রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ওপর দিয়ে ইতিমধ্যে ঝড়-তুফান বয়ে গেছে। ক্রিকেটবিশ্বের রথী-মহারথীরা যে যার মতো করে তার মানকাড নিয়ে মন্তব্য করেছেন। বিবৃতি দিয়েছে আইসিসি, বিসিসিআই, এমসিসির মতো ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলো।
তবে সেই অর্থে মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন বিতর্কিত মানকাড রানআউটের শিকার বাটলার। অবশেষে ঘটনার ৯ দিন পর মুখ খুললেন তিনি। বললেন, অবশ্যই আম্পায়াররা ভুল সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। নিয়মানুযায়ী এভাবে আউট করা গেলেও অশ্বিন সেই বল করার ক্ষেত্রে ইচ্ছে করেই বেশি সময় নেয়।
গেল মাসের শেষ দিকে রাজস্থান ইনিংসের ১৩তম ওভারে বল হাতে আক্রমণে ছিলেন অশ্বিন। তিনি ওভারের পঞ্চম বলটি করতে উদ্যত হলে ডেলিভারির আগেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যান ননস্ট্রাইক প্রান্তে থাকা বাটলার। এ ইংলিশ ব্যাটসম্যানের অসচেতনতার সুযোগে স্ট্যাম্পের বেলস ফেলে দিয়ে রানআউটের আবেদন করেন অশ্বিন।
টেলিভিশন রিপ্লে দেখে, সবাইকে অবাক করে হতভম্ব বাটলারকে আউট ঘোষণা করেন থার্ড আম্পায়ার। এর সঙ্গে সঙ্গে জমে ওঠে বিতর্ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে যার মতো অশ্বিনকে ধুয়ে দেন। প্রশ্ন ওঠে মানকাড আউট নিয়েও। সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটারদের সমালোচনার মুখে বিশ্ব ক্রিকেট সংস্থাগুলোকেও এ নিয়ে কথা বলতে হয়।
তবে মূল চরিত্র বাটলারের বিবৃতি পাওয়া যায়নি। সদ্য ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, অবশ্যই নিয়মের মধ্যে মানকাড আউট থাকতে হবে। কারণ একজন ব্যাটসম্যান আগেই পিচের মাঝে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না। তবে আমি মনে করি, বোলার বল ছাড়ার মুহূর্ত নিয়ে নিয়মে যেটা লেখা আছে তা খানিকটা ঘোলাটে। বিষয়টা আরও স্পষ্ট হওয়া উচিত।
অশ্বিনের মানকাডকে অনেকে ক্রিকেটীয় চেতনার পরিপন্থী বলছেন। তবে একে সেই আতশি কাচে ফেলতে নারাজ বাটলার। তার মতে, ক্রিকেটীয় চেতনার বিষয়টি একেকজনের কাছে একেকরকম।
তবে তার দাবি, অশ্বিন যখন বল ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন পপিং ক্রিজেই ছিলেন তিনি।
টুর্নামেন্টের সূচনালগ্নে এমন ঘটনা হতাশাজনক উল্লেখ করে বাটলার বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে এমন ঘটনায় আমি হতবাক হয়ে পড়ি। আউটের এমন ধরনটা আমার মোটেও ভালো লাগেনি। আমার মনে হয়, আসরের শুরুতে এমন উদাহরণ খুবই বাজে নজির হয়ে থাকবে।
আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে সাজঘরে ফিরলেও মন থেকে সেটি মেনে নেননি ইংলিশ ব্যাটসম্যান। পরেও সেই রেশ থেকেছে। তিনি বলেন, আমি সেটি মেনে নিইনি। কিন্তু তখন আমার কিছু করার ছিল না। পর দিন আমি বিষয়টা নিয়ে ভাবলাম এবং ঠিক করলাম, একই ঘটনা আবার ঘটতে দেয়া যাবে না।
বিতর্কিত আউটের ম্যাচে ৪৩ বলে ৬৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন বাটলার। তার দলও ছিল জয়ের পথে। কিন্তু মানকাড হয়ে তিনি সাজঘরে ফিরলে হোঁচট খায় রাজস্থান। হুড়মুড় করে ধসে পড়ে দলটির ব্যাটিং লাইনআপ। শেষ পর্যন্ত নাটকীয় জয় তুলে নেয় পাঞ্জাব। বাটলার নিজেও ঢুকে যান ব্যর্থতার বৃত্তে। পরের দুই ম্যাচে আউট হন ৫ ও ৬ রান করে। তবে সবশেষ ম্যাচে ফের রানে ফিরেছেন তিনি। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫৯ রানের ঝলমলে ইনিংস।
তা হলে কী মানকাড নিয়ে বেশি সতর্কতা দেখাতে গিয়ে ব্যাটিংয়ে মনোযোগ হারিয়ে ফেলেছিলেন? তিনি বলেন, পরের দুটি ম্যাচ বেশ হতাশাজনক ছিল। কারণ আমি মানকাড থেকে সতর্ক থাকতে গিয়ে মনোযোগ ধরে রাখত পারছিলাম না। এ ধরনের আউট নিয়েও ভাবতে হচ্ছে- এটি খুবই অস্বাভাবিক।