প্রেসিডেন্ট’স কাপের পঞ্চম ম্যাচে তামিম একাদশকে ৪ উইকেটে হারিয়ে টুর্নামেন্টের ফাইনালের দৌড়ে ভালোভাবেই টিকে রইলো মাহমুদউল্লাহ একাদশ। পেসার রুবেল হোসেনের দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর ব্যাট হাতে মাহমুদুল হাসান এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে এ জয় তুলে নেয় মাহমুদউল্লাহ একাদশ।
টুর্নামেন্টে নিজেদের ৪ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট মাহমুদউল্লাহ একাদশের। আর ৩ খেলায় ৪ পয়েন্ট নাজমুল একাদশের। অন্যদিকে ৩ খেলায় মাত্র এক জয়ে ২ পয়েন্ট তামিম একাদশের। লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে বুধবার (২১ অক্টোবর) লড়বে নাজমুল একাদশ ও তামিম একাদশ। ওই ম্যাচের পর পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত হবে ফাইনালের লাইন-আপ।
সোমবার (১৯ অক্টোবর) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন তামিম একাদশের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তরুণ খেলোয়াড় তানজীদ হাসান তামিমকে নিয়ে ইনিংস শুরু করেন তামিম।
ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু করতে পারেনি তারা। তৃতীয় ওভারেই ভাঙে ওপেনিং জুটি। ১ রান করা জুনিয়র তামিমকে বিদায় করেন মাহমুদউল্লাহ একাদশের পেসার রুবেল হোসেন। পরের ওভারে সিনিয়র তামিমকেও প্যাভিলিয়নের পথ দেখান পেসার আবু হায়দার রনি। ৯ রান করে আউট হন তামিম। ১১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে তামিম একাদশ।
এ চাপকে দ্বিগুণ করেন রুবেল হোসেন। এনামুল হক বিজয়কে ১ ও মোহাম্মদ মিঠুনকে ২ রানে শিকার করেন তিনি। ফলে ১৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় পড়ে তামিম একাদশ। তবে দলের এ কঠিন অবস্থা থেকে খেলায় ফেরান রাব্বি ও অঙ্কন।
মাহমুদউল্লাহ একাদশের বোলারদের দেখেশুনে খেলে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে উঠার চেষ্টা করে সফলও হয়েছেন তারা। ১১১ রানের জুটি গড়েছেন রাব্বি ও অঙ্কন। জমে যাওয়া রাব্বি ও অঙ্কন জুটি অবশেষে রান আউটের ফাঁদে পড়ে ভেঙে যায়। ৮১ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬২ রান করে ফিরে যান রাব্বি।
রাব্বির বিদায়ের কিছুক্ষণ পর অঙ্কনকেও থামিয়ে দেন রুবেল। ১১০ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৭ রান করেন অঙ্কন। ১২৮ রানে রাব্বি ও ১৪৪ রানে অঙ্কনের বিদায়ের পর দলকে সম্মানজনক স্কোর এনে দেন মোসাদ্দেক হোসেন ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। সপ্তম উইকেটে ৫৬ বলে ৭৫ রানের জুটি গড়েন।
মোসাদ্দেক ৩৯ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪০ রান করেন। ২৯ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৮ রান করেন সাইফউদ্দিন। ফলে ৮ উইকেটে ২২১ রান করেন তামিম একাদশ। মাহমুদউল্লাহ একাদশের রুবেল ১০ ওভারে ৩৪ রানে ৪ উইকেট নেন। এছাড়া এবাদত হোসেন ২টি ও রনি ১টি উইকেট নেন।
২২২ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে মাহমুদউল্লাহ একাদশও শুরুতে ধাক্কা খায়। ৮ রানের মধ্যে ২ উইকেটের পতন ঘটে। নাঈম শেখ ৩ ও লিটন দাস ৫ রান করে ফিরেন। দু’টি শিকার ভাগাভাগি করেছেন তামিম একাদশের দুই পেসার সাইফউদ্দিন ও মোস্তাফিজুর রহমান।
তবে শুরুর ধাক্কাটা শক্ত হাতে সামাল দেন মাহমুদুল হাসান ও ইমরুল কায়েস। তৃতীয় উইকেটে ৮৪ রানের জুটি গড়েন তারা। ওয়ানডে স্টাইলেই খেলেছেন ইমরুল। তবে হাফ-সেঞ্চুরির দোড়গোড়ায় গিয়ে থেমে যান তিনি। ৫৫ বলে ৭টি চারে ৪৯ রান করেন ইমরুল। এ জুটি ভাঙেন খালেদ আহমেদ।
টেস্ট মেজাজে খেলা মাহমুদুল হাফ-সেঞ্চুরি তুলে আউট হন। ১০১ বলে ৬টি চারে ৫৮ রান করে স্পিনার তাইজুল ইসলামের বলে ফিরেন মাহমুদুল। ১৪৮ রানে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে মাহমুদুল বিদায় নেওয়ার পর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও নুরুল হাসান সোহান। চতুর্থ উইকেটে মাহমুদুুলের সাথে ৫৬ রান যোগ করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ।
উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানকে দলকে জয়ের কাছাকাছি রেখে ফিরেন মাহমুদউল্লাহ। তৎক্ষণে ক্যাপ্টেন্স নক খেলে ফেলেছেন তিনি। ৮৭ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬৭ রান করেন মাহমুদউল্লাহ।
দলের জয় থেকে ৯ রান দূরে থাকতে মাহমুদউল্লাহ আউট হলে ম্যাচ শেষ করে আসার সুযোগ পান সাব্বির রহমান। তবে সুযোগটি হাতছাড়া করেন তিনি। ৩ রান করে ফিরেন তিনি। তবে ৩৭ বলে অপরাজিত ২৬ রান করে ৫ বল বাকি থাকতে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন সোহান।
অন্যপ্রান্তে খালি হাতে সোহানের সঙ্গী ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তামিম একাদশের সাইফউদ্দিন ৪৯ রানে ৩ উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
তামিম একাদশ : ২২১/৮, ৫০ ওভার (রাব্বি ৬২, অঙ্কন ৫৭, মোসাদ্দেক ৪০, সাইফউদ্দিন ৩৮; রুবেল ৪/৩৪)
মাহমুদউল্লাহ একাদশ : ২২২/৬, ৪৯.১ ওভার (মাহমুদউল্লাহ ৬৭, মাহমুদুল ৫৮, ইমরুল ৪৯; সাইফউদ্দিন ৩/৪৯)।
ফল : মাহমুদউল্লাহ একাদশ ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : রুবেল হোসেন
সেরা ব্যাটসম্যান : মাহমুদুল হাসান জয়
সেরা বোলার : রুবেল হোসেন
সেরা ফিল্ডার : লিটন কুমার দাস।
[sportsmail24.com এর ওয়েবসাইট এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও ব্রাউজ করে পড়তে পারবেন। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস থেকেও খেলাধুলার সকল নিউজ পড়তে পারবেন। ইনস্ট্রল করুন স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস ]