টানা আট ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চলমান আসরে প্লে অফে খেলা নিশ্চিত করা রংপুর রাইডার্সকে এবার হারের স্বাদ দিলো দুর্বার রাজশাহী। আসরের ৩১তম ম্যাচে রংপুরকে ২৪ রানে হারিয়ে প্লে অফের দৌড়ে টিকে রয়েছে তাসকিন আহমেদের রাজশাহী।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম পর্বের শেষ দিনের প্রথম ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ১৭০ রানের সংগ্রহ গড়ে দুর্বার রাজশাহী। দলের পক্ষে ব্যাট হাতে ৬০ রানের ইনিংস খেলেন ইয়াসির আলী।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটার রায়ান বার্লের বোলিং তোপে ১৯.২ ওভারে ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায় রংপুর রাইডার্সের ইনিংস। রংপুরকে টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো হারের স্বাদ দেওয়ার পথে বল হাতে ২২ রানে ৪ উইকেট শিকার করেছেন ম্যাচ সেরা রায়ান বার্ল।
ব্যাট করতে নেমে দলীয় ২৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় রাজশাহী। ৪টি চারে ১২ বলে ১৯ রান করে সাজঘরে ফিরেন ওপেনার মোহাম্মদ হারিস। এরপর মারুমখী মেজাজে ২৯ বলে ৫২ রানের জুটি গড়েন সাব্বির হোসেন ও অধিনায়ক এনামুল হক।
২’শর বেশি স্ট্রাইক রেটে ১৯ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৯ রানে বিদায় নেন সাব্বির। চার নম্বরে নেমে ডাক মারেন রায়ান বার্ল। সাব্বিরের পর বার্লকেও শিকার করেন রংপুরের স্পিনার খুশদিল শাহ।
৭৬ রানে তৃতীয় উইকেট পতনের পর রাজশাহীর বড় সংগ্রহের ভিত গড়েন এনামুল ও ইয়াসির। জুটিতে ৫০ বলে ৭৬ রান যোগ করেন তারা। ২টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৩২ বলে ৬০ রান করে আউট হন ইয়াসির। ২৮ বলে টি-টোয়েন্টিতে ১২তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন ইয়াসির।
১৬তম ওভারে দলীয় ১৫২ রানে ইয়াসির ফেরার পর স্লগ ওভারে দ্রুত রান তুলতে পারেনি রাজশাহীর পরের দিকের ব্যাটাররা। ইনিংসে শেষ ২৫ বলে ৫ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৮ রান তুলে তারা। ফলে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭০ রানের পুঁজি পায় রাজশাহী।
২টি বাউন্ডারিতে ৩১ বলে ৩৪ রান করেন এনামুল হক বিজয়। অন্যদিকে, খুশদিল ৩১ রানে এবং আকিফ জাভেদ ২৩ রানে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।
জয়ের জন্য ১৭১ রানের জবাবে চতুর্থ ওভারের মধ্যে ১৫ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে রংপুর। ইনিংসের প্রথম ওভারে রাজশাহীর অধিনায়ক ও পেসার তাসকিন আহমেদ ১টি এবং চতুর্থ ওভারে ২ উইকেট নেন অফ-স্পিনার এসএম মেহেরাব।
চতুর্থ উইকেটে ২৯ বলে ৪০ রানের জুটিতে দলকে চাপমুক্ত করেন সাইফ হাসান ও খুশদিল। দলীয় ৫৫ রানে ইনফর্ম খুশদিলকে শিকার করে রংপুরকে বড় ধাক্কা দেন মিডিয়াম পেসার সাব্বির। ১৩ বলে ১৪ রান করেন খুশদিল।
সতীর্থদের বিদায়ের মাঝেও দলের রানের চাকা সচল রেখেছিলেন তিন নম্বরে নামা সাইফ। হাফ-সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে ৪৩ রানে আউট হন সাইফ। তার ২৯ বলের ইনিংসে ৫টি চার ও ২টি ছক্কা ছিল।
সাইফের পর মাহেদি হাসান ৮ রানে বিদায় নিলে বোলারদের উপর চড়াও হন অধিনায়ক নুরুল হাসান। ১৭তম ওভারের শেষ বলে নুরুলকে শিকার করে রাজশাহীকে জয়ের স্বপ্ন দেখান লেগ স্পিনার বার্ল। শেষ ৩ ওভারে ৪৫ রান দরকার ছিল রংপুরের।
শেষ পর্যন্ত বার্লের ঘূর্ণিতে পড়ে বিপিএলে প্রথম হার বরণ করে রংপুর। ১৯.২ ওভারে ১৪৬ রানে অলআউট হয় তারা। আট নম্বরে নামা মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের ১৪ বলে ২৩ রানও হার এড়াতে পারেনি রংপুর।
৪ ওভারে ২২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ম্যাচ সেরা হন বার্ল। এছাড়াও তাসকিন ও মেহেরাব নিয়েছেন ২টি করে উইকেট।