ছে, এ ব্যাপারে তাদের কোন মাথা-ব্যাথা ছিল না।’
[sportsmail24.com এর ওয়েবসাইট এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও ব্রাউজ করে পড়তে পারবেন। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস থেকেও খেলাধুলার সকল নিউজ পড়তে পারবেন। ইনস্ট্রল করুন স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস ]