বিপিএলের পঞ্চম আসরে ৩৯তম ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ১৪ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে খুলনা টাইটান্স। আর এ জয়ে লিগ পর্বে নিজেদের সবগুলো ম্যাচ (১২ ম্যাচ) খেলা শেষে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে উঠলো খুলনা। একই সঙ্গে দ্বিতীয় স্থানে থেকে কোয়ালিফাইয়ার পর্বে খেলার দৌঁড়ে টিকে রইলো মাহমুদুল্লাহর দল।
এদিকে কোয়ালিফাইয়ার পর্বে খেলার আশা আছে ঢাকা ডায়নামাইটসেরও। আগামীকাল (বুধবার) রংপুর রাইডার্সকে হারাতে পারলে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে থেকে কোয়ালিফাইয়ার পর্বে খেলার সুযোগ পাবে সাকিবের ঢাকা। সেক্ষেত্রে তৃতীয়স্থানে নেমে যাবে খুলনা। তবে রংপুর জয় পেলে খুলনাই খেলবে কোয়ালিফাইয়ারে। তবে আজ খুলনার জয়ে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থাকার আশা শেষ হয়ে গেছে মাশরাফির রংপুর রাইডার্সের। এখন এলিমিনেটর রাউন্ডই খেলতে হবে রংপুরকে।
মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেয় খুলনা। প্রথম ৬ ওভারেই ৫৫ রান তুলে ফেলে তারা। দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন ও অস্ট্রেলিয়ার মাইকেল ক্লিঞ্জার দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন। সপ্তম ওভারের প্রথম বলে কুমিল্লার ডান-হাতি পেসার আল-আমিন হোসেনের বলে বিদায় নেন ৩৭ রান করা নাজমুল। ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান তিনি।
ঞ্জারের সাথে জুটি গড়েন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু তারা একত্রে ৩২ রানের বেশি যোগ করতে পারেননি। ২৮ বলে ২৯ রান করে থেমে যান ক্লিঞ্জার । কিছুক্ষণ পর আউট হন মাহমুদুল্লাহও। ২৩ বলে ২৩ রান করেন তিনি। তাদের বিদায়ের পর খুলনার রান তোলার গতি কমে যায়।
তবে পঞ্চম উইকেটে মারমুখী মেজাজে মাত্র ২৪ বলে ৪৭ রান যোগ করে খুলনার বড় সংগ্রহে পথ তৈরি করেন আরিফুল হক ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। আরিফুলের ২১ বলে ৩৫ ও বার্থওয়েটের ১২ বলে ২২ রানের সুবাদে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭৪ রান পায় খুলনা। আরিফুলের ইনিংসে ৪টি চার ও ১টি ছক্কা ছিল। আর ব্র্যাথওয়েট ৩টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন। কুমিল্লার আল-আমিন হোসেন ৫২ রানে ৩ উইকেট নেন।
১৭৫ রানের টার্গেটে নিজেদের ইনিংসের তৃতীয় বলেই উইকেট হারায় কুমিল্লা। ওপেনার জিম্বাবুয়ের সলোমন মির শূন্য রানে খুলনার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ’র শিকার হন। দলীয় ১ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর কুমিল্লার হাল ধরেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। খুলনার বোলারদের বিপক্ষে সেরা পারফরমেন্স দেখিয়ে ৬৩ রান যোগ করেন এ জুটি। তবে ৪ রানের ব্যবধানে দু’জনের বিদায়ে ম্যাচে ফিরে খুলনা। ৬টি চারে ৩৩ বলে তামিম ৩৬ ও ৩টি চারে ১৯ বলে ২০ রান করে ফিরেন ইমরুল।
তামিম-ইমরুল বিদায়ের পর অল্প রানে থামতে হয় ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যান জশ বাটলারকেও। ১৬ বলে মাত্র ১১ রান করেন তিনি। ফলে শেষ ৬ ওভারে ৭৮ রান প্রয়োজন পড়ে কুমিল্লার। এই প্রয়োজনটা শেষ করার দায়িত্ব পান পাকিস্তানের শোয়েব মালিক ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারলন স্যামুয়েলস।
লক্ষ্য পূরণের পথে এগিয়েই যাচ্ছিলেন মালিক ও স্যামুয়েলস। ১৭তম ওভারে তাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান খুলনার পাকিস্তানি লেগ-স্পিনার মোহাম্মদ ইরফান। ২৩ বলে ৩৬ রান করা মালিককে শিকার করেন তিনি। এরপর আর কোন ব্যাটসম্যানই দায়িত্ব নিয়ে কুমিল্লার প্রয়োজনীয় রান তুলতে পারেননি।
শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬০ রানে থামে খুলনা। শেষ দিকে রকিবুল ৯ বলে ১৭ রানে আউট হলেও ১৬ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন স্যামুয়েলস। খুলনার আবু জায়েদ ও হাউওয়েল ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন খুলনার আরিফুল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
খুলনা টাইটান্স : ১৭৪/৬, ২০ ওভার (শান্ত ৩৭, আরিফুল ৩৫, আল-আমিন হোসেন ৩/৫২)।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স : ১৬০/৭, ২০ ওভার (মালিক ৩৬, তামিম ৩৬, হাউওয়েল ২/৩২)।
ফল : খুলনা টাইটান্স ১৪ রানে জয়ী।