আয়ারল্যান্ড অলরাউন্ডার কার্টিস ক্যাম্পারের ঝড়ো ইনিংসের সুবাদে ১৬৮ রানের লড়াকু সংগ্রহ গড়েছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। তবে এনামুল হক বিজয়ে ৭৮ রানের পর শেষ দিকে করিম জানাতে ঝড়ো ইনিংসে চট্টগ্রামের জয় ছিনিয়ে নিয়েছে ফরচুন বরিশাল। এ জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ স্থান দখল করেছে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন বরিশাল।
শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) সিলেট পর্বের প্রথম দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৩ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে বরিশাল। প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৬৮ রান করে চট্টগ্রাম। জবাবে এনামুলের ৫০ বলে ৭৮ রানের পর জানাতের ঝড়ো গতির ৩১ রানে ৪ বল বাকী রেখেই জয়ের স্বাদ নেয় বরিশাল।
এ জয়ে ৮ খেলায় ৬ জয় ও ২ হারে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান দখল করলো বরিশাল। সমান পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে পিছেয়ে থেকে দ্বিতীয় স্থানে নেমে গেছে মাশরাফির সিলেট স্ট্রাইকার্স।
সিলেট পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো হয়নি চট্টগ্রামের। দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় তারা। পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ ওয়াসিমের বলে ৫ রান করে ফিরেন ওপেনার মেহেদি মারুফ।
দ্বিতীয় উইকেটে ভারতের উন্মুখ চাঁদকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন নেদারল্যান্ডসের ম্যাক্স ও’দাউদ। ৫ ওভারে দলে রান ৩৬এ নিয়ে যান তারা। ষষ্ঠ ওভারের চাঁদকে ব্যক্তিগত ১৬ রানে থামিয়ে দেন পেসার খালেদ আহমেদ। ১৩ বলে ৩টি চারে ১৬ রান করেন চাঁদ। ও’দাউদ-চাঁদ জুটিতে ২২ বলে ২৫ রান যোগ করেন।
দলীয় ৩৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর ক্রিজে দাউদের সঙ্গী হন আফিফ হোসেন। উইকেট সেট হয়ে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন তারা। অষ্টম ও নবম ওভারে ২টি করে চার-ছক্কায় ২০ রান তুলেন ডাউড ও আফিফ। ১১তম ওভারে খালেদের দ্বিতীয় শিকার হন ৪টি চার ও ১টি ছয়ে ৩৪ বলে ৩৩ রান করা দাউদ।
এরপর বরিশাল পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বির শিকার হন আফিফ ও অধিনায়ক শুভাগত হোম। আফিফ ৩৩ বলে ৩৭ ও শুভাগত ২ রান করে ফিরেন। ৩টি চার ও ২টি ছয় দিয়ে নিজের ইনিংস সাজান আফিফ।
১৪তম ওভারে দলীয় ১০২ রানে আফিফ-শুভাগতর বিদায়ের চট্টগ্রামকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দেন ক্যাম্পার ও ইরফান শুক্কুর। ষষ্ঠ উইকেটে ৩৯ বলে ৬৬ রান যোগ করেন তারা। ইনিংসের শেষ বলে আউট হবার আগে ১৯ বলে ২০ রান করেন শুক্কুর।
বরিশালের খালেদ ২৬ রানে ও কামরুল ৩৮ রানে ২টি করে উইকেট নেন। ৩ ওভার বল করে ৩৫ রান দিয়ে উইকেট শূন্য ছিলেন সাকিব।
১৬৯ রানের লক্ষ্যে বরিশালকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন ওপেনার বিজয়। তার বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে ৬৭ রান পায় বরিশাল। মাত্র ২৬ বলে এবারের আসরে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান বিজয়।
বিজয় ঝড়ের মাঝে পঞ্চম ওভারে পেসার মেহেদি হাসান রানার বলে বিদায় নেন সাইফ হাসান। ২টি চারে ১০ রান করেন তিনি।
বিজয় ঝড়ের পর বরিশালের মিডল-অর্ডারে ব্যাটিং ধস নামে। ৭ রানের ব্যবধানে বরিশালের ৩ ব্যাটারকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান বাঁ-হাতি স্পিনার নিহাদুজ্জান। সাকিব ২, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ শূন্য ও শ্রীলংকার চাতুরাঙ্গা ডি সিলভা ৩ রান করে ফিরেন।
অন্যপ্রান্তে বরিশালের রানের চাকা সচল রেখে দলীয় রান ১শ পার করেন বিজয় । ১৫তম ওভারে পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরির বলে বিদায় ঘটে ৫০ বলে ৭৮ রান করা বিজয়ের। । ৬টি করে চার-ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান এ ওপেনার।
১৬তম ওভারে পাকিস্তানের ইফতেখার আহমেদকে নিজের চতুর্থ শিকার বানান নিহাদুজ্জামান। ২০ বলে ১৩ রান করেন ইফতেখার।
ইফতেখার ফেরার পর শেষ ৪ ওভারে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ৪৮ রান দরকার পড়ে বরিশালের। ১৭তম ওভারে ১৭ ও ১৮তম ওভারে ১৫ রান তুলেন আফগানিস্তানী জানাত ও সালমান হোসেন। ঝানাত ঝড়ে জয়ের জন্য শেষ ২ ওভারে ১৬ রান দরকার পড়ে বরিশালের।
১৯তম ওভারে ১৪ রান নিয়ে ম্যাচ হাতে মুঠোয় নিয়ে নেন জানাত ও সালমান। এতে শেষ ওভারে ২ রান প্রয়োজন পড়ে বরিশালের। রানার করা শেষ ওভারের প্রথম বলে আউট হওয়ার আগে ১২ বলে ৩টি চার ও ২টি ছয়ে ৩১ রান করেন জানাত। দ্বিতীয় বলে চার মেরে বরিশালের জয় নিশ্চিত করেন ওয়াসিম।
সালমান ১৮ ও ওয়াসিম ৪ রানে অপরাজিত থাকেন। চট্টগ্রামের নিহাদুজ্জামান ১৭ রানে ৪ উইকেট নেন।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস