আফিফ হোসেন ধ্রুব ও আফগানিস্তানের দারউইশ রাসুলির দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দ্বিতীয় জয় স্বাদ পেল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। নিজেদের মাঠে আফিফ-রাসুলির অবিচ্ছিন্ন ১০৩ রানের জুটিতে নাসির হোসেনের ঢাকা ডমিনেটর্সকে ৮ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে চট্টগ্রাম।
১৫৯ রানের টার্গেটে তৃতীয় উইকেটে আফিফ-রাসুলির ৬৩ বলে অবিচ্ছিন্ন ১০৩ রানের জুটি গড়েন। আফিফ ৫২ বলে ৬৯ ও রাসুলি ৩৩ বলে ৫৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। ৪ খেলায় ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে চট্টগ্রাম। আর ৩ খেলায় দ্বিতীয় হারে ২ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে থাকলো ঢাকা।
শনিবার (১৪ জানুয়ারি) স্থানীয় জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্বান্ত নেন ঢাকা ডমিনেটর্সের অধিনায়ক নাসির হোসেন। উদ্বোধনী জুটিতে ঢাকাকে ৬০ রান সূচনা এনে দেন মিজানুর রহমান ও আফগানিস্তানের উসমান। তবে তাদের রান তোলার গতি টি-টোয়েন্টি মেজাজে ছিল না। পাওয়ার প্লেতে ৩৬ ও ৯ ওভার শেষে ৫৯ রান তুলতে সক্ষম হন তারা।
দশম ওভারের দ্বিতীয় বলে ঢাকার উদ্বোধনী ভাঙেন চট্টগ্রামের স্পিনার নিহাদুজ্জামান। ৩৩ বলে ৩টি চারে ২৮ রান করা মিজানুরকে শিকার করেন তিনি। ১২তম ওভারে ঢাকা শিবিরে আবারও আঘাত হানেন নিহাদুজ্জামান। হাফ-সেঞ্চুরির পথে থাকা গনি ৩৩ বল খেলে ২টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৪৭ রান করে নিহাদুজ্জামানের শিকার হন। দলীয় ৭৯ রানে ২ উইকেট হারায় ঢাকা।
এরপর দ্রুত বিদায় নেন দুই মিডল-অর্ডার ব্যাটার সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ মিথুন। সৌম্য ৪ রানে চট্টগ্রামের অধিনায়ক শুভাগত হোম এবং মিথুন ৯ রানে বিদায় করেন শ্রীলঙ্কার মালিন্দা পুস্পকুমারা। এতে চাপ আরও বেড়ে যায় দলটির উপর।
তবে পাঁচ নম্বরে নেমে দ্রুত রান তুলেন নাসির। ৪টি চারে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন তিনি। পঞ্চম উইকেটে আরিফুল হকের সাথে ২৪ বলে ৩০ রান যোগ করে আউট হন নাসির। পেসার মেহেদি হাসান রানার বলে বিদায়ের আগে ২২ বলে ৩০ রান করেন অধিনায়ক নাসির।
১৮তম ওভারে নাসির ফেরার পর মারমুখী হন আরিফুল। পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরির করা ১৯তম ওভারের শেষ দুই বলে ১টি করে চার-ছক্কায় ১৪ রান তুলে নেন আরিফুল। রানার করা শেষ ওভারে ১টি করে চার মেরে ১১ রান তুলেন আরিফুল ও মোহাম্মদ ইমরান। ইমরান ৫ রানে ফিরলেও ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন আরিফুল।
১৮ বল খেলে ২টি চার ও ১টি ছয় মারেন আরিফুল। ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৮ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় ঢাকা। চট্টগ্রামের রানা-নিহাদুজ্জামান ২টি করে উইকেট নেন।
১৫৯ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। ঢাকার পেসার তাসকিন আহমেদের বলে বোল্ড হয়ে খালি হাতে ফেরেন ওপেনার আল-আমিন। শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়ে চট্টগ্রামকে লড়াইয়ে রাখেন আরেক ওপেনার পাকিস্তানের উসমান খান ও তিন নম্বরে নামা আফিফ হোসেন। দু’জনের ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে ৫০ রান পায় চট্টগ্রাম।
অষ্টম ওভারে উসমানকে থামান স্পিনার আরাফাত সানি। ২১ বলে ২২ রান করেন এবারের বিপিএলের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিয়ান উসমান। ৫৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর দলের হাল ধরেন আফিফ ও আফগানিস্তানের দারউইশ রাসুলি। মারমুখী ব্যাটিংয়ে ১১তম ওভারে এবারের আসরে প্রথম ও টি-টোয়েন্টিতে ১১তম হাফ-সেঞ্চুরি করেন আফিফ। ৩৪ বল অর্ধশতক করেন তিনি।
আফিফের হাফ-সেঞ্চুরিতে ১২তম ওভারেই ১শ রান পূর্ণ হয় চট্টগ্রাম। এতে জয়ের জন্য শেষ ৪ ওভারে ৩৯ রানের দরকার পড়ে তাদের। আল-আমিনের করা ১৭তম ওভারে ৩টি ছক্কায় ও ১টি চারে ২৪ রান তুলেন রাসুলি। এরপর ১৫ রানের দরকার ১৮তম ওভারের চতুর্থ বলে চট্টগ্রামের জয় নিশ্চিত করেন রাসুলি। তাসকিনের ওই ওভারে ২টি চার ও ১টি ছয় মারেন রাসুলি।
৩২ বলে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৫৬ রানে অপরাজিত থাকেন রাসুলি। তার ৩৩ বলের ইনিংসে ৩টি চার ও ৪টি ছয় ছিল। অন্যপ্রান্তে ৫২ বলে অপরাজিত ৬৯ রান করেন আফিফ। ৭টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে ৬৩ বলে অবিচ্ছিন্ন ১০৩ রান তুলে চট্টগ্রামের জয়ে বড় অবদান রাখে এ জুটি।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস