বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ষষ্ঠ আসরে ঢাকা ডায়নামাইটসকে টানা চতুর্থবারের মত হারিয়ে নিজেদের মাঠে প্রথম জয়ের স্বাদ পেল চিটাগং ভাইকিংস। টুর্নামেন্টের ৩৭তম ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটসকে ১১ রানে হারিয়েছে চিটাগং।
আসরে চট্টগ্রামের মাটিতে প্রথম তিন ম্যাচেই হেরেছে ভাইকিংস। চতুর্থ ম্যাচে এসে প্রথম জয় পেল তারা। তবে এই জয়ে ১১ খেলায় ৭ জয় ও ৪ হারে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে থাকলো চিটাগং ভাইকিংস। অন্যদিকে ১০ খেলায় ৫টি করে জয় ও হারে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানেই থাকলো ঢাকা।
বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ম্যাচে ব্যাট হাতে দলকে ৪২ রানের সূচনা এনে দেন দলের দুই ওপেনার আফগানিস্তানের মোহাম্মদ শাহজাদ ও দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যামেরন ডেলপোর্ট। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৫ বল মোকাবেলায় সুনিল নারাইনের বলে আউট হওয়ার আগে ২১ রান করেন শাহজাদ।
তিন নম্বরে ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি ইয়াসির আলী। ২০ বলে ১৯ রান আলীও শিকার হন নারাইনের। এরপর দলকে বড় জুটি উপহার দেন ডেলপোর্ট ও অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ৪৬ বলে ৭৯ রানের জুটি গড়েন তারা। এরমধ্যে ২৪ বলে ৪৩ রান অবদান রেখে ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হন মুশফিক। ৪টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকানো ইনিংস খেলে আন্দ্রে রাসেলের শিকার হন মুশি।
ইনিংসের প্রথম বলে মুশফিককে শিকার করার পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে যথাক্রমে ডেলপোর্ট ও শ্রীলঙ্কার দাসুন শানাকাকে আউট করে হ্যাট্টিক পূর্ণ করেন ঢাকার ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড় আন্দ্রে রাসেল। ডেলপোর্ট ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫৭ বলে ৭১ রান করেন। শানাকা শূন্য হাতে ফিরেন।
ইনিংসের শেষ বলে ছক্কা মেরে চিটাগং-এর সংগ্রহকে ৫ উইকেটে ১৭৪ রানে নিয়ে যান জিম্বাবুয়ের খেলোয়াড় সিকান্দার রাজা। ২ বলে ৬ রানে অপরাজিত থাকেন রাজা। ১ রান নিয়ে তার সঙ্গী ছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন। ঢাকার রাসেল ৩৮ রানে ৩ উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১৭৫ রানের লক্ষ্যে শুরু থেকেই চাপে পড়ে যায় ঢাকা। ২৩ রানের মধ্যে উপরের সারির তিন ব্যাটসম্যানকে হারায় তারা। এরপর চতুর্থ উইকেটে জুটি বেধে পরিস্থিতিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান। ৫০ রানের জুটি গড়ে ঢাকাকে ম্যাচে ফেরান সাকিব ও নুরুল।
নিজের নামের পাশে ৩৩ রান রেখে ডেলপোর্টের শিকার হন নুরুল। তার বিদায়ের পরের বলেই সাকিবের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউট হন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইরন পোলার্ড। রানের খাতাই খুলতে পারেননি পোলার্ড।
পোলার্ডের এমন বিদায়কে আমলে না নিয়ে ঢাকার রানের গতি বাড়ান আরেক ক্যারিবিয় রাসেল। তাকে সঙ্গ দিতে থাকেন সাকিব। ব্যক্তিগত ২২ রানে বোল্ড হয়েও নো-বলের কারনে জীবন যান রাসেল। কিন্তু বেশি দূর যেতে পারেননি তিনি। ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৩ বলে ৩৯ রান করে শ্রীলঙ্কান দাসুন শানাকার বলে আউট হন রাসেল।
রাসেল ফিরে গেলে ঢাকার জয়কে নিশ্চিত করার দায়িত্ব বর্তায় সাকিবের উপর। অধিনায়ক তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন। ১৯তম ওভারে অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে প্যাভিলিয়নে ফিরেন হাফ সেঞ্চুরি করা সাকিব। ৬টি চারে ৪২ বলে ৫৩ রান করা সাকিবও শিকার হন শানাকার। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬৩ রান করে ঢাকা। চিটাগং’এর আবু জায়েদ ৩ উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন চিটাগং ভাইকিংসের ডেলপোর্ট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চিটাগং ভাইকিংস : ১৭৪/৫, ২০ ওভার (ডেলপোর্ট ৭১, মুশফিক ৪৩, রাসেল ৩/৩৮)
ঢাকা ডায়নামাইটস : ১৬৩/৯, ২০ ওভার (সাকিব ৫৩, রাসেল ৩৯, আবু জায়েদ ৩/২৫)
ফল : চিটাগং ভাইকিংস ১১ রানে জয়ী
ম্যাচ সেরা : ক্যামেরন ডেলপোর্ট (চিটাগং ভাইকিংস)।