বিসিবি প্রেসিডেন্ট’স কাপের ফাইনালে গ্রুপ পর্বের শীর্ষে থাকা নাজমুল একাদশকে ৭ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করলো মাহমুদউল্লাহ একাদশ। পেসার সুমন খানের বিধ্বংসী বোলিংয়ের পর লিটন দাসের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে সহজেই জয় তুলে নেয় মাহমুদউল্লাহরা।
রোববার (২৫ অক্টোবর) টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচটি আসলে ঠিক ফাইনালের মতো জমে ওঠেনি। সৌম্য-মুশফিক-আফিফদের ব্যাটিং ব্যর্থতায় মাত্র ১৭৩ রানে গুটিয়ে যায় নাজমুল একাদশ। অথচ, গ্রুপ পর্বে মাহমুদউল্লাহদের বিপক্ষেই পর পর দুই ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছিলেন শান্তরা। ব্যাটিং ব্যর্থতায় ফাইনাল ম্যাচটি পুরো একপেশে হয়ে যায়।
নাজমুল একাদশের ছুড়ে দেওয়া ১৭৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ওপেনার মমিনুল হক ব্যর্থ হলেও ব্যাট হাতে দুর্দান্ত খেলেছেন অপর ওপেনার লিটন কুমার দাস ও ইমরুল কায়েস।
জাতীয় দলের ওপেনার লিটন দাসের ৬৮ রান এবং ইমরুল কায়েসের ৫৩ রানে ভর করে সহজেই জয় তুলে নেয় মাহমুদউল্লাহ একাদশ। ৬৯ বলে ১০ রানে দুর্দান্ত ইনিংস খেলা লিটন চলে গেলে ইমরুল কায়েসকে সঙ্গে নিয়ে জয়ের বাকি কাজটুকু সাড়েন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
৫৫ বলে অপরাজিত ৫৩ রানের ইনিংসে ১টি চারের সাথে ৬টি ছক্কা হাঁকান ইমরুল কায়েস। অপর প্রান্তে ১১ বলে ৩ চার ও এক ছয়ে ২৩ রানে অপরাজিত ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
এছাড়া দলের পক্ষে ব্যাট হাতে মমিনুল হক ১২ বলে ৪ এবং ৩২ বলে ১৮ রান করেন মাহমুদুল হাসান। অন্যদিকে নাজমুল একাদশের হয়ে নাসুম আহমেদ ২টি এবং বাকি উইকেটটি তুলে নেন পেসার আল-আমিন।
এর আগে টপ হেরে ব্যাট করতে নামা নাজমুল একাদশকে বড় স্কোর গড়তে দেননি মাহমুদউল্লাহ একাদশের পেসার সুমন খান। ১০ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে তিনি তুলে নিয়েছেন ৫টি উইকেট।
ব্যাট করতে নামা নাজমুল একাদশে প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই আঘাত হানেন ইনফর্ম পেসার রুবেল হোসেন। ওপেনার সাইফ হাসানকে ৪ রানে ফিরিয়ে দেন তিনি। দ্বিতীয় ওভারে চোখের ভেতর পোকা যাওয়ায় ‘রিটায়ার্ড আহত’ হয়ে অবসরে যান সৌম্য সরকার।
সৌম্যর স্বেচ্ছা অবসরে উইকেটে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গী হন ইনফর্ম মুশফিকুর রহিম। দ্বিতীয় ওভারে নতুন দুই ব্যাটসম্যান আসায় রানের গতি কমে যায়। ১২ ওভারে মাত্র ৩৫ রান সংগ্রহ করে নাজমুল একাদশ।
১৩তম ওভারের প্রথম বলে মুশফিককে বিদায় দেন পেসার সুমন। ১২ রানে মুশফিকের বিদায়ের উইকেটে আসেন অবসরে যাওয়া সৌম্য। তবে ১৫তম ওভারে ৫ রানে সৌম্যকে থামান সুমন। একই ওভারে আফিফ হোসেন ধ্রুবকে রানের খাতা খোলার আগেই শিকার করেন সুমন। ফলে ৪৫ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় নাজমুল একাদশ।
এ অবস্থায় উইকেটে টিকে থাকার লড়াই করেন শান্ত। তৌহিদ হৃদয়কে নিয়ে বড় জুটি গড়ার চেষ্টা তা হতে দেননি স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। ৪টি চারে ৫৭ বলে ৩২ রান করা শান্তকে আউট করে প্রথম সাফল্য পান মিরাজ।
এরপর সাত নম্বরে নামা ইরফান শুক্কুরের সাথে ৭০ রানের জুটি গড়েছেন হৃদয়। দলকে লড়াই ফেরানোর পথ তৈরি করার পথে আঘাত হানেন ষষ্ঠ বোলার হিসেবে আক্রমণে আসা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৫৩ বলে ২টি চারে ২৬ রান করা হৃদয় ফিরে যান সাজঘরে।
১৩৪ রানে ছয় ব্যাটসম্যানের বিদায়েও এক প্রান্ত আগলে নাজমুল একাদশকে সম্মানজনক সংগ্রহ এনে দেন শুক্কুর। মারমুখি মেজাজে খেলে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে শেষ পর্যন্ত ৪৭তম ওভারে থামেন তিনি। রুবেলের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ৭৭ বলে ৮টি চার ও ২টি ছক্কা ৭৫ রান করেন শুক্কুর।
শুক্কুরের আউটের আগে নাজমুল একাদশের দুই টেল-এন্ডার নাঈম হাসান ও নাসুম আহমেদকে শিকার করে ম্যাচে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন সুমন খান। ১৭ বল বাকি থাকতে তাসকিন আহমেদকে আউট করে নাজমুল একাদশকে ১৭৩ রানে গুটিয়ে দেন আরেক পেসার এবাদত হোসেন।
ম্যাচ সেরা খেলোয়াড় এবং বোলার নির্বাচিত হয়েছেন ৩৮ রানে ৫ উইকেট নেওয়া সুমন খান। ম্যাচ সেরা ব্যাটসম্যান হয়েছেন ইরফান শুক্কুর এবং ম্যাচ সেরা ফিল্ডার হয়েছেন নুরুল হাসান।
[sportsmail24.com এর ওয়েবসাইট এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও ব্রাউজ করে পড়তে পারবেন। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস থেকেও খেলাধুলার সকল নিউজ পড়তে পারবেন। ইনস্ট্রল করুন স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস ]