জাতীয় দলের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠেছিল সিলেটের কোন ফ্র্যাঞ্চাইজি। ফাইনালে পা রেখে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) শিরোপা জয়ের স্বপ্নও দেখেছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স। তবে সিলেটের হৃদয় ভেঙে চুরমার করে দিলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। সিলেটকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় ও চতুর্থবারের মতো বিপিএল শিরোপা জয় করলো কুমিল্লা।
এবারের আসরের প্রথম তিন ম্যাচের হারের পর টানা ১১ ম্যাচ জিতে শিরোপা জিতলো কুমিল্লা। ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বাধীন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের এটি টানা দ্বিতীয় এবং চতুর্থ বিপিএল শিরোপা। বিপিএলে ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি শিরোপা জয়ে রেকর্ডও গড়লো কুমিল্লা।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিমের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৫ রান করে সিলেট। শান্ত ৬৪ ও মুশফিক অপরাজিত ৭৪ রান করেন।
জবাবে ৮ রানে জীবন পাওয়া চার্লসের অপরাজিত ৭৯ ও লিটন দাসের ৫৫ রানের সুবাদে ৪ বল বাকি রেখেই জয় তুলে নেয় কুমিল্লা। এছাড়া মঈন আলীর ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ২৫ রানের ইনিংস।
১৭৬ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে মারমুখী মেজাজে ইনিংস শুরু করেন কুমিল্লার দুই ওপেনার লিটন দাস ও নারাইন। ২ ওভারে ২১ রান তুলেন তারা। পেসার তানজিম হাসান সাকিবের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ২১ রান নেন লিটন ও নারাইন। লিটন-শান্ত ২টি করে চার-ছয় মারেন।
তৃতীয় ওভারে দ্বিতীয়বারের মতো আক্রমণে এসে কুমিল্লার উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন পেসার রুবেল। নারাইনকে ১০ রানে শিকার করেন তিনি।
পরের ওভারের প্রথম বলে কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুলকে বিদায় করেন স্পিনার লিন্ডে। ছক্কা মারতে গিয়ে লং-অনে পেরেরাকে ক্যাচ দেন ইমরুল। ৩ বলে ২ রান করেন তিনি। ইমরুলকে শিকার করে মেডেন উইকেট নেন লিন্ডে।
৩৪ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় কুমিল্লা। এ অবস্থায় দলের হাল ধরেন লিটন ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের জনসন চার্লস। পাওয়ার প্লেতে ৪৯ রান পায় কুমিল্লা।
সপ্তম ওভারে পেরেরার বলে ১টি করে চার-ছক্কায় ১২ রান নেন চার্লস। ওই ওভারে কুমিল্লার রান ৫০ হয়। ১০ ওভার শেষে কুমিল্লার রান ৮৬তে। ১১তম ওভারে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন লিটন। এবারের বিপিএলে তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে ৩৬ বল খেলেন তিনি।
হাফ-সেঞ্চুরির পর রুবেলের বলে স্কয়ার লেগে শান্তর দুর্দান্ত ক্যাচে ইতি ঘটে লিটনের ইনিংসের। ৭টি চার ও ১টি ছয়ে ৩৯ বলে ৫৫ রান করা লিটনের। তৃতীয় উইকেটে চার্লস-লিটন ৫৭ বলে ৭০ রান যোগ করেন।
লিটন ফেরার পর শেষ ৭ ওভারে ৭১ রান দরকার পড়ে কুমিল্লার। পরের ৩ ওভারে ১৯ রান নিতে পারেন চার্লস ও মঈন। এমন অবস্থায় শেষ ৪ ওভারে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে জয়ের জন্য ৫২ রানের সমীকরণ পায় কুমিল্লা। রুবেলের করা ১৭তম ওভারে ২৩ রান পায় কুমিল্লা। ৪০ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ হয় চার্লসের।
শেষ ২ ওভারে ২১ রানের প্রয়োজন পড়ে কুমিল্লার। উডের করা ১৯তম ওভারের ২টি ছক্কা ও ১টি চারে ১৮ রান তুলেন চার্লস। শেষ ওভারে ৩ রানের প্রয়োজন ২ বল খেলেই তুলে নেন চার্লস ও মঈন। ৫২ বল খেলে ৭টি চার ও ৫টি ছক্কায় অপরাজিত ৭৯ রান করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন চার্লস। ২টি চার ও ১টি ছয়ে ১৭ বলে ২৫ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন মঈন। সিলেটের রুবেল ৩৯ রানে ২ উইকেট নেন।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস