শীর্ষে ফিরলো কুমিল্লা, শঙ্কায় পড়লো খুলনা

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ০৫:০৭ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২
শীর্ষে ফিরলো কুমিল্লা, শঙ্কায় পড়লো খুলনা

বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) অষ্টম আসরের ঢাকার শেষ পর্বের প্রথম ম্যাচে হেরে প্লে-অফে ওঠার শঙ্কায় পড়লো মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বাধীন খুলনা টাইগার্স। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে হেরে টেবিলের পঞ্চম নম্বরে নেমে গেছে দলটি। অন্যদিকে, ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত জয় তুলে ঢাকাকে সরিয়ে দিয়ে টেবিলে আবারও শীর্ষে ফিরেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

সিলেট পর্ব শেষে দুইদিনের বিরতি দিয়ে শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) থেকে ঢাকায় আবারও শুরু হয়েছে বিপিএলের খেলা। ঢাকার এ পর্ব দিয়েই শেষ হবে এবারের আসর। দিনের প্রথম ম্যাচে দ্বিতীয় স্থানে থাকা কুমিল্লার মুখোমুখি হয়েছিল খুলনা টাইগার্স।

টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করা কুমিল্লা ওপেনার লিটন দাসের পর মঈন আলির দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮৮ রানের সংগ্রহ গড়ে দলটি। ব্যাট হাতে ওপেনার লিটন দাস ১৭ বলে ৪১ এবং মঈন আলি ৩৫ বলে ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে কুমিল্লার বোলারদের বোলিং তোপে ৩ বল বাকি থাকতে ১২৩ রানেই গুটিয়ে যায় খুলনা টাইগার্স। ফলে ৬৫ রানের ব্যবধানে জয় তুলে নেয় কুমিল্লা।

খুলনার পক্ষে ব্যাট হতে দলের পক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৬ রান করেন থিসারা পেরেরা। এছাড়া সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে আসে ২৫ বলে ২২ রান। এ হারে প্লে-অফে অপেক্ষা বাড়লো খুলনার।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যাট হাতে দলকে দারুণ সূচনা এনে দেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের দুই ওপেনার লিটন দাস ও মাহমুদুল হাসান জয়। মারমুখী মেজাজে ছিলেন লিটন। খুলনার স্পিনার নাবিল সামাদের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভার থেকে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৬ রান তুলেন লিটন। পরের ওভারেও পেসার খালেদ আহমেদের বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কা হাকান লিটন। ওই ওভারের পঞ্চম বলে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে জীবন পান লিটন।

লিটনের ঝড়ের মাঝে ২টি চার আসে জয়ের ব্যাট থেকে। তবে পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে নাবিলের বলে আউট হন জয়। ১৫ বলে ১১ রান করেন তিনি। ২৭ বলে ৪৩ রানের উদ্বোধনী জুটি পায় কুমিল্লা। পাওয়ার প্লে'র শেষ ওভারে রুয়েল মিয়াকে ছক্কা মেরে দলের স্কোর ৫২তে নেন লিটন। সপ্তম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমণে এসে প্রথম ডেলিভারিতেই ১৭ বলে ৪১ রান করা লিটনের উইকেট তুলে নেন কুমিল্লার শ্রীলঙ্কার পেসার থিসারা পেরেরা। ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা দিয়ে নিজের ইনিংস সাজান লিটন।

তিন নম্বরে ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ৮ বলে ৫ রান করে খালেদের প্রথম শিকার হন কুমিল্লার অধিনায়ক। ৭১ রানে তৃতীয় উইকেট পতনের পর কুমিল্লার রানের ভিত গড়েন দুই বিদেশি দক্ষিণ আফ্রিকার ফাফ ডু-প্লেসিস ও ইংল্যান্ডের মঈন আলি।

উইকেটে সেট হতে গিয়ে ১৭ বল বাউন্ডারি-ওভার বাউন্ডারি ছাড়া পার করে দেন ডু-প্লেসিস ও মঈন। ১৩তম ওভারে তিনটি ছক্কা আসে মঈনের কাছ থেকে। বোলার ছিলেন স্পিনার মাহেদি হাসান। এরপর পরের চার ওভারে সৌম্যকে তিনটি, খালেদ ও পেরেরাকে ১টি করে ছক্কা মেরে ২৩ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ২৫তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মঈন।

মঈনের ছক্কা ঝড়ের মাঝে ৩৬ বলে ৩৮ রান করে থামেন ডু-প্লেসিস। সৌম্যর বলে কভারে ইয়াসিরকে ক্যাচ দেন প্রোটিয়ার ক্রিকেটার। ডু-প্লেসিস ও মঈন চতুর্থ উইকেটে ৪৬ বলে ৮৩ রানের জুটি গড়েন। ১ বল খেলে খালি হাতে ফিরেন আগের ম্যাচে শেষ দিকে ঝড় তুলে কুমিল্লাকে জয় এনে দেয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের সুনীল নারাইন। পেরেরার করা ১৯তম ওভারে ১টি করে চার-ছক্কা মারার পর আউট হন মঈন। ৩৫ বলে ৭৫ রানে ইনিংসে ১টি চার ও ৯টি ছক্কা মারেন মঈন।

