মোহাম্মদ আশরাফুল, বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রথম সুপারস্টার হিসেবে রয়েছে তার নাম। তবে ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে গায়ে মেখেছেন কলঙ্কের দাগ। যদিও তার জন্য শাস্তি ভোগ করে মুক্তি পেয়েছেন ২০১৮ সালে।
পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ২০১৮ সালে ১৩ আগস্ট সবধরনের ক্রিকেট খেলার জন্য মুক্ত হয়েছে আশরাফুল। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেট খেললেও জাতীয় দলে ফেরা হয়নি তার। তবে এখনো আশা ছাড়েননি তিনি। টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরি করার রেকর্ডধারী আশরাফুলের আশা, ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটের মধ্যে টেস্ট ক্রিকেট দিয়েই আবারও জাতীয় দলের ফিরবেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লাইভে এসে এমন ইচ্ছার কথা জানান আশরাফুল।জানান, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার জন্য বর্তমানে তিনি ফিট রয়েছেন। সুযোগ পেলে আরও ৩-৪ বছর দেশের জন্য ক্রিকেটে সার্ভিস দিতে চান।
এক ভক্তের প্রশ্নে আশরাফুল বলেন, ‘আমারও এখন ফাস্ট গোল সেটাই (টেস্টে ফেরা) যে, আমি লঙ্গার ভার্সন দিয়ে যেন ঢুকতে (জাতীয় দলে) পারি। টেস্ট ক্রিকেট দিয়ে যেন ঢুকতে পারি। কারণ, আমি মনে করি, টেস্ট ক্রিকেটে ঢুকতে পারলে চাপট খুব কম। ওয়ানডে বলেন, টি-টোয়েন্টি বলেন একটা চাপ থাকে রান তাড়ার। টেস্ট ক্রিকেটে ওই তাড়াটা থাকবে না। সময় নিয়ে যদি সেট হতে পারেন লম্বা ইনিংস খেলা সম্ভব। আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে, আমি যদি কামব্যাক করতে পারি তাহলে সেটাই আমার ইচ্ছা।’
করোনার কারণে টেস্ট সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের শ্রীলঙ্কা সফর শঙ্কায় রয়েছে। এই সিরিজ দিয়েই জাতীয় দলে ঢুকার ইচ্ছা ছিল মোহাম্মদ আশরাফুলের। তিনি বলেন, ‘আমার খুব ইচ্ছা ছিল সত্যি কথা, শ্রীলঙ্কা সিরিজ দিয়েই হয়তোবা আমি...। আমার একটা প্ল্যান ছিল, নভেম্বরে আমি যখন বিপিএলে সুযোগ পাইনি তখন থেকেই নিয়মিত অনুশীলন করে ৭৩ থেকে ৬০ কেজিতে নিয়ে এসেছিলাম (নিজের ওজন)। ১৩ কেজি ওজন কমিয়েছিলাম। তারপরে বিসিএল খেললাম, সেখানে পাঁচ ইনিংসে দুইশ প্লাস রান করেছিলাম। তারপর মাত্র এক ম্যাচের পর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ বন্ধ হয়ে গেল।’
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলে জাতীয় দলে খেলার যোগ্যতার প্রমাণ দিতে চেয়েছিলেন আশরাফুল। বলেন, ‘আমার খুব ইচ্ছা ছিল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ভালো খেললে (২০১৮ সালের মতো) তাহলে হয়তোবা আমার যেটা ইচ্ছা (শ্রীলঙ্কা সফর) সেটা হতো। শ্রীলঙ্কা যেহেতু আমার খুব পছন্দের একটা টিম।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেকে ফেভারিট মনে করেন তিনি। বলেন, ‘শ্রীলঙ্কায় ২০০১ সালে অভিষেকে সবচেয়ে কম বয়সে টেস্ট সেঞ্চুরি করেছি। আমার ক্যারিয়ারের ৬টা সেঞ্চুরির মধ্যে পাঁচটাই শ্রীলঙ্কার সাথে এবং তাদের মাঠে তিনটা সেঞ্চুরি। অলমোস্ট ১০৯০ রান করেছি। শ্রীলঙ্কার সাথে যখনই খেলেছি আমার মনের ভেতরে আলাদা একটা কনফিডেন্স থাকে। আমার ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংসটাও ১৯০ রানে, সেটাও শ্রীলঙ্কার সাথে।’
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ না হওয়ায় নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারেননি আশরাফুল। এ জন্য তার কণ্ঠে আক্ষেপও শোনা যায়। নিজেকে আনলাকি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শুধু আমি না, সবাই। কারণ, এ বছর (২০২০ সাল) আমাদের ১৩টা টেস্ট সিরিজ ছিল। তবে আমি জুন-জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা সিরিজ নিয়ে খুব আশাবাদী ছিলাম। বাংলাদেশ টিম শ্রীলঙ্কা সফরে যাবে তখন হয়তোবা আমার একটা সম্ভাবনা থাকবে। যেহেতু আমার ভালো এক্সপেরিয়েন্স আছে, ওদের সাথে আমার খেলার ভালো রেকর্ডও আছে। সে কারণে আমি একটা চিন্তা-ভাবনাও করেছিলাম।’
‘কিন্তু আসলে দুর্ভাগ্য যে, এই সময়ে কোভিড-১৯ জন্য সব দেশের খেলা বন্ধ ছিল। আমাদেরও বন্ধ ছিল। তো শুভ কামনা রইলো, বাংলাদেশ টিম এবং যারা যাবে, আশা করি সফরটি হবে। আমার জন্য দোয়া রাখবেন, যেটা স্বপ্ন ছিল সেটা হয়নি। দোয়া রাখবেন যেন সামনে সেটা হয়, আমার সর্বোচ্চটা দেওয়া চেষ্টা করবো। আমি ওইভাবেই এখন নিজেকে তৈরি করছি।’
মোহাম্মদ আশরাফুল জাতীয় দলের হয়ে সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। নিষেধাজ্ঞার আগ পর্যন্ত ৬১টি টেস্ট ম্যাচের ১১৯ ইনিংসে ব্যাট হাতে মোট রান করেছেন ২৭৩৭। যেখানে গড় রান ২৪। টেস্ট ক্যারিয়ারে ৬টা সেঞ্চুরির পাশাপাশি ৮টি হাফ-সেঞ্চুরি রয়েছে তার।
[sportsmail24.com এর ওয়েবসাইট এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও ব্রাউজ করে পড়তে পারবেন। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস থেকেও খেলাধুলার সকল নিউজ পড়তে পারবেন। ইনস্ট্রল করুন স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস ]