বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চলমান আসরে দুটি দলের সমীকরণ ঠিক যেন উল্টো। রংপুর রাইডার্সকে কোন দলই যেন হারাতে পারছে না। বিপরীতে শাকিব খানের মালিকানাধীন ঢাকা ক্যাপিটালস যেন জয়ী হতেই ভুলে গেছে। নিজেদের খেলা পাঁচ ম্যাচের সবগুলোতেই জয় তুলে নিয়েছে শীর্ষে থাকা রংপুর। অন্যদিকে, টানা চতুর্থ হারে তলানীতের থাকা ঢাকা আরও পিছিয়ে গেল।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সিলেট পর্বের তৃতীয় ও দ্বিতীয় দিনের প্রথম ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ব্যাট কিংবা বল হাতে লড়াই করতে পারেনি ঢাকা ক্যাপিটালস। ব্যাটিং ব্যর্থতায় স্বল্প রানের সংগ্রহ গড়ার পর বল হাতেও ব্যর্থ ছিল থিসেরা পেরেরার দল।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করলেও রংপুরের বোলারদের বোলিং তোপে পরে ১৬.৩ ওভারে ১১১ রানে গুটিয়ে যায় ঢাকার ইনিংস। জবাবে ৪০ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে জয় তুলে নেয় রংপুর রাইডার্স। চলমান বিপিএলে রংপুরের এটি টানা পঞ্চম জয়।
ব্যাট করতে নেমে ঢাকাকে ৩ ওভারে ২৮ রানের শুরু এনে দেন দুই ওপেনার হাবিবুর রহমান সোহান ও জেসন রয়। চতুর্থ ওভারের শুরুতে আকিফ জাভেদের বলে আউট হন ৩টি চারে ১৪ রান করা সোহান।
পাওয়ার প্লের সুবিধা কাজে লাগাতে রয়ের সাথে রানের গতি ধরে রাখেন তিন নম্বরে নামা তানজিদ হাসান। দ্বিতীয় উইকেটে ১৮ বলে ২৬ রানের জুটি গড়েন তারা। পাওয়ার প্লেতে ঢাকাকে ৫৪ রান এনে দিয়ে ৮ রানের ব্যবধানে সাজঘরে ফিরেন রয় ও তানজিদ।
২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১২ বলে রয় ১৮ এবং ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৬ বলে ২০ রান করেন তানজিদ। প্রথম তিন ম্যাচে ওপেনার হিসেবে ৩৩ রান করা লিটন এবার ব্যাট হাতে চার নম্বরে নামেন। ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতে পারেননি তিনি। রংপুরের পেসার নাহিদ রানার প্রথম শিকার হয়ে ৯ রানে আউট হন লিটন।
লিটনের মত মিডল অর্ডারের অন্য ব্যাটাররাও ব্যর্থ হয়েছেন। এবারের আসরে প্রথম খেলতে নেমে সাব্বির রহমান ২ ও মোসাদ্দেক হোসেন ১২ এবং আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান অধিনায়ক থিসারা পেরেরা খালি হাতে ফিরেন। ফলে ৯৮ রানে ৮ উইকেট হারায় ঢাকা।
তবে আলাউদ্দিন বাবুর ১৬ রানের সুবাদে ১’শ রানের গন্ডি পেরোতে পারে ঢাকা। শেষ পর্যন্ত ১৬.৩ ওভারে ১১১ রানে অলআউট হয় ঢাকা।
বল হাতে রংপুরের রানা ২১ রানে ৩টি, আকিফ ও খুশদিল শাহ ২টি করে উইকেট নেন। স্পিনার মাহেদি হাসানের ঝুলিতে ছিলো ১ উইকেট। এই শিকারে রংপুরের জার্সিতে সর্বোচ্চ ৩৮ উইকেটের মালিক এখন মাহেদি। ৩৭ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয়স্থানে নেমে গেছেন দলটি শিরোপা জয়ী সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
১১২ রানের জবাবে চতুর্থ ওভারেই উইকেট হারায় রংপুর। ৫ রানে থামেন ওপেনার আজিজুল হাকিম। দ্বিতীয় উইকেটে ৩০ বলে ৪৪ রানের ঝড়ো জুটি গড়েন আরেক ওপেনার অ্যালেক্স হেলস ও সাইফ হাসান। বড় ইনিংসের আভাস দিয়ে ১১ রানের ব্যবধানে সাজঘরে ফিরেন তারা।
৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ২৭ বলে ৪৪ রানে আউট হন গতকাল সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে সেঞ্চুরি হেলস। সাইফ থামেন ১৩ রানে। সিলেটের বিপক্ষে ১০১ বলে ১৮৬ রানের জুটি গড়েছিলেন হেলস ও সাইফ।
দলীয় ৭২ রানের মধ্যে হেলস ও সাইফ ফেরার পর চতুর্থ উইকেটে ২১ বলে অবিচ্ছিন্ন ৪১ রান করে রংপুরের জয় নিশ্চিত করেন পাকিস্তানের দুই ব্যাটার ইফতিখার ও খুশদিল।
৪টি চার ও ১টি ছক্কায় খুশদিল ১৩ বলে অপরাজিত ২৭ এবং ইফতিখার ৯ রানে অপরাজিত থাকেন। ২১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন রংপুরের রানা।