শেষ দিকে উইকেটরক্ষক মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ৬ বলে অপরাজিত ১২ রানের বড় স্কোর পেয়ে যায় কুমিল্লা। ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮৮ রান করে তারা। খুলনার পেরেরা ২৮ রানে ২ উইকেট নেন।

ইনিংসের শুরুতেই মারমুখী হয়ে উঠেন খুলনার ওপেনার ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে ফ্লেচার। ১৮৯ রানের টার্গেটে নাহিদুল ইসলামের করা প্রথম ওভারেই ২টি ছক্কা মারেন ফ্লেচার। তবে দ্বিতীয় ওভারে বল হাতে জ্বলে উঠেন মোস্তাফিজুর রহমান। পরপর দু’বলে ওপেনার রনি তালুকদার ও ফ্লেচারকে শিকার করেন ফিজ। রনি রানের খাতা খোলার আগে কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুলকে মিড অফে সহজ ক্যাচ দেন। আর ফ্লেচার লেগ বিফোর হন। এডিআরএস নিয়েও নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি ফ্লেচার। ৭ বলে ১৬ রান করেন তিনি।

দুই বলে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর পাওয়ার প্লেতে খুলনার ইনিংসে মাত্র ১টি করে চার-ছয় আসে। এতে ৬ ওভারে রান উঠে ৪১। সপ্তম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমণে এসে ইয়াসিরকে তুলে নেন স্পিনার মঈন। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ১৯ বলে ১৮ রান করেন ইয়াসির।
ইয়াসিরের বিদায়ে উইকেটে এসেছিলেন খুলনার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।

পেসার আবু হায়দারের প্রথম তিন বলে কোন রান নিতে পারেননি তিনি। তবে চতুর্থ বলে থার্ড ম্যানে নারাইনকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন মুশফিক। খালি হাতে বিদায় নিতে হয় মুশফিককে। এতে ৪৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে খুলনা।

চাপে পড়া খুলনাকে টেনে তোলার দায়িত্ব পান আগের ম্যাচে ৬৪ রানের লড়াকু ইনিংস খেলা জিম্বাবুয়ের সিকান্দার রাজা। সাথে ছিলেন সৌম্য। কিন্তু এবার দলের প্রয়োজনে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি রাজা। ছক্কায় ইনিংস শুরু করা রাজা ৮ রান করে আবু হায়দারের দ্বিতীয় শিকার হন।

একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন সৌম্য সরকার। রাজার বিদায়ের পরের ওভারে বিদায় ঘটে তারও। মঈনের তৃতীয় ওভারে ইমরুলকে সহজ ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন সৌম্য। ৩টি চারে ২৫ বলে ২২ রান করেন সৌম্য। ১১তম ওভারে দলীয় ৬৭ রানে ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে সৌম্যেকে হারিয়ে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে খুলনা।

১৫তম ওভারে মাহেদি ও রুয়েল মিয়াকে তুলে নিয়ে কুমিল্লার জয়ের পথ সহজ করে ফেলেন স্পিনার নাহিদুল। শেষ দিকে পেরেরার ২টি ছক্কায় ২৩ বলে ২৬ রান খুলনার হারের ব্যবধান কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ৩ বল বাকি থাকতে ১২৩ রানে অলআউট হয় খুলনা। কুমিল্লার আবু হায়দার ১৯ রানে ৩টি, নাহিদুল-মোস্তাফিজুর ও মঈন ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন কুমিল্লার মঈন।

স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস

[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্টল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]



শেয়ার করুন :


আরও পড়ুন

বিপিএলে দর্শক ফেরাতে চায় বিসিবি, অপেক্ষা সবুজ সঙ্কেতের

বিপিএলে দর্শক ফেরাতে চায় বিসিবি, অপেক্ষা সবুজ সঙ্কেতের

ঢাকার শেষ পর্বে চলবে পাঁচ দলে গুরুত্বপূর্ণ লড়াই

ঢাকার শেষ পর্বে চলবে পাঁচ দলে গুরুত্বপূর্ণ লড়াই

শাস্তি পেয়েও নিজেকে নির্দোষ দাবি বোপারার

শাস্তি পেয়েও নিজেকে নির্দোষ দাবি বোপারার

আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানিয়ে জরিমানার কবলে সোহান

আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানিয়ে জরিমানার কবলে সোহান