অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও ফ্রাইলিঙ্কের ব্যাটিং নৈপুণ্যে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ষষ্ঠ আসরের চতুর্থদশ ম্যাচে দুর্দান্ত এক জয়ের স্বাদ নিলো চিটাগং ভাইকিংস। আজ (রোববার) ঢাকা পর্বের শেষ ম্যাচে চিটাগং ৪ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে।
ফলে ৪ খেলায় ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট সংগ্রহে থাকলো চিটাগংয়ের। সমান সংখ্যক ম্যাচে ২টি করে জয় ও হারে ৪ পয়েন্ট সংগ্রহে থাকলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেয় চিটাগং ভাইকিংস। ব্যাট হাতে কুমিল্লাকে ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি কুমিল্লার ওপেনার তামিম ইকবাল। ২ বল মোকাবেলা করে দক্ষিণ আফ্রিকার রবি ফ্রাইলিংকের শিকার হয়ে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
তামিমকে হারানার পর দলের সংগ্রহ বড় করার চেষ্টা করেন পরের তিন ব্যাটসম্যান ওয়েস্ট ইন্ডিজের এভিন লুইস, এনামুল হক বিজয় ও অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। লুইস ব্যক্তিগত ৩৮ রানে আহত অবসর, আনামুল ১০ ও ইমরুল ২৪ রান করে ফিরেন। লুইসের ৩৪ বলের ইনিংসে ৬টি চার ছিলো।
এরপর মিডল-অর্ডারের দুই ব্যাটসম্যান ইংল্যান্ডের লিয়াম ডসন ও পাকিস্তানের শহিদ আফ্রিদি ২ রান করে ফিরে গেলে চাপে পড়ে যায় কুমিল্লা। এ পর্যায়ে ৮৬ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে তারা।
তবে এই চাপকে আমলে না নিয়ে চিটাগংয়ের বোলারদের উপর ব্যাট হাতে ঝড় বইয়ে দেন শ্রীলঙ্কার পেরেরা। ছক্কা বন্যা বইয়ে দেন পেরেরা। ৮টি ছক্কা ও ৩টি চারে ২৬ বলে অপরাজিত ৭৪ রান করেন পেরেরা। তার সঙ্গী মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন অপরাজিত থাকেন ২৬ রানে।
ফ্রাইলিঙ্কের করা ইনিংসের ১৯তম ওভারে ৪টি ছক্কা ও ১টি চার ও ২ রানে সর্বমোট ৩০ রান নেন পেরেরা। এছাড়া ১৮তম ওভারে ১৮, ১৫তম ওভারে ২১ রান আসতে বড় অবদান রাখেন পেরেরা। চিটাগং ভাইকিংসের খালেদ আহমেদ ৩টি উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১৮৫ রানের টার্গেটে শুরুটা চমৎকারই ছিলো চিটাগং ভাইকিংসের। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যামেরন ডেলপোর্টকে নিয়ে ৫৮ রানের সূচনা করেন আফগানিস্তানের মোহাম্মদ শাহজাদ। এজন্য ৩২ বল মোকাবেলা করেন তারা। তবে দলীয় স্কোর ৭০ রানে পৌছাতেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে চিটাগং।
ডেলপোর্টের বিদায়ে প্রথম উইকেট হারায় চিটাগং। ১১ বলে ১৩ রান করেন ডেলপোর্ট। তিন নম্বরে ৪ রানের বেশি করতে পারেননি ইয়াসির আলি। ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৭ বলে ৪৬ রান করেন শাহজাদ।
এরপর আফগানিস্তানের নাজিবুল্লাহ জাদরানকে নিয়ে ৪৭ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। এই জুটিতে মাত্র ১৩ রান অবদান রেখে ফিলেন জাদরান। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন মুশি। তবে শেষ পাঁচ ওভারে ৬৪ রান দরকার পড়ে চিটাগংয়ের।
১৬তম ওভারে ১১ রান, ১৭তম ওভারে ১৫ রান, ১৮তম ওভারে ১৮ রান তুলে নেন মুশফিকর ও মোসাদ্দেক হোসেন। তাই শেষ দু’ওভারে ২০ রান প্রয়োজন পড়ে চিটাগংয়ের।
তবে ১৯তম ওভারের প্রথম বলেই কুমিল্লার পেসার সাইফউদ্দিনের বলে আউট হন মোসাদ্দেক। ১২ বলে ১২ রান করেন তিনি। এরপর ক্রিজে মুশফিকের সঙ্গী হন ফ্রাইলিঙ্ক। তবে রান তোলার কাজটা করেন মুশি।
১৯তম ওভারে একটি করে চার ও ছক্কাও মারেন মুশফিক। কিন্তু ঐ ওভারের শেষ বলে আউট হয়ে যান মুশি। তাই শেষ ওভারে ৭ রান দরকার পড়ে চিটাগংয়ের। শেষ ওভারে ডসনের করা প্রথম তিন বল থেকে ২ রান নেন ক্রিজে থাকা ফ্রাইলিঙ্ক ও নাইম হাসান। তবে চতুর্থ বলে মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মেরে চিটাগং’কে দুর্দান্ত এক জয় এনে দেন ফ্রাইলিঙ্ক।
৭টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৪১ বলে ৭৫ রান করেন মুশফিকুর। ফ্রাইলিঙ্ক ৯ ও নাইম ১ রানে অপরাজিত থাকেন। কুমিল্লার সাইফউদ্দিন ৪৫ রানে ৩ উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন চিটাগংয়ের মুশফিকুর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স : ১৮৪/৫, ২০ ওভার (পেরেরা ৭৪*, লুইস ৩৮, খালেদ ৩/৩৪)।
চিটাগং ভাইকিংস : ১৮৬/৬, ১৯.৪ ওভার (মুশফিকুর ৭৫, শেহজাদ ৪৬, সাইফউদ্দিন ৩/৪৫)।
ফল : চিটাগং ভাইকিংস ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : মুশফিকুর রহিম (চিটাগং ভাইকিংস)।