প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস পরবর্তী ব্যক্তিগত অনুশীলনে মিরপুরের শের-ই-বাংলায় যোগ দিয়েছেন টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদ। মুশফিক-শফিউলরা ১২৩ দিন পর গত রোবাবর (১৯ জুলাই) মাঠে ফিরলেও তাসকিন ফিরলেন আরও চারদিন পর।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) বেলা সাড়ে এগারোর পর মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দেখা মিলে তাসকিন আহমেদের। ব্যক্তিগত অনুশীলনের নিজের প্রথমদিন রানিং করেই কাটিয়েছেন তাসকিন আহমেদ।
করোনা বিরতির মাঝের চার মাস বাসায় থেকেই নিজেকে ফিট রাখতে চেষ্টা করেছেন তিনি। মাঝে দৌড়ানোর জন্য বালুর মাঠেও ছুটে গিয়েছিলেন তাসকিন। তবে টানা চার মাস পর মিরপুরে অনুশীলন করে দারুণ খুশি এ টাইগার পেসার।
অনুশীলন শেষে বিসিবির দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় করোনা পরবর্তী মাঠে ফেরা, নিজের ফিটনেস, ক্রিকেটের বদলে যাওয়া নিয়ম এবং নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন তাসকিন আহমেদ।
ভিডিও বার্তায় তাসকিন বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, ভালো লাগতেছে, বিশেষ করে মিরপুর স্টেডিয়ামে ঢুকতে পেরেছি (অনুশীলন করার জন্য)। আজকে রানিং করেছি, ভালো লাগছে। তার থেকেও ভালো লাগছে স্টেডিয়ামে ঢুকতে পেরেছি, ড্রেসিং রুমে এতদিন পরে ঢুকতে পেরেছি। এটা একটা অন্যরকম ভালো লাগা।’
‘বাসা থেকে এতদিন যতটুকু পারছি ট্রেনিং করছি কিন্তু মিরপুর স্টেডিয়ামে আসার সুযোগ হয়নি। আজকে যখন প্রায় পাঁচ মাস পর মিরপুর স্টেডিয়ামে ঢুকতে পারলাম, এখন স্বস্তি লাগতেছে’ -যোগ করেন তিনি।
খেলা না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘খেলোয়াড় হিসেবে মাঝে মধ্যে অস্থির হয়ে যেতাম, মানে খেলতে পারতেছি না। ঘরে থাকা, হয়তো একটু ট্রেনিং করা কিন্তু একি কাজ। আমার কাজি খেলাধুলা করা কিন্তু আমি খেলতেই পারতেছি না। অনেকের হয়তো জব শুরু হয়েছে বা অন্য কাজ করছে কিন্তু আমার খেলাই বন্ধ। ডেফেনেটলি খারাপ লাগছে। এখন আল্লাহ যদি চান, যত দ্রুত খেলা শুরু এবং দেশের পরিস্থিতি ভালো হোক, এখন এটাই কামনা।’
অনুশীলন শুরুর অনুমতি এবং খেলা বন্ধ থাকলেও বাসায় অনুশীলন সামগ্রি দেওয়ার জন্য বিসিবিকে ধন্যবাদ জানান তাসকিন। বলেন, ‘বিসিবিকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুশীলনের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য এবং প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের বাসায় আমরা যেন ইন্ডিভিজুয়ালি এক্সারসাইজ করতে পারি- এর জন্য ইকুইপমেন্ট পাঠানো হয়েছে। বিসিবি যতটুকু পারছে করছে, আমরাও করছি; এখন নিজেদের তরফ থেকে যতটুকু সম্ভব সাবধানতা অবলম্বন করা। আমি শিউর যে, সবাই সেটা (সাবধান থাকা) করছেও। কারণ, দিন শেষে সবাই চাচ্ছে খেলা যত দ্রুত সম্ভব শুরু হোক।’
করোনার কারণে ক্রিকেটের বেশ কিছু নতুন নিয়মের বিষয়ে তাসকিন বলেন, ‘সবকিছু (নতুন আইন) পেসারদের বিপক্ষেই যাচ্ছে। বল শাইন করা কমে যাচ্ছে, কারণ বলে থুথু লাগানো যাবে না। থুথুটা যদিও বড় বিষয় না, তবে পুরোনো বলে শাইন করানোটা বড় ইস্যু। যেহেতু এটা এখন বন্ধ হয়েছে, সামনে হয়তো বল শাইন করানোর জন্য কোন পদ্ধতি বের হবে।’
তিনি বলেন, ‘নতুন নিয়ম বের হওয়ার পর ক্রিকেট খেলা হয় নাই। ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট দেখলাম। সবাই হাত মেলাচ্ছেন একটু ডিফারেন্টভাবে, বলে শাইন করতেছে ডিফারেন্টভাবে। আশা করি, আমাদেরও যখন খেলা শুরু তখন কোন না কোন ডিফারেন্ট ওয়ে বের হবে। এর মধ্যে থেকেই এডজাস্ট করতে হবে, যদিও একটু ডিফিকাল্ট পেসারদের জন্য। তারপরও এর মধ্যে থেকেই এডজাস্ট করতে হবে।’
টাইগার পেসার বলেন, ‘যখন থেকে লকডাউন শুরু হয়েছে তখন থেকেই একটার পর একটা ম্যাচ স্থগিত হওয়া শুরু হয়েছে। একদিন শ্রীলঙ্কা সিরিজ স্থগিত, তারপর নিউজিল্যান্ড সিরিজ। এখন দেখলাম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নির্দিষ্ট সময়ে হচ্ছে না। তো এই জিনিসগুলো ডেফিনেটলি কষ্ট লাগে, যখন দেখি। এর মধ্য থেকেও মানতে হবে, আসলে সবার জন্যই তো একই রকম।’
নিজের ফিটনেস নিয়ে তাসকিন বলেন, ‘আমার যেসব উইকন্যাস আছে তার মধ্যে ফিটসেন-ফিল্ডিং অন্যতম। এ দুইটা জিনিস নিয়ে বেশি কাজ করার চেষ্টা করছি। বোলিংয়ে কোচদের সাথে কথা বলে যতটুকু পারছি চেষ্টা করছি। যাতে এ জিনিসগুলো ফিটসেন-ফিল্ডিং, এসব নিয়ে কাজ করছি। লকডাউনের পরে যেন আমি আমার ফিটনেসে ইমপ্রুফ নিয়ে আসতে পারি, যেটা আগে ছিল না বা আগের চেয়ে যেন বেটার অবস্থানে নিয়ে আসতে পারি। যাতে আমি ফাইট করতে পারি, আগের মতো যেন সব জায়গায় সুযোগ হয় এটাই আমার প্রত্যাশা।’
[sportsmail24.com এর ওয়েবসাইট এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও ব্রাউজ করে পড়তে পারবেন। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস থেকেও খেলাধুলার সকল নিউজ পড়তে পারবেন। ইনস্ট্রল করুন স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস ]