বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চলমান আসরে খুলনা টাইটান্সকে ১৯ রানে হারিয়ে টুর্নামেন্টের শেষ দল হিসেবে শেষ চার নিশ্চিত করলো মাশরাফির রংপুর। একই সঙ্গে সিলেট ও রাজশাহীর শেষ চারে খেলার আশা শেষ হয়ে গেল।
নিজেদের ১১তম ম্যাচ জিতে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থস্থান দখল করলো রংপুর। আর সমানসংখ্যক ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে পিছিয়ে থেকে টেবিলের তৃতীয়স্থানে থাকলো খুলনা।
রোববার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ফিল্ডিং বেছে নেন খুলনা টাইটান্সের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তৃতীয় ওভারে ১টি ছক্কায় ৯ বলে ৮ রান করে ফিরে যান রংপুরের ওপেনার জিয়াউর রহমান। এরপর দলের রানের গতি বাড়ান আরেক ওপেনার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল ও নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালাম।
১৮ বল মোকাবেলা করে ৩২ রান যোগ করেন গেইল ও ম্যাককালাম। এরমধ্যে ১১ বলে ১৫ রান অবদান রেখে ফিরেন ম্যাক। তার ইনিংসে ২টি চার ও ১টি ছক্কা ছিল। কিউই ব্যাটসম্যান ফিরে যাবার পরও, রংপুরের রান এগোচ্ছিল গেইলের ব্যাট চড়ে। কিন্তু ১১তম ওভারের প্রথম বলে গেইল ফিরে গেলে রংপুরের রান তোলায় ভাটা পড়ে। ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৭ বলে ৩৮ রান করেন গেইল।
রান তোলার গতি কমে যাওয়ায় ১৮ ওভার শেষে ৬ উইকেটে রংপুরের রান ছিল ১১৪। এ অবস্থায় উইকেটে ছিলেন মোহাম্মদ মিথুন ও অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। শেষ দুই ওভারে ৩৩ রান নেন তারা। ইনিংসের শেষ ওভারে খুলনার পেসার শফিউলকে তিনটি ছক্কা মারেন মিথুন।
শেষ ডেলিভারিতে তৃতীয় ছক্কাটি মেরে এবারের আসরে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন মিথুন। শেষ পর্যন্ত ২টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৩৫ বলে অপরাজিত ৫০ রান করেন এই ডান-হাতি ব্যাটসম্যান। ২টি চারে ১১ বলে অপরাজিত ১৫ রান করেন মাশরাফি। এতে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৭ রান পায় রংপুর। খুলনার পক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জোফরা আর্চার ২ উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১৪৮ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই ক্যাচ তুলে দেন খুলনার ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত। রংপুরের স্পিনার সোহাগ গাজীর বলে আকাশে উঠে যাওয়া বল তালুবন্দী করতে ব্যর্থ হন বাঁ-হাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু। জীবন পেয়ে আরেক ওপেনার অস্ট্রেলিয়ার মাইকেল ক্লিঞ্জারকে নিয়ে ৮ ওভারে ৬০ রানের জুটি গড়েন শান্ত।
শান্তর ক্যাচ মিস করা অপুই শেষ পর্যন্ত ফেরান খুলনার ওপেনারকে। ১৮ বলে ২০ রান করেন শান্ত। খুলনার প্রথম শিকারের পর উজ্জীবিত হয়ে উঠে রংপুরের বোলাররা। এরপর নিয়মিত বিরতি দিয়ে খুলনার একের পর এক উইকেট তুলে নেয় রংপুরের বোলাররা। ফলে ১ উইকেটে ৬০ রান থেকে ৬ উইকেটে ৯৭ রানে পরিণত হয় খুলনা।
এ অবস্থায় ম্যাচের লাগাম পুরোপুরি ঢলে পড়ে রংপুরের দিকে। কারণ শেষ ৩ ওভারে জয়ের জন্য খুলনার প্রয়োজন পড়ে ৪১। হাতে ছিল ৪ উইকেট। ১৮তম ওভারে শ্রীলঙ্কার বাঁ-হাতি পেসার ইসুরু উদানাকে দু’টি ছক্কায় হাকিয়ে ম্যাচে উত্তেজনা তৈরি করেন খুলনার ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড় জোফরা আর্চার। তবে ঐ ওভারের শেষ বলে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউটের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন আর্চার। ২টি ছক্কায় ১১ বলে ১৯ রান করেন আর্চার।
আর্চারের বিদায়ের পর দলের আর কোন ব্যাটসম্যান খুলনার প্রয়োজন মেটাতে না পারায় ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১২৮ রানে থেমে যায় খুলনা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন ক্লিঞ্জার। রংপুরের বোপারা ২টি উইকেট নেন। ম্যাচের সেরা হয়েছেন রংপুরের মিথুন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
রংপুর রাইডার্স : ১৪৭/৬, ২০ ওভার (মিথুন ৫০, গেইল ৩৮, আর্চার ২/২৮)।
খুলনা টাইটান্স : ১২৮/৮, ২০ ওভার (ক্লিনজার ৪৪, মিথুন ২০, বোপারা ২/৪)।
ফল : রংপুর রাইডার্স ১৯ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : মোহাম্মদ মিথুন (রংপুর রাইডার্স)।