কয়েকদিন ধরে ক্রিকেট জগতে আলোচনা কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ইংল্যান্ডের ডান’হাতি পেসার জোফরা আর্চার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট শেষে করোনাভাইরাসের জৈব সুরক্ষা নিয়ম ভঙ করে দল থেকে এক বার বাদ পড়েই আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে আসেন তিনি।
পরিবারের সাথে দেখা করে নিয়ম ভঙ করায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের দল থেকে বাদ পড়েন আর্চার। এরপর পাঁচ দিনের জন্য বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকেন তিনি। পরে দু’বার করোনা পরীক্ষা করে নেগেটিভ হন তিনি। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টে খেলার অনুমতি পান আর্চার।
কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন আর্চার। সেখানে তাকে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলে একটি কলামে বর্ণবাদে শিকারের কথা তুলে ধরেন আর্চার।
তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিনে ধরে আমি ইনস্টাগ্রামে অনেক বাজে ব্যবহার পেয়েছি। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অনেক হয়েছে, আর নয়। ইসিবি কাছে আমি লিখিত অভিযোগ করেছি। ইসিবি কি করে, সেটি দেখে তারপর ব্যবস্থা নিবো। এ সপ্তাহটা আমাকে বুঝিয়েছে, আমি যাই করি না কেন, আমাকে নিয়ে সমালোচনা হবেই। এমনকি বর্তমান পরিস্থিতিতে আমি হাঁচি দিলেও, সেটি নিয়েও ব্যাপাক আলোচনা হবে। আমি গত কয়েকদিনে অনেক বেশি নেতিবাচকতা দেখতে পেয়েছি। তাই এবার সমালোচকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এক সপ্তাহের মধ্যে প্রথমে করোনাভাইরাসের জৈব সুরক্ষা নিয়ম ভঙ এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সমালোচনায় আর্চারের আচরণ মোটেও ভালো লাগেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি পেসার ও ধারাভাষ্যকার মাইকেল হোল্ডিংয়ের। আর্চারের প্রতি হোল্ডিংয়ের পরামর্শ, মাঠের বাইরের বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা-ভাবনা না করা। সবকিছুকে পেছনে ফেলে ক্রিকেটে মন দেওয়া ।
স্কাই স্পোর্টসকে হোল্ডিং বলেন, ‘এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে,গত সপ্তাহটি আর্চারের জন্য বেশ কঠিন ছিল। তবে মাঠের বাইরের বিষয় নিয়ে সে বেশি চিন্তা-ভাবনা করেছে। তার উচিত মাঠের বাইরের বিষয় নিয়ে না ভাবা। কারণ সে পেশাদার ক্রিকেটার। একটি দেশের বিশ্বকাপ জয়ে ভূমিকা ছিল তার। তাই ক্রিকেটে মন দেওয়াটাই আর্চারের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।’
হোল্ডিং আরও বলেন, ‘তার উচিত দলের প্রতি মনোযোগী হওয়া, বাইরের হইচই সব ভুলে যাওয়া এবং দলের জন্য নিজের কাজটুকু মন দিয়ে করা। সে প্রতিভাবান ও দুর্দান্ত এক সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়। ভবিষ্যতে নিজেকে কোন উচ্চতায় দেখতে চায় সে, সেদিকেই মনোযোগ দেওয়া উচিত তার।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আর্চারকে নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। বর্ণবাদের শিকারের ধাক্কা থেকে সামলে ওঠা কঠিন বলে মানছেন হোল্ডিং। তিনি বলেন, ‘আর্চার জানিয়েছে সে বর্ণবাদের শিকার। এ কারণে তার মানসিকভাবে শক্ত হওয়া কঠিন। গায়ের রঙ, ধর্ম, বা শারীরিক যে কোনো কিছু নিয়ে যখন খোঁচা দেওয়া হয় তখন তা সামলে ওঠা কঠিনই। তারপরও সব ভুলে নিজের কাজে মন দেওয়া উচিত আর্চারের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে সামলানো কঠিন। কখনও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার অ্যাকাউন্ট ছিল না। এসব সামলাতে হলে মানসিকভাবে খুব শক্ত হতে হয়। আর্চারেরও শক্ত হতে হবে।’
একটি ম্যাচ না খেললেও ইংল্যান্ড দলের পরিবেশের সাথে মিশে যেতে খুব বেশি সমস্যা হবে না আর্চারের। হোল্ডিং বলেন, ‘সত্যি বলতে আমার মনে হয় না কাজটা কঠিন হবে। যে পরিবেশে সে আছে সেখানে তার অনেক ভালো বন্ধু রয়েছে। বেন স্টোকস তার কাছের একজন, যে কি-না খুবই আন্তরিক ও ইতিবাচক মানসিকতার একজন মানুষ।’
[sportsmail24.com এর ওয়েবসাইট এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও ব্রাউজ করে পড়তে পারবেন। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস থেকেও খেলাধুলার সকল নিউজ পড়তে পারবেন। ইনস্ট্রল করুন স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস ]