বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ষষ্ঠ আসরের ফাইনালে ঢাকা ডায়নামাইটসকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। সাকিবের ঢাকাকে ১৭ রানে হারায় ইমরুল-তামিমের কুমিল্লা।
বিপিএলের ৬ষ্ঠ আসরের ফাইনালে শুক্রবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায় ঢাকা ডায়নামাইটস। ব্যাটিংয়ে নেমে ঝড়ের আভাস দিয়েছিলেন এভিন লুইস। তবে এক বাউন্ডারিতে ৬ রানেই তিনি রুবেল হোসেনের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে যান।
হাত খুলে খেলতে থাকেন অপর ওপেনার তামিম ইকবাল। এনামুল হক বিজয়কে নিয়ে গড়ে তোলেন ৮৯ রানের দারুণ জুটি। ৩০ বলে ২৪ রান করা এনামুল সাকিব আল হাসানের শিকার হন। উইকেটে এসেই রান-আউট হয়ে ফিরেন শামসুর (০)।
৩১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন দেশসেরা ওপেনার। চতুর্থ বাংলাদেশি হিসেবে বিপিএলে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিতে তামিম ইকবাল সময় নেন ৫০ বল। হাঁকান ৮টি চার এবং ৭টি ছক্কা। ইমরুল কায়েসের সঙ্গে গড়েন অবিচ্ছিন্ন ১০০ রানের জুটি। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯৯ রানের পাহাড় গড়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
তামিম ৬১ বলে ১০ চার ১১ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ১৪১ রানে। বিপিএলে এটাই কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ ইনিংস। ইমরুল খেলেন ২১ বলে ১৭ রানের ইনিংস।
১৯৯ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই মারকুটে সুনিল নারাইনকে রান-আউট করে দেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। অপর ওপেনার উপুল থারাঙ্গার সঙ্গী হয়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন রনি তালুকদার। ২৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন রনি। হাফ সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে ২৭ বলে ৪ চার ৩ ছক্কায় ৪৮ রানে উপুল থারাঙ্গার ইনিংস থামে তার স্বদেশী থিসারা পেরেরার বলে।
বল হাতে তামিমের কাছে বেদম পিটুনি খেয়েছেন সাকিব। ব্যাট হাতে মাত্র ৩ রান করে ওয়াহাব রিয়াজের বলে সেই তামিমের হাতেই ধরা পড়েন ঢাকা ডায়নামাইটস অধিনায়ক। রনি তালুকদারের ৩৮ বলে ৬ চার ৪ ছক্কায় ৬৬ রানের ইনিংসটি শেষ হয় রান-আউট হয়ে। উইকেটে জুটি বাঁধেন দুই ক্যারিবীয় দানব আন্দ্রে রাসেল এবং কায়রন পোলার্ড। তবে জুটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৩ বলে ৪ রান করে পেরেরার বলে ওয়াহাব রিয়াজের তালুবন্দি হন আন্দ্রে রাসেল। তার স্বদেশি কায়রন পোলার্ডও (১৩) শিকার হন ওয়াহাব রিয়াজের। এবারও ক্যাচ নেন তামিম।
ঢাকা ডায়নামাইটসের পরাজয় তখন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। শুভাগত হোম সাইফ উদ্দিনের বলে 'ডাক' মারেন। শেষদিকে নুরুল হাসান আর মাহমুদুল হাসান কিছু পাওয়ার হিটিং করে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন। ১৫ বলে ১৮ করে ফেলা নুরুলকে এনামুলের গ্লাভসবন্দি করেন ওয়াহাব রিয়াজ। জয়ের জন্য শেষ ওভারে ঢাকার দরকার ছিল ২২ রানের। ইমরুল কায়েস বোলিংয়ে আনেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে। তৃতীয় বলেই এই তরুণ ফিরিয়ে দেন ৮ বলে ১৫ রান করা মাহমুদুলকে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৮২ রানে থামে ঢাকা ডায়নামাইটস। ১৭ রানের দারুণ জয়ে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা ঘরে তোলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট: বল হাতে সর্বোচ্চ ২৩ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতে করেছেন ৩০১ রান। নামের পাশে রয়েছে দুটি হাফ সেঞ্চুরি। ব্যাটে-বলে অনন্য পারফরম্যান্সের সুবাদে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন সাকিব আল হাসান।
ফাইনালের ম্যাচসেরা: ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে মাত্র ৫১ বলে ১০টি চার ও ১১টি ছক্কায় ১৪১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হয়েছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের তামিম ইকবাল।