বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চলমান আসরে হ্যাটট্রিক পরাজয়ের পর ঘুরে দাঁড়িয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।পাকিস্তানি পেসার নাসিম শাহর বোলিং নৈপূণ্যে টানা চতুর্থ জয় পেল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ঢাকা ডমিনেটর্সকে ৬০ রানের ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছে কুমিল্লা।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে দিনের শেষ ম্যাচে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন ঢাকার অধিনায়ক নাসির হোসেন। ঢাকার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শুরুতেই চাপে কুমিল্লার দুই ওপেনার লিটন দাস ও পাকিস্তানের মোহাম্মদ রিজওয়ান।
প্রথম ১৫ বলে মাত্র ৪ রান নিতে পারেন তারা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রথম ওভারে মাত্র ১ রান দেন ঢাকার পেসার তাসকিন আহমেদ। পরের ওভারে ৩ রান দেন স্পিনার আরাফাত সানি। পেসার আল-আমিনের করা তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলে বোল্ড হন ৭ বল খেলে ৩ রান করা রিজওয়ান।
দলীয় ৪ রানে রিজওয়ান ফিরে যাবার পর রানের গতি বাড়ান লিটন ও অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। তবে সপ্তম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমনে এসেই উইকেট তুলে নেন নাসির। ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে আরিফুলকে ক্যাচ দেন ২০ বলে ২০ রান করা লিটন।
লিটন ফেরার পর কুমিল্লার রানের গতি ধরে রাখেন ইমরুল ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের জনসন চার্লস। দশম ওভারে দারুন এক ডেলিভঅরিতে ইমরুলকে বোল্ড করে জুটি ভাঙ্গেন আফগানিস্তানের স্পিনার আমির হামজা। ৫টি চারে ২২ বলে ২৮ রান করেন ইমরুল।
১৩তম ওভারে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় দ্রুত রান নেন চার্লস। কিন্তু মোসাদ্দেক হোসেনের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে পরের ওভারেই রান আউট হন ২৫ বলে ৩২ রান করা চার্লস। এরপর উইকেটে এসেই ঝড় তুলেন পাকিস্তানের খুশদিল শাহ। ২টি করে চার-ছয় আসে তার ব্যাট থেকে। এরমাঝেই ১৭তম ওভারে হামজার দারুন ক্যাচে নাসিরের দ্বিতীয় শিকার হন মোসাদ্দেক। ৯ রান করেন তিনি।
পরের ওভারে ১৭ বলে ৩০ রান করা খুশদিলকে বিদায় দেন তাসকিন। তার বিদায়ের পর সপ্তম উইকেটে জাকের আলি ও আবু হায়দারের ১৭ বলে অবিচ্ছিন্ন ৩৪ রানে লড়াকু পুঁজি পায় কুমিল্লা। জাকের ১টি করে চার-ছয়ে ১০ বলে অপরাজিত ২০ রান করেন । ৮ বলে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন আবু হায়দার। ঢাকার নাসির ১৯ রানে ২ উইকেট নেন।
১৬৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে পাকিস্তানের পেসার নাসিমের বোলিং তোপে পড়ে ঢাকা। ১৬ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারায় তারা। ওপেনার মিজানুর রহমানকে ৫ ও মোহাম্মদ মিথুনকে ৩ রানে বিদায় করেন নাসিম।
এরপর লড়াই করার চেষ্টা করেন আফগানিস্তানের উসমান ঘানি ও নাসির হোসেন। চতুর্থ উইকেটে ২৩ বলে ২৬ রান তুলেন তারা। নাসিরকে ১৭ রানে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন খুশদিল। মিডল-অর্ডারের আরেক ব্যাটার আরিফুলকেও শিকার করেন খুশদিল। ১১ রান করেন তিনি।
১৬তম ওভারে দ্বিতীয়বারের আক্রমনে এসে প্রথম দুই বলেই উইকেট নিয়ে হ্যাটট্টিকের সুযোগ তৈরি করেন নাসিম। মুক্তারকে ৯ ও হামজাকে খালি হাতে বিদায় দেন তিনি। তবে নাসিমের হ্যাট্টিক রুখে দেন বোরার তাসকিন।
১৭তম ওভারে মুকিদুলের বলে অষ্টম ব্যাটার হিসেবে তাসকিন আউট হলে ১শর নীচে গুটিয়ে যাওয়ার শংকায় পড়ে ঢাকা। কিন্তু লোয়ার-অর্ডারে আল-আমিনের অপরাজিত ১৪ রানে কোন মতে ১শ রানের কোটা পার করতে পারে ঢাকা। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১০৪ রান করে ম্যাচ হারে ঢাকা।
কুমিল্লার নাসিম ৪ ওভারে ১২ রানে ৪ উইকেট নেন। ২ উইকেট নেন খুশদিল।
এই নিয়ে ৭ ম্যাচে ৪ জয় ও ৩ হারে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে উঠলো কুমিল্লা। অন্যদিকে, সমান সংখ্যক ম্যাচে ১ জয় ও ৬ হারে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতেই থাকলো ঢাকা। এটি ঢাকার টানা ষষ্ঠ হার।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